সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: তৃণমূল রাজ্যে তৃতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় ফিরতেই প্রশাসনিক ক্ষেত্রে ব্যাপক রদবদল শুরু হয়েছে। কোথাও কোথাও প্রশাসনিক শীর্ষকর্তাদের কম্পালসরি ওয়েটিংয়ে পাঠানো হচ্ছে। সেই তালিকায় এবার নাম জুড়ল পুরুলিয়ার (Purulia) জয়পুরের সেই রিটার্নিং অফিসারের। অভিযোগ, তিনি সক্রিয় হলে ভোটের সময় তৃণমূল প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল হত না। শুক্রবার তাঁকে কম্পালসরি ওয়েটিংয়ে পাঠানোর নির্দেশিকা পাঠিয়েছে নবান্ন।
সূর্যকুমার জানা নামে ওই অফিসার জেলা যুব আধিকারিক ছিলেন। পুরুলিয়া জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের অভিযোগ, ওই রিটার্নিং অফিসার একটু সক্রিয় হলে জয়পুর বিধানসভা আসনের তৃণমূল প্রার্থী উজ্জ্বল কুমারের মনোনয়ন বাতিল হত না। হলফনামায় তাঁর ত্রুটি ছিল খুব সামান্য। আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তৃণমূল প্রার্থী। কিন্তু শেষপর্যন্ত ভোট লড়াই করতে পারেননি। বদলে নির্দল প্রার্থী দিব্যজ্যোতি সিং দেওকে সমর্থন করে তৃণমূল। তবে আসনটি জেতে বিজেপি।
[আরও পড়ুন : মুখ্যমন্ত্রীর দেওয়া চাকরি নিতে রাজি শীতলকুচির আনন্দ বর্মনের পরিবার]
উল্লেখ্য, গত তিন দিনে পরপর একই জেলায় ডবলুবিসিএস (এক্সকিউটিভ) তিন আধিকারিককে কম্পালসরি ওয়েটিংয়ে পাঠানো কার্যত নজিরবিহীন বলেই দাবি ওয়াকিবহাল মহলের। মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শপথগ্রহণের দিনই প্রথমে পুরুলিয়ার প্রাক্তন জেলাশাসক অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়, তারপর অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) সরিত ভট্টাচার্যকে কম্পালসরি ওয়েটিংয়ে পাঠায় রাজ্য। এই সরিত ভট্টাচার্য আগে পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথির মহকুমা শাসক, তারপর বিধাননগর জয়েন্ট মিউনিসিপাল কমিশনার ছিলেন। সেখান থেকে আবার ফের পূর্ব মেদিনীপুরের অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি ও ভূমি সংস্কার ) হন। তারপর ভোটের মুখে পুরুলিয়া আসেন তিনি।
এদিকে অভিজিৎবাবুর বদলে ওই পদে পুনর্বহাল করা হয় মুখ্যমন্ত্রীর আস্থাভাজন রাহুল মজুমদারকে। কোভিড পরিস্থিতি মোকাবিলায় তাঁর ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। ভাল কাজের পুরস্কার স্বরূপ গত নভেম্বর মাসে তাঁকে সিএমও-র যুগ্ম সচিব পদে নিয়োগ করা হয়। বদলে এই জেলার জেলাশাসক পদে নিযুক্ত হন অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়। ভোটের সময় তাঁর বিরুদ্ধে বিজেপির হয়ে কাজ করার অভিযোগ এনেছিল তৃণমূলের একাংশ।