সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সন্ত্রাসবাদী হামলায় ক্ষতবিক্ষত মস্কো। এমনটা যে হতে চলেছে তা নাকি জানত আমেরিকা! শুধু তাই নয়, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে সতর্কও করা হয়েছিল বলেও দাবি করেছেন মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র অ্যাড্রিন ওয়াটসন।
এদিন ওয়াটসন বলেন, "রাশিয়ায় যে পরিকল্পিতভাবে জঙ্গি হামলা হবে, তা আমরা অনেক আগে থেকেই জেনে গিয়েছিলাম। ফলে রাশিয়ায় ভ্রমণরত বা বসবাসকারী আমেরিকানদের উদ্দেশে মার্কিন বিদেশ দপ্তর থেকে সতর্কবার্তাও জারি করা হয়েছিল।" মার্কিন প্রশাসন জঙ্গি হামলার সম্ভাবনার বিষয়ে রুশ সরকারকে সতর্ক করেছিল বলেও দাবি করেন তিনি। কনসার্ট হল হামলা প্রসঙ্গে হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জন কার্বি বলেন, "যেসব দৃশ্য সামনে এসেছে তা ভয়ংকর। হামলায় মৃতদের পরিবারের প্রতি আমাদের সমবেদনা রয়েছে।"
[আরও পড়ুন: ঋণ মাফ করুক দিল্লি, ভারতকে সেনা সরাতে বলেও হাত পাতছেন মালদ্বীপের মুইজ্জু]
তাৎপর্যপুর্ণ ভাবে, মস্কোর (Moscow) কনসার্ট হলে হামলার দায় স্বীকার করল আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী সংগঠন ইসলামিক স্টেট (খোরাসান)। ইরান, তুর্কমেনিস্তান ও আফগানিস্তানের অংশবিশেষ নিয়ে গঠিত ইসলামিক স্টেট (খোরাসান) বা আইএস-কে। ২০১৪ সালের শেষের দিকে পূর্ব আফগানিস্তানে শিকড় ছড়াতে শুরু করে তারা এবং দ্রুত চরম নৃশংসতা দেখিয়ে বিশ্বজুড়ে পরিচিতি লাভ করে। ইসলামিক স্টেট সশস্ত্র গোষ্ঠীর সবচেয়ে সক্রিয় আঞ্চলিক সহযোগীদের মধ্যে একটি আইএস-কে। রাশিয়াতেও সক্রিয় তারা। এবার প্রশ্ন হচ্ছে, সতর্ক করা হয়েছিল পুতিনকে, তবুও কেন রক্তাক্ত মস্কো?
বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, এটা একেবারেই 'ইন্টেলিজেন্স ফেলিওর'। অর্থাৎ রুশ গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর ব্যর্থতা। কারণ, মার্চের ৭ তারিখ নাগরিকদের শপিং মলের মতো ভিড়ে ঠাসা জায়গা এড়িয়ে চলার বার্তা দেয় মস্কোর মার্কিন দূতাবাস। একই সতর্কবার্তা দিয়েছিল সুইডেনও। কিন্তু আর পাঁচটা রুটিন সতর্কবার্তার মতোই কনসার্ট হল হামলার আশঙ্কার কথাও হারিয়ে যায় লালফিতের জটে। তাছাড়া, ইউক্রেন যুদ্ধ, প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ও বিরোধী নেতা লেক্সেই নাভালনির মৃত্যুর মতো বিষয়ে ব্যস্ত ছিলেন পুতিনও। এই সুযোগই কাজে লাগিয়েছে আইএস। বরাবরই রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লদিমির পুতিনকে মুসলিম বিদ্বেষী হিসেবে দেখে আইএস। চেচনিয়া যুদ্ধে পুতিনের নির্দেশে মুসলিমদের গণহত্যা করা হয়েছে বলে দাবি সংগঠনটির। তাই ফের পুতিন মসনদে বসতেই হামলা চালিয়ে শক্তিপ্রদর্শন করল আইএস। একইসঙ্গে, এটাও বলে রাখা জরুরি যে সিরিয়ায় বাশার-আল আসাদের হয়ে ইসলামিক স্টেটের সঙ্গে লড়াই করছে রুশ ফৌজ। সেটাও এই হামলার অন্যতম কারণ।