সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ২০০৮-এর মুম্বই হামলার মূল চক্রী ও ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিচার চলছে পাকিস্তানের আদালতে৷ বিচারের নামে প্রহসনের অভিযোগও রয়েছে৷ এবার বিচার প্রক্রিয়ায় গতি আনতে পাকিস্তানের উপর চাপ সৃষ্টি করল আমেরিকা৷ তাদের হুঁশিয়ারি, পাক কর্তৃপক্ষকে আরও দায়বদ্ধতা দেখাতে হবে৷ হামলায় ছয় মার্কিন নাগরিক-সহ ১৬৬ জনের মৃত্যু হয়েছিল৷ তাই ঘটনার দ্রুত বিচার করতে হবে৷
উল্লেখ্য, সন্ত্রাস দমনে পাকিস্তানের ভূমিকা নিয়ে বেশ কয়েকদিন ধরেই আমেরিকা অসন্তুষ্ট৷ তারই রেশ এসে পড়েছে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে৷ মার্কিন সাহায্য, এফ ১৬ যুদ্ধবিমান দেওয়ার সিদ্ধান্তে ছাড়পত্র দেয়নি পেন্টাগন৷ এই অবস্থায় এবার মুম্বই হামলা নিয়েও মার্কিন কর্তৃপক্ষ আরও কড়া অবস্থান নিয়েছে৷ স্বরাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র মার্ক টোনার বলেছেন, “আমাদের অবস্থান অত্যন্ত স্পষ্ট৷ এই মামলার দ্রুত বিচার চাই৷ পাক কর্তৃপক্ষকে আরও বেশি দায়বদ্ধতা দেখাতে হবে৷ ওই নৃশংস ঘটনায় আমেরিকার নাগরিকরাও প্রাণ হারিয়েছিলেন৷ দীর্ঘদিন ধরেই জঙ্গি দমনে আরও বেশি সহযোগিতার পক্ষে আমরা সওয়াল করেছি৷ ভারত ও পাকিস্তানকে নানা গোয়েন্দা তথ্য দিয়ে সাহায্য করা হয়৷ আমরা পাকিস্তানকে জানিয়েছি, তাদের ভূখণ্ডে কাজ চালানো সমস্ত জঙ্গি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে৷ বহুদিন ধরেই ওদের একথা বলা হচ্ছে৷ কিছুটা কাজ হয়েছে ঠিকই৷ কিন্তু আমরা আরও ইতিবাচক ফল চাই৷”
গত ছ’বছর ধরে পাক আদালতে মুম্বই হামলার বিচার চলছে৷ আক্রমণের মূল চক্রী জাকিউর-রহমান লাকভি এক বছর আগে জামিন পেয়ে গিয়েছে৷ আপাতত সে কোনও অজ্ঞাত স্থানে লুকিয়ে৷ বাকি ছ’জন রাওয়ালপিণ্ডির আদিয়ালা জেলে বন্দি৷ আদালত ২৪ জন ভারতীয় সাক্ষীর বয়ান নথিভুক্ত করতে চায়৷ পাক কর্তৃপক্ষের দাবি, ওই বয়ান না পেলে মামলা শেষ করা যাবে না৷ কিন্তু ভারত তাঁদের পাঠানো নিয়ে কোনও উচ্চবাচ্য করেনি৷ ২৬/১১ কাণ্ডে লস্কর-ই-তৈবার ন’জন জঙ্গিও পাল্টা আক্রমণে নিহত হয়৷ আজমল কাসভকে জীবিত ধরা গিয়েছিল৷ বিচারের পর তার ফাঁসি কার্যকর করা হয়৷ এদিকে, পাকিস্তানের উপর বিরক্ত হলেও ভারতের সঙ্গে আমেরিকার সম্পর্ক ক্রমশ মজবুত হচ্ছে৷ কয়েকদিন আগে ২২টি অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ও নজরদারির কাজে ব্যবহারযোগ্য প্রিডেটর গার্ডিয়ান ড্রোন কেনার বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছিল ভারত৷ মূলত ভারত মহাসাগরে নজরদারি চালাতে সেগুলি প্রয়োজন৷ সূত্রের খবর, আমেরিকা তাতে ইতিবাচক পদক্ষেপ করতে চলেছে৷ জুন মাসের গোড়ায় হোয়াইট হাউসে বারাক ওবামার সঙ্গে নরেন্দ্র মোদির বৈঠকের পরই ভারতকে তাদের প্রতিরক্ষা-সঙ্গী বলে তারা ঘোষণা করেছিল৷ তার পরই এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ করা হয়৷ ভারত মহাসাগরে চিনের দাদাগিরি রুখতেও আমেরিকা ভারতকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিচ্ছে৷ গত সপ্তাহে প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর পারিক্কর ও মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব অ্যাশটন কার্টারের আলোচনায় ইতিবাচক আশ্বাস মিলেছে বলে সূত্রের খবর৷
The post দ্রুত মুম্বই হামলার বিচার চেয়ে পাকিস্তানকে চাপ আমেরিকার appeared first on Sangbad Pratidin.