অভ্রবরণ চট্টোপাধ্যায়, শিলিগুড়ি: শিলিগুড়ির পুরভোটে (Siliguri Municipal Corporation) বিমল গুরুং-রোশন গিরি অর্থাৎ গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা নেতৃত্ব আগেই সমর্থন জানিয়েছিলেন তৃণমূলকে (TMC)। এবার সেই তালিকায় জুড়ল মোর্চা ভেঙে নিজের রাজনৈতিক দল তৈরি করা পাহাড়ের আরেক জনপ্রিয় নেতা অনীত থাপারও। রবিবার তিনি জানিয়ে দিলেন, শিলিগুড়ি পুরভোটে নেপালি অধ্যুষিত এলাকাগুলিতে তৃণমূলকেই সমর্থন করবে তাঁর দল ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা (BGPM)। প্রয়োজনে প্রচারেও নামবে। তবে সবটাই নির্ভর করছে তৃণমূলের পরিকল্পনার উপর। অনীত থাপার এই ঘোষণায় খুশি পাহাড়ের তৃণমূল নেতৃত্ব। তাঁকে স্বাগত জানিয়েছেন গৌতম দেব।
বিমল গুরুং, বিনয় তামাং, অনীত থাপা – একদা পাহাড়ের জনপ্রিয় রাজনৈতিক দল গোর্খা জনমুক্তি মোর্চায় (GJM)এই ত্রয়ীর নাম উচ্চারিত হত প্রায় একসঙ্গেই। পরে অবশ্য পাহাড় রাজনীতিতে অনেক ওঠাপড়া হয়েছে। গোর্খায় নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্বের জেরে দল ভেঙে টুকরো টুকরো হয়েছে। বিমল গুরুংয়ের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহের মামলা রুজু এবং প্রত্যাহার করেছে রাজ্য সরকার। অজ্ঞাতবাস থেকে ফিরে গুরুং বিজেপির হাত ছেড়ে মমতা সরকারের প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন জানিয়েছেন। জিটিএ (GTA)প্রশাসনের দায়িত্ব বদল নিয়ে বিনয় তামাং ও গুরুংয়ের শিবির ভাগ হয়েছে। জিটিএ চেয়ারম্যান অনীত থাপাও ক্ষমতার দড়ি টানাটানির খেলায় সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছেন। পরে শাসক শিবিরে বিনয় তামাং বাড়তি গুরুত্ব পাওয়ায় অসন্তুষ্ট অনীত থাপা নিজের আলাদা রাজনৈতিক দল গড়েছেন, যার নাম ‘ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা’। নেপালি অস্মিতা এখানে গুরুত্ব পেয়েছিল।
[আরও পড়ুন: Shantanu Thakur: বাড়ছে আন্দোলনের ঝাঁজ? ঠাকুর বাড়িতে ফের ‘বিদ্রোহী’ শান্তনুর বৈঠক ঘিরে তুঙ্গে জল্পনা]
তবে ভোটের মুখে পাহাড়ের নেতারা সমস্ত দ্বন্দ্ব ভুলতে চাইছেন। সকলেই একবাক্যে সমর্থনের হাত বাড়াচ্ছেন শাসকদল তৃণমূলের দিকেই। আগেই মোর্চার সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরি সাংবাদিক সম্মেলন করে জানিয়ে দিয়েছিলেন, আসন্ন শিলিগুড়ির পুরসভার ভোটে তাঁরা তৃণমূলকে সমর্থন জানাচ্ছেন, প্রয়োজনে প্রার্থীদের হয়ে প্রচারও করতে প্রস্তুত গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা।
[আরও পড়ুন: Abhishek Banerjee: সদ্যোজাতকে বাঁচাতে পাশে দাঁড়ানোর আর্তি টলিপাড়ার শিল্পীর, এগিয়ে এল অভিষেকের টিম]
রবিবার সেই একই পথে হাঁটলেন বিমল-রোশনদের একদা সতীর্থ অনীত থাপা। জানালেন, শিলিগুড়ির পুরনিগমের অন্তর্গত নেপালি অধ্যুষিত ওয়ার্ডগুলিতে ভোটের লড়াইয়ে তাঁর দলের সমর্থন থাকবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের প্রতিই। প্রসঙ্গত, আগামী ২২ জানুয়ারি এই পুরনিগমের ভোট হওয়ার কথা ছিল। তবে করোনা পরিস্থিতিতে তা পিছিয়েছে। ভোট হবে ১২ ফেব্রুয়ারি। ততদিনে তৃণমূল প্রার্থীদের প্রচারে হয়ত দেখা যাবে মোর্চার এই জনপ্রিয় নেতাদের।