shono
Advertisement

তৃণমূল, বিজেপি নাকি সংযুক্ত মোর্চা? নদিয়ার সংখ্যালঘু অধ্যুষিত আসনগুলিতে এগিয়ে কারা?

ভোটের মুখে তাল ঠুকছে সব শিবিরই।
Posted: 08:47 PM Mar 25, 2021Updated: 08:47 PM Mar 25, 2021

বিপ্লবচন্দ্র দত্ত, কৃষ্ণনগর: পাঁচ বছরে নদীগুলি দিয়ে গড়িয়েছে অনেকটাই জল। গত বিধানসভায় নদিয়া জেলার ১৭টি কেন্দ্রের মধ্যে তৃণমূল পেয়েছিল ১৩টি। কংগ্রেস জেতে তিনটিতে। কৃষ্ণনগর উত্তরে কংগ্রেস ছিল দ্বিতীয় স্থানে। কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করে বাম জেতে একটিতে। যদিও কংগ্রেসের তিনজন পরে যোগ দেন তৃণমূলে। গত লোকসভা ভোটে দু’টি আসনের মধ্যে রানাঘাটে বিজেপি ভাল ব্যবধানে জয় পেয়েছিল। আবার গত বিধানসভা ভোটের ফলের নিরিখে আশাবাদী সংযুক্ত মোর্চাও। বিশেষ করে, জেলার মুসলিম অধ্যুষিত বিধানসভা কেন্দ্রগুলোতে তারা ভাল ফলের আশা রাখছে। আইএসএফকে তিনটি আসন ছেড়েছে বাম। অন্যদিকে, তৃণমূল ‘স্বাস্থ্যসাথী’, ‘খাদ্যসাথী’, ‘কন্যাশ্রী’র মতো প্রকল্প বা ‘দুয়ারে সরকার’, ‘পাড়ায় পাড়ায় সমাধান’ কর্মসূচির সাফল্যের হাত ধরে লোকসভার তুলনায় ভাল ফলে আশাবাদী। বিধানসভাওয়াড়ি চোখ রাখলে ধারণা আরও স্পষ্ট হবে।

Advertisement

করিমপুর: তৃণমূলের বর্তমান জেলা সভানেত্রী গত বিধানসভা ভোটে এই কেন্দ্র থেকে জিতেছিলেন। সিপিএমের সমরেন্দ্রনাথ ঘোষ (Samar Ghosh) ছিলেন দ্বিতীয় স্থানে। আর বিজেপির শুভাশিস ভট্টাচার্য ছিলেন তৃতীয় স্থানে। পরে অবশ্য মহুয়া মৈত্র সাংসদ হওয়ার পর উপনির্বাচনে বিমলেন্দু সিংহরায় তৃণমূল প্রার্থী হয়ে জয় ধরে রাখতে পেরেছিলেন। এবারও বিমলেন্দু সিংহরায় তৃণমূল প্রার্থী। সংযুক্ত মোর্চা সিপিএমের প্রভাস মজুমদারকে প্রার্থী করেছে। বিজেপির প্রার্থী সমরেন্দ্রনাথ ঘোষ। এবারও নিজেদের জয় ধরে রাখার ব্যাপারে তৃণমূল যথেষ্ট আশাবাদী।

তেহট্ট: গতবার জয়ী হয়েছিলেন তৃণমূলের গৌরীশঙ্কর দত্ত (Gauri Shankar Duta)। সিপিএমের রঞ্জিতকুমার মণ্ডল হয়েছিলেন দ্বিতীয়। আর তৃতীয় বিজেপির অর্জুনকুমার বিশ্বাস। এবার ঘটেছে পালাবদল। গৌরীশঙ্কর দত্ত মাত্র কয়েকদিন আগেই তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী না হতে পেরে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। যদিও তিনি জানিয়ে দিয়েছিলেন যে, প্রার্থী হওয়ার দাবি তিনি জানাননি। এই কেন্দ্রে এবার বিজেপির প্রার্থী আশুতোষ পাল। তৃণমূল প্রার্থী করেছে তাপসকুমার সাহাকে। সংযুক্ত মোর্চার সিপিএমের (CPM) প্রার্থী এখানে সুবোধ বিশ্বাস। এই আসনে লড়াই এবার কঠিন সব দলের কাছেই।

[আরও পড়ুন: মাদার টেরেসা কি বহিরাগত? প্রথমবার প্রচারে বেরিয়েই তৃণমূলকে তোপ ‘জাত গোখরো’ মিঠুনের]

