ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: একুশের ভোটে তাদেরও তৈরি রাখা হয়েছিল। কিন্তু গায়ে একটা আঁচড়ও পড়েনি। একেবারে নতুন। ভবানীপুর উপনির্বাচনে (WB By-Election) একুশের হাইভোল্টেজ ভোটের সেই ‘রিজার্ভ’ ইভিএমকেই কাজে লাগানো হচ্ছে। তাদের এক দফা পরীক্ষা হয়ে গিয়েছে। ‘মক পোল’-ও হয়েছে এক হাজারটি করে। তা আবার খোলা হবে আগামী সপ্তাহে।
২১, ২২ ও ২৩ পরপর তিনদিন টানা পরীক্ষা। তারপর দরকার হলে আবার। ভবানীপুরের ভবিতব্য যাদের বুকে লেখা হবে, আপাতত তারা স্ট্রং রুমে বন্দি। ভবানীপুরের আট ওয়ার্ডে বুথ সংখ্যা ২৮৭। বুথ পিছু ইভিএমও (EVM) সমসংখ্যক লাগার কথা। রিজার্ভেও বেশ কিছু বাড়তি ইভিএম রাখা থাকবে। সমস্যা হলে, দ্রুত তা মেরামত করা বা পালটে নতুন ইভিএম যাতে বুথে পাঠিয়ে দেওয়া হয়, তার জন্য আবেদন করে রাখা হয়েছে।
নন্দীগ্রামে ইভিএম কারচুপির অভিযোগে বিজেপির (BJP) বিরুদ্ধে একাধিকবার তুলেছে তৃণমূল। সে প্রসঙ্গ টেনে সে সময় ভোটে ষড়যন্ত্র হয়েছিল বলে বারবার তোপ দেগেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। তাই এবার ইভিএমে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছে বলে বক্তব্য তৃণমূলের। দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় দলের মনোভাবের কথা জানিয়েছেন। তাঁর কথায়, “শেষ পর্যন্ত পরীক্ষা ছাড়া আমরা কোনও ইভিএমকেই গ্রহণযোগ্য বলে মনে করছি না।”
কর্মীদের প্রতি কী নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, সেকথা জানাতে গিয়ে পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “সহকর্মীরা যাঁরা এর দায়িত্বে আছেন, তাঁরা প্রত্যেকটা ইউনিট এবং ব্যালট দেখে নেবেন। যতক্ষণ পর্যন্ত না তাঁরা সন্তুষ্ট হচ্ছেন, ততক্ষণ এই মেশিন ভাল করে দেখে নেওয়া হবে।”
মোট ইভিএমের পাঁচ শতাংশ ইভিএম পরীক্ষা করার সুযোগ সাধারণভাবে দেওয়া হয়। এক্ষেত্রে সব ক’টি ইভিএমই পরীক্ষা করে নেওয়া হচ্ছে। কমিশনের আধিকারিকদের সামনে যে কোনও মেশিন খুলে পরীক্ষা করার স্বাধীনতা থাকে রাজনৈতিক দলগুলির।
[আরও পড়ুন: জনস্বার্থমূলক প্রকল্পে ঋণ না দিলে ব্যাংকের বিরুদ্ধে কড়া হুঁশিয়ারির সিদ্ধান্ত রাজ্যের]
তৃণমূলের (TMC) দক্ষিণ কলকাতার সভাপতি দেবাশিস কুমারের তত্ত্বাবধানে সেগুলি দফায় দফায় পরীক্ষা করে নিচ্ছেন বিধানসভার আটটি ওয়ার্ডের প্রতিনিধি। এক সপ্তাহে দফায় দফায় কমিশনের দপ্তরে আলোচনা চালাচ্ছে তৃণমূল। চলছে ইভিএম নিয়ে পরীক্ষা। দেবাশিসবাবুর কথায়, “কোনও দল চাইলে এক হাজারটি ‘মক পোল’ করে ইভিএম পরীক্ষা করতে পারে। আমরা সবটাই পরীক্ষা করে নিচ্ছি।”
এদিকে শনিবার ভবানীপুর উপনির্বাচনে প্রচারে নামছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। লক্ষ্মীনারায়ণ মন্দিরে দলের বিশিষ্টদের নিয়ে সভা দলের জাতীয় সাধারণ সম্পাদকের। আগামী ২১ সেপ্টেম্বর থেকে নানা ওয়ার্ডে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভা করার কথা। ২১ তারিখ একবালপুরের ইব্রাহিম রোড, ২২-এ চেতলার অহীন্দ্র মঞ্চ, ২৩-এ চক্রবেড়িয়া নর্থ ও পদ্মপুকুর রোডের সংযোগস্থলে, ২৫-এ কলিন লেন ও শেক্সপিয়ার সরণি থানার সামনে মমতার সভা করার কথা। ২৬-এ নিজের পাড়ায় হরিশ মুখার্জি রোডের মুখে সম্ভাবত তাঁর শেষ সভা। ওই দিনই গঙ্গাপ্রসাদ মুখার্জি রোডে ফের সভা করার কথা অভিষেকের।
শুক্রবার সকালে চেতলা রোডের বস্তি থেকে বহুতল বাড়ি বাড়ি গিয়ে পরিবারের সকলকে ভোট দিতে বলেন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। তিনি বলেন, “মা দুর্গাকে যেভাবে অঞ্জলি দেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সেভাবে ভোট দিন।” ৭৪ নম্বর ওয়ার্ডের গোপালনগর মোড়, ৭৭ নম্বরের খিদিরপুর মোড়েও সভা করেন ফিরহাদ হাকিম। ৬৩ নম্বর ওয়ার্ডে পাড়ায় বসে আড্ডায় মাতেন বর্ষীয়ান মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। ৭০ নম্বর ওয়ার্ডে যান দেবাশিস কুমাররা। পটুয়া পাড়ায় ঘোরেন কার্তিক বন্দ্যোপাধ্যায়।