ব্রতদীপ ভট্টাচার্য, বারাসত: প্রতিশ্রুতি ভেঙে স্ত্রীকে মারধর, বারবার সতর্ক করা সত্বেও অত্যাচার, খুনের হুমকি, শারীরিক ও মানসিক অত্যাচারের অভিযোগ। অভিযুক্ত যুবককে নিজেরাই শাস্তি দিলেন গ্রামবাসীরা। উত্তর ২৪ পরগনার শাসনে অভিযুক্তকে গাছে বেঁধে বেধড়ক মারের পর, নেড়া করে গোটা গ্রামে ঘোরানো হল।
জানা গিয়েছে, প্রায় সাড়ে তিন বছর আগে শাসনের পাকদহ গ্রামের বাসিন্দা আবুল কালামের সঙ্গে বিয়ে হয় জ্যোৎস্না বিবির। অভিযোগ, বিয়ের পর থেকে রাতে মদ্যপ অবস্থায় বাড়ি ফিরে রোজই স্ত্রীকে মারধর করত আবুল কালাম। অত্যাচারের সীমা পেরিয়ে গেলে, জ্যোৎস্না বিবি স্বামীর অত্যাচারের কথা জানান গ্রামবাসীদের। তাতে সালিশি সভা বসে। সতর্ক করে দেওয়া হয় আবুল কালামকে। কিন্তু তাতে কোনও হেলদোল ছিল না তার। ফের নেশার ঘোরে স্ত্রীর উপর অকথ্য অত্যাচার চলত বলে অভিযোগ।
[আরও পড়ুন: হালিশহরে বিজেপি নেতার গাড়ি লক্ষ্য করে ব্যাপক বোমাবাজি, ‘আটক’ আক্রান্তই]
দিন কয়েক আগেও পাকদহ গ্রামে এরকম একটি সালিশি সভা বসে আবুল কালামকে নিয়ে। সূত্রের খবর, সেখানে নাকি যুবক প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, স্ত্রীর উপর আর অত্যাচার করবে না। এমনকী সে এও বলেছিল যে যদি আর কখনও এমন অন্যায় কাজ করে, তাহলে যেন শাস্তি দেওয়া হয় তাকে। কিন্তু নিজের প্রতিশ্রুতি সে ভুলে গিয়েছিল নিজেই। জ্যোৎস্না বিবির অভিযোগ, শুক্রবার রাতে ফের তাঁর উপর অকথ্য অত্যাচার চালায় আবুল কালাম। স্ত্রীকে খুনের হুমকিও দেয়। তাতে বেশ আতঙ্কিত হয়ে পড়েন জ্যোৎস্না বিবি। রাতেই তিনি গ্রামবাসীদের কাছে এসব কথা খুলে বলেন। পরে সকালে সালিশি সভায় স্থির হয়, এবার আবুল কালামকে শাস্তি দেবেন গ্রামবাসীরাই।
[আরও পড়ুন: ’বাণিজ্য সম্মেলন বুঝতে বাজেট বই পড়ুন’, রাজ্যপালকে কটাক্ষ সৌগতর]
সালিশি সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, রবিবার সকালে আবুল কালামকে একটি গাছে বেঁধে বেধড়ক মারধর করা হয়। এরপর তার মাথা নেড়া করে সেই অবস্থাতেই ঘোরানো হয় গোটা গ্রামে। এভাবে গ্রামবাসীরা নিজেরাই আইন হাতে তুলে নেওয়ায় বিতর্ক শুরু হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের পালটা দাবি, জেলার এসব প্রত্যন্ত গ্রামে পুলিশ পৌঁছতেই অনেক সময় লাগে। তাই অসহায় জ্যোৎস্না বিবির পাশে দাঁড়িয়ে বাধ্য হয়ে তাঁরা নিজেরাই অভিযুক্তকে শাস্তি দিয়েছেন।
The post স্ত্রীকে মারধর, যুবককে গণপিটুনির পর মাথা নেড়া করে শাস্তি দিলেন ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরাই appeared first on Sangbad Pratidin.