পলাশিপাড়া: গতবার জিতেছিলেন তৃণমূলের তাপসকুমার সাহা (Tapas Kumar Saha)। সিপিএমের এসএম সাদি হয়েছিলেন দ্বিতীয়। বিজেপির বিভাসচন্দ্র মণ্ডল তৃতীয় স্থানে ছিলেন। এবার এই কেন্দ্রে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান মানিক ভট্টাচার্য। সংযুক্ত মোর্চার প্রার্থী হয়েছেন প্রবীণ রাজনীতিবিদ সাদি। বিজেপি এবারও বিভাসচন্দ্র মণ্ডলকেই প্রার্থী করেছে। এখানেও কঠিন লড়াইয়ের সম্ভাবনা।

কালীগঞ্জ: ভোটারদের বড় অংশ মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ। গতবার জিতেছিলেন কংগ্রেসের হাসানুজ্জামান শেখ। তৃণমূলের প্রবীণ রাজনীতিবিদ নাসিরুদ্দিন আহমেদ ছিলেন দ্বিতীয় স্থানে। বিজেপি-র সৈকত সরকার হয়েছিলেন তৃতীয়। হাসানুজ্জামান শেখ পরে তৃণমূলে যোগ দেন। যদিও তৃণমূল তাঁকে প্রার্থী করেনি। এবার তৃণমূল প্রার্থী আইনজীবী নাসিরুদ্দিন আহমেদ। আসনটি সংযুক্ত মোর্চা এবার কংগ্রেসকে (Congress) ছেড়েছে। কংগ্রেসের প্রার্থী হয়েছেন আবদুল কাসেম। বিজেপির প্রার্থী অভিজিৎ ঘোষ। তৃণমূল মুসলিম ভোটে ভরসা করে আসন পুনর্দখলে আশাবাদী। বিজেপি অন্য অঙ্ক কষছে।

[আরও পড়ুন: ‘ঝুলছে তোর ওই উন্নয়ন’, দিনহাটায় বিজেপি কর্মীর রহস্যমৃত্যুতে মমতাকে তীক্ষ্ণ নিশানা দিলীপ]

নাকাশিপাড়া: দীর্ঘদিনের বিধায়ক প্রবীণ রাজনীতিবিদ কল্লোল খাঁ এবারও তৃণমূলের হয়ে লড়াইয়ে। গতবার সিপিএমের তন্ময় গঙ্গোপাধ্যায় দ্বিতীয় আর বিজেপির অনুপকুমার মণ্ডল তৃতীয় হন। প্রার্থী শুক্লা সাহা চক্রবর্তীকে নিয়ে সিপিএমের একাংশের মধ্যে অবশ্য ক্ষোভ রয়েছে। তন্ময়বাবু নির্দল প্রার্থী হিসাবে দাঁড়ানোর কথা ঘোষণা করেছেন। সেই কারণে সিপিএম তাঁকে দল থেকে বহিষ্কারও করেছে। বিজেপি এখানে এবার শান্তনু দেবকে প্রার্থী করেছে। বহু স্থানীয় ইস্যু ভোটের লড়াইয়ে প্রভাব ফেলতে পারে।

চাপড়া: মুসলিম অধ্যুষিত বিধানসভা কেন্দ্র। গতবার জয়ী হয়েছিলেন তৃণমূলের রুকবানুর রহমান। দ্বিতীয় হন সিপিএমের সামসুল ইসলাম মোল্লা। তৃতীয় বিজেপির সুতীর্থ চক্রবর্তী। তৃণমূল এবারও প্রার্থী করেছে রুকবানুরকেই। ‘ভূমিপুত্র’ জেবের শেখকে প্রার্থী না করায় ক্ষোভ জানিয়ে পথ অবরোধও করেছিলেন তাঁর অনুগামীরা। তাঁকে নির্দল প্রার্থী হিসাবে দাঁড় করানোর জন্য দেওয়াল লিখন শুরু করেছেন। সংযুক্ত মোর্চার হয়ে লড়ছেন আইএসএফ প্রার্থী কাঞ্চন মৈত্র। কেন্দ্র দখলে রাখায় তৃণমূলের পথে কিছুটা হলেও কাঁটা অবশ্যই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব।

শান্তিপুর: প্রবীণ রাজনীতিবিদ তৃণমূলের অজয় দেকে হারিয়ে জিতেছিলেন আইনজীবী কংগ্রেসের প্রার্থী অরিন্দম ভট্টাচার্য। সেটা ছিল একটা বড় চমক। অরিন্দম মাঝে তৃণমূল ঘুরে কয়েকদিন আগে যোগ দিয়েছেন বিজেপিতে। এবারও তৃণমূল প্রার্থী এলাকার পরিচিত মুখ অজয় দে। কংগ্রেস এখানে ঋজু ঘোষালকে প্রার্থী করেছে। আবার সিপিএমও প্রার্থী দেবে বলে জানিয়েছে। ফলে জোট নিয়ে কিছুটা অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকারকে প্রার্থী করেছে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement