শ্রীকান্ত পাত্র, ঘাটাল: জ্বরে মৃত্যু হয়েছে! শুনেই দশ হাত দুরে ছিটকে গেলেন পাড়া–প্রতিবেশীরা। দাহ তো দূরের কথা করোনা টেস্ট না করে শ্মশানে দাহ–ই করা যাবে না। এমনই ফতোয়া জারি করলেন গ্রামের বাসিন্দারা। যদিও খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায় পুলিশ। তাঁদের হস্তক্ষেপেই মৃতদেহ নিয়ে যাওয়া হয় ঘাটাল মহকুমা হাসপাতালে। করা হয় অ্যান্টিজেন টেস্ট। রিপোর্ট নেগেটিভ হতেই স্বস্তি গ্রামবাসীদের। এরপরই নিয়ম মেনে মৃতদেহ তুলে দেওয়া হয় পরিজনদের হাতে।
[আরও পড়ুন: সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির অশালীন ছবি পোস্ট, গ্রেপ্তার যুবক]
ঘটনাটি পশ্চিম মেদিনীপুরের (Paschim Medinipur) চন্দ্রকোনার ধামকুড়িয়া গ্রামের। পুলিশ সুত্রে খবর, শনিবার সকালে এই গ্রামে মারা যান বাদল পাত্র (৫৮) নামে এক প্রৌঢ়। পেশায় রাজমিস্ত্রী বাদলবাবুর বাড়ি চন্দ্রকোনার জামদান গ্রামে। স্ত্রীর সঙ্গে বচসার জেরে বাড়ি ছেড়ে ধামকুড়িয়া গ্রামে অস্থায়ী ছাউনি তৈরী করে থাকতেন তিনি। প্রায় দশ বছর ধরে ওই অস্থায়ী ছাউনিই ছিল তঁার ঠিকানা। স্থানীয় সূত্রে খবর, বেশ কয়েকদিন ধরেই জ্বরে ভুগছিলেন বাদলবাবু। দেখভালের কেউ না থাকায় এক প্রকার বিনা চিকিৎসায় শনিবার সকালে তিনি মারা যান।
[আরও পড়ুন:ফের একদিনে সংক্রমণ ও মৃত্যুর রেকর্ড, রাজ্যের ঊর্ধ্বমুখী করোনা গ্রাফ বাড়াচ্ছে উদ্বেগ]
জ্বরে মৃত্যু শুনে কেউ উঁকিও মারতে যাননি ওই ছাউনিতে। খবর পেয়ে স্ত্রী–পুত্ররাও ততক্ষণে এসে গিয়েছিলেন। কিন্তু প্রতিবেশীদের বাধায় মৃতদেহ ছাউনি থেকে বের করতেই পারেনি মৃতের পরিজনরা। প্রতিবেশীদের দাবি, করোনা টেস্ট করতে হবে। ফলে ফাঁপরে পড়েন মৃতের পরিবার। খবর যায় চন্দ্রকোনা থানায়। মাত্র দু’দিন আগে ডালিমাবাড়ি গ্রামে জনৈক বৃদ্ধের মৃত্যু ঘিরে দারুন জটিলতা তৈরী হয়েছিল। সেই অভিজ্ঞতা থেকেই এবার আর দেরি করেনি পুলিশ। দ্রুত মৃতদেহ উদ্ধার করে ঘাটাল মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। করা হয় অ্যান্টিজেন টেস্ট। রিপোর্ট নেগেটিভ হতেই পরিজনদের হাতে তুলে দেওয়া হয় মৃতদেহ। চন্দ্রকোনা দুই নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ জগজিৎ সরকার এই প্রসঙ্গে বলেন, “আমরা খবর পাওয়া মাত্রই পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করি। পুলিশের হস্তক্ষেপে ঘটনা বেশি দূর গড়ায়নি। শনিবার বিকেলেই মৃতদেহ সৎকার করা হয়েছে।’’
The post জ্বরে মৃত্যু বৃদ্ধের, করোনা পরীক্ষা না করানো পর্যন্ত দেহ সৎকার করতে দিলেন না গ্রামবাসীরা appeared first on Sangbad Pratidin.