নন্দিতা রায়, নয়াদিল্লি: রাজ্যের প্রাপ্য মেটানোর দাবি তুলতেই তৃণমূলকে তীব্র আক্রমণ কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর। শীতকালীন অধিবেশনের প্রথমদিনই তৃণমূল- বিজেপি সাংসদদের তরজায় তপ্ত লোকসভা। অন্যদিকে রাজ্যসভায়, বাংলার বঞ্চনাকে সামনে রেখে মনরেগা নিয়ে আলোচনার দাবি জানিয়ে তৃণমূলের ১৩ জন সাংসদই নোটিস দিয়েছেন। বাংলার প্রাপ্য টাকা আদায়ের দাবিতে তৃণমূল সংসদের দুই কক্ষেই সরব হবে বলেই ঠিক হয়েছে। এদিকে বকেয়ার পালটা নানা প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগে সরব হয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা।
সোমবার লোকসভার বিশেষ উল্লেখ পর্বে তৃণমূলের লোকসভার দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় মনরেগা থেকে শুরু করে আবাস যোজনা, জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের মতো কেন্দ্রীয় প্রকল্পে বাংলার প্রাপ্য টাকা কেন্দ্রীয় সরকার আটকে রেখে দিয়েছে, বাংলারকে আর্থিকভাবে অবরুদ্ধ করার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করে সোচ্চার হতেই ট্রেজারি বেঞ্চে বসে থাকা কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা আপত্তি করতে থাকেন। তাতে কর্ণপাত না করেই সুদীপ বলেন, “বিগত দুবছর ধরে কেন্দ্রীয় সরকার বাংলার ১৮ হাজার কোটি টাকা আটকে রেখেছে। আমাদের মুখ্যমন্ত্রী-সহ আমরা সকলে এই বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবি জানাতে চাই, সংসদেও এ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হোক বলেও আমরা দাবি জানাচ্ছি।” বাংলার ন্যায্য পাওনা নিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে তৃণমূল প্রতিনিধিদল যাওয়ার পরে কীভাবে তাঁদের দুঘন্টা বসিয়ে রাখার পরে মন্ত্রী পিছনের দরজা দিয়ে চলে গিয়েছিলেন সেকথাও বিশদে তুলে ধরেন সুদীপ। তৃণমূল সাংসদের বক্তব্যের সময়েই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি ও ধর্মেন্দ্র প্রধান আপত্তি জানাতে থাকেন।
[আরও পড়ুন: ট্রেলারেই বোমা ফাটাল ‘প্রধান’, শাহরুখের ‘ডাঙ্কি’র সঙ্গে বক্স অফিসের লড়াইয়ে তৈরি দেব?]
সুদীপের বক্তব্য শেষ হতেই প্রধান ভারত সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে বলে সরব হন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান। বলেন, “মনরেগা ও প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় টাকা আটকে রাখা হয়েছে, আর্থিক অবরোধ করা হয়েছে বলে যে তথ্য দেওয়া হচ্ছে তা সঠিক নয়। এরা ভারত সরকারের কাছ থেকে বাংলার গরিবদের টাকা নিয়ে যায়, সেখান থেকে তোলাবাজি করে, কাটমানি রাখে।” প্রধানের এহেন মন্তব্য করতেই রে রে করে ওঠেন তৃণমূল সাংসদরা। নিজেদের আসন ছেড়ে উঠে দাঁড়িয়ে তীব্র প্রতিবাদ জানাতে থাকেন তাঁরা। পালটা বাংলার বিজেপি সাংসদরাও নিজেদের আসন ছেড়ে সামনের দিকে উঠে দাঁড়িয়ে চিৎকার করতে থাকেন। তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যেই প্রধান আরও বলেন, “দেশের সমস্ত রাজ্য আর্থিক শৃঙ্খলার মধ্যে রয়েছে, কিন্তু বাংলা সরকার নিজেকে ঊর্ধ্বে মনে করে। প্রধানমন্ত্রী পোষণ যোজনা, অর্থাৎ মিড ডে মিল স্কিমে এরা ৪ হাজার কোটি টাকা নয়ছয় করেছে। এর জন্য ভারত সরকার সিবিআই-এ কে তদন্ত করতে দিয়েছে। সব বেরিয়ে আসবে। এরা গরিবদের টাকা লুঠ করে, দলের জন্য সেই টাকা খরচ করে। এদের ব্যাপারে তদন্ত হবে। এদের অর্ধডজন মন্ত্রী কারাগারে। শিক্ষামন্ত্রী কারাগারে। এরা ভয় পেয়েছে এদের নেতৃত্ব কারাগারে যাবে, তাই এসব বলে সংসদের সময় বরবাদ করছে।”