সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিশ্বভারতী এবং রাজ্য সরকারের বেনজির সংঘাত। বোলপুরের পর পূর্ব বর্ধমানের সভামঞ্চ থেকেও ফের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে একহাত নিলেন মুখ্যমন্ত্রী। নাম না করে উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীকে মুখ্যমন্ত্রীর হুঁশিয়ারি, “আমি জানি কী করে কী করতে হয়।”
বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবৃতি পেশের পরদিনই ফের উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীকে নাম না করে নিশানা করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “বিশ্বভারতীতে ছাত্রদের উপর জুলুম চলছে। ছাত্রছাত্রী, অধ্যাপকদের উপর অবিচার হচ্ছে। আদালতে মামলা চলছে। কী বলে দেখি। তারপর জনগণের আদালতে বিচার হবে। আমি বিশ্বভারতীর পড়ুয়া থেকে অধ্যাপকদের পাশে আছি। আমি জানি কী করে কী করতে হয়।”
[আরও পড়ুন: ডুয়েট গেয়ে মাতিয়ে দিলেন কুণাল-সায়নী, উচ্ছ্বসিত হাজার হাজার দর্শক]
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের সঙ্গে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের জমি নিয়ে সংঘাত নিয়ে সমস্যার সূত্রপাত। চলতি জেলাসফরের শুরুতেই অমর্ত্য সেনের বাসস্থান ‘প্রতীচী’তে যান। অর্থনীতিবিদের সঙ্গে কথাবার্তাও বলেন। মঙ্গলবার বিশ্বভারতীর আন্দোলনকারী পড়ুয়া এবং অধ্যাপকদের সঙ্গে বৈঠকও সারেন মমতা। আর তারপর থেকেই যেন সংঘাতের ঝাঁজ আরও জোরাল হয়েছে। বুধবার বোলপুরের জনসভার মঞ্চ থেকে বিশ্বভারতীর উপাচার্যকে তীব্র কটাক্ষ করেন মুখ্যমন্ত্রী। উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে চিঠি পাঠানোর হুঁশিয়ারিও