সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: চিনে ফিরল তিয়েনআনমেন স্কোয়্যারের স্মৃতি। না, স্বৈরতন্ত্র নয়। এবার ব্যাংক বাঁচাতে ট্যাঙ্ক মোতায়েন করল কমিউনিস্ট দেশটি। এই ঘটনার ভিডিও ছড়িয়ে পড়তেই শুরু হয়েছে তুমুল সমালোচনা। চিনা সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, আর্থিক দুর্নীতির কেন্দ্রে থাকা একটি ব্যাংককে গ্রাহকদের রোষ থেকে বাঁচাতেই নাকি এই পদক্ষেপ। সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে সেনার সাজোয়াঁ গাড়ি মোতায়েন করার ঘটনা দেখিয়ে দিয়েছে প্রয়োজনে ফের তিয়েনআনমেনের মতো রক্ত ঝরাতে পিছপা হবে না শি জিনপিংয়ের দেশ।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে উদ্ধৃত করে ‘রেডিট’ জানিয়েছে, শানডং প্রদেশের রিঝাও অঞ্চলে একটি ব্যাংককে গ্রাহকদের রোষ থেকে বাঁচাতে ট্যাঙ্ক মোতায়েন করেছে প্রশাসন। চিনা সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, সম্প্রতি একটি বড়সড় আর্থিক দুর্নীতির সঙ্গে নাম জড়িয়েছে ব্যাংকটির। তারপরই আমানত খুইয়ে সর্বশান্ত হওয়ার হয়ে রিঝাও অঞ্চলে ব্যাংকটির স্থানীয় শাখায় ভিড় করএ জনতা। কিন্তু তাদের ভেতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। ব্যাংকটিকে ঘিরে বেশ কয়েকটি ট্যাঙ্ক ও সেনা জওয়ান মোতায়েন করা ছিল। ফলে প্রতিবাদ দেখালেও শেষমেশ ঘরমুখো রওনা দেয় উত্তেজিত জনতা। দু’টি ছবি পাশাপাশি রেখে এই ঘটনাকে তিয়েনআনমেন স্কোয়্যার কাণ্ডের সঙ্গে তুলনা করেছে রেডিট।
[আরও পড়ুন: তীব্র জনরোষ উড়িয়ে দিয়ে শ্রীলঙ্কার নতুন প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংঘে]
চিনের (China) শাসকদল কমিউনিস্ট পার্টির লৌহ বেষ্টনি কুখ্যাত। তবে দলের অন্দরে দুর্নীতিও প্রচুর। একাধিক ব্যাংকিং দুর্নীতির সঙ্গে নাম জড়িয়েছে চিনা কমিউনিস্ট পার্টির প্রভাবশালীদের। তবে এহেন ঘটনার কথা প্রথম প্রকাশ্যে আসে গত এপ্রিল মাসে। হংকং স্থিত সংবাদমাধ্যম ‘সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট’-এ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, হেনান ও আনহুই প্রদেশের কয়েকটি ব্যাংকে গ্রাহকদের লেনদেন করতে দেওয়া হচ্ছে না। ‘সিস্টেম আপগ্রেডের’ জন্যই নাকি এই পদক্ষেপ। তারপর থেকেই বেশ কয়েকটি ব্যাংকে এহেন ঘটনা ঘটছে। ফলে চিনা ব্যাংকগুলিতে সাধারণ মানুষের টাকা কতটা সুরক্ষিত, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
উল্লেখ্য, ১৯৮৯ সালের জুন বেজিংয়ের তিয়েনআনমেন স্কোয়্যারে গণতন্ত্রের দাবিতে বিক্ষোভ দেখতে শুরু করে পড়ুয়ারা। এই বিক্ষোভকে শহরবাসীদের মধ্যেও বিপুল সাড়া ফেলে দেয়। চিনের রাজনৈতিক নেতৃত্বও ব্যাপকভাবে দ্বিধা-বিভক্ত হয়ে পড়ে। কিন্তু শেষমেশ রাজধানীতে সামরিক আইন জারি করে এই বিক্ষোভকে বলপূর্বক দমন করা হয়। ৩-৪ জুনের এই বিক্ষোভকে ছত্রভঙ্গ করতে নির্মমভাবে হত্যাযজ্ঞ চালায় চিনের কমিউনিস্ট সরকার। নিরীহ পড়ুয়াদের উপর অ্যাসাল্ট রাইফেল ও ট্যাঙ্ক ব্যবহার করে সেনাবাহিনী। মৃত্যু হয় কয়েকশো আন্দোলনকারীর।