সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তথাকথিত ভাই-বোনের অবৈধ প্রেম! ঈর্ষা, যুদ্ধ, ধনুকের ছিলাটান প্রতিদ্বন্দ্বিতা আর জন্মান্তরবাদ। এই পুরোটা নিয়ে পাক্কা ৩ বছর বাদে বড় পর্দায় ফিরছেন রাকেশ ওমপ্রকাশ মেহরা। সঙ্গে ২ বছর বাদে ফিরে এলেন গুলজারও! জমে উঠল সাহিবাঁ আর মির্জার প্রেম।
পাঞ্জাবের কিংবদন্তি এই জুটির প্রেমিকটির নামে ছবির নামও রাকেশ আর গুলজার রেখেছেন ‘মির্জিয়া’!
ছবির নাম যখন প্রেমিক-পুরুষটির নামে, বোঝাই যাচ্ছে ছবিতে নায়ককে কিছু বেশি গুরুত্ব দিয়ে রেখেছেন তাঁরা। বলিউডের হিসেব মতো সেটাই হওয়া স্বাভাবিক। কেন না, এই ছবি পেতে চলেছে এক আনকোরা নায়ককে। তিনি অনিল কাপুরের ছেলে হর্ষবর্ধন কাপুর।
আর নায়িকা?
তাঁর নাম সইয়ামি খের। একটু হলেও কি অচেনা লাগছে তাঁকে?
লাগলে দোষের কিছু নেই। সইয়ামি এর আগে ‘রে’ নামে এক তেলুগু ছবি করে নাম কিনেছেন। এবার তাঁর বলিউডে জমি তৈরির পালা!
তবে, বংশপরিচয় জমাটি না হলেও সইয়ামিরও রয়েছে বলিউডের সঙ্গে এক যোগসূত্র। তাঁর দিদা ঊষাকিরণ খের ছিলেন বলিউডের এক ডাকসাইটে অভিনেত্রী। ‘চুপকে চুপকে’, ‘মিলি’, ‘বাওয়ার্চি’, ‘দাগ’-এর মতো বহু সুপারহিট ছবিতেই অভিনয় করেছেন ঊষা। এবার নাতনির পালা!
যা দেখা যাচ্ছে, হর্ষবর্ধন আর সইয়ামির পক্ষে বলিউডে নিজের জায়গা করে নেওয়া খুব একটা শক্ত হবে না। একে তো সঙ্গে রয়েছে রাকেশ ওমপ্রকাশ মেহরার পরিচালনা আর গুলজার-এর চিত্রনাট্যের যুগলবন্দি। তা ছাড়া আর কোন কোন দিক থেকে তাঁদের সাহায্য করছে ‘মির্জিয়া’?
সাহায্য করছে খোদ ছবির গল্প। এমনিতেই বলিউডে যখন নবাগতদের জন্য ছবি বানানো হয়, তখন বেছে নেওয়া হয় কোনও বিয়োগান্তক প্রেমের গল্প। যেমন আমির খান-জুহি চাওলা, অর্জুন কাপুর-পরিণীতি চোপড়ার ক্ষেত্রে আধুনিক প্রেক্ষাপটে ব্যবহার করা হয়েছিল ‘রোমিও অ্যান্ড জুলিয়েট’-এর গল্প। এবারেও বেছে নেওয়া হয়েছে সেই কাহিনিরেখা। দুই পরিবারের অসম্মতি, সমাজের তীব্র অনুশাসন- এই সব পেরিয়ে মন আর শরীরের কাছাকাছি আসা।
সঙ্গে রয়েছে জন্মান্তরবাদও! রাকেশ আর গুলজার খুব সুকৌশলে গল্পটাকে নিয়ে গিয়েছেন এক যুগ থেকে অন্য যুগের চৌহদ্দিতে। যাতে নবাগত নায়ক-নায়িকার অভিনয়ের কৃতিত্ব সব যুগেই সুন্দর ভাবে প্রতিষ্ঠা করা যায়।
আর রয়েছে বিতর্ক। কেন না, মির্জা আর সাহিবাঁর প্রেমকাহিনির মধ্যে রয়েছে তথাকথিত ভাই-বোনের সম্পর্ক। পাঞ্জাবের লোককাহিনি বলে, একবার এক পুত্রসন্তানের জন্ম দিয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন জননী। ওই একই সময়ে গ্রামের অন্য এক মহিলাও জন্ম দেন এক শিশুকন্যার। সেই পুত্রসন্তানকে তখন নিজের বুকের দুধ খাইয়ে বড় করেন ওই মহিলা। ছেলেটির নাম হয় খেওয়া খান। আর মেয়েটির নাম ছিল ফতেমা বিবি।
যথা সময়ে ফতেমা বিবির বিয়ে হয়ে যায়। বিয়ে হয়ে যায় খেওয়া খানেরও!
মাতৃদুগ্ধ ভাগ করে নেওয়া এই দুই ভাই বোনের সন্তানই মির্জা আর সাহিবাঁ। ফতেমার ছেলে মির্জা আর খেওয়ার মেয়ে সাহিবাঁ।
দিনে দিনে বড় হতে থাকে তারা। মির্জা পরিণত হয় এক অপরূপ সুপুরুষ যোদ্ধায়। কাহিনি বলে, তার মতো তীরন্দাজ সেই যুগে আর কেউ ছিল না। তেমনই, তুলনা ছিল না সাহিবাঁর সৌন্দর্যেরও!
গল্পের বাকিটুকু তোলা থাক বড় পর্দার জন্যই! এই কাহিনিকে যখন জন্মান্তরের চৌহদ্দিতে নিয়ে এসেছেন রাকেশ-গুলজার, বলাই বাহুল্য, চমকে দেওয়ার মতো বাঁক থাকবে কাহিনিরেখায়।
আপাতত শুধু দেখা যাচ্ছে ছবির প্রথম ট্রেলার। তাতে বর্তমান সময়ের বাঁধনছেঁড়া প্রেম যেমন রয়েছে, তেমনই রয়েছে অতীতেরও ইশারা।
খুঁতখুঁতুনি বলতে কেবল একটাই- পাঞ্জাবের গল্পকে পরিচালক টেনে এনেছেন রাজস্থানে।
হতে পারে তথ্যবিকৃতি, তবে তাতেও চমক বজায় থাকছে পুরোদস্তুর।
নিজেই দেখে নিন নিচের এই ভিডিওয়।
The post ঈর্ষা, প্রেম ও জন্মান্তরবাদ নিয়ে বড়পর্দায় আসছে ‘মির্জিয়া’ appeared first on Sangbad Pratidin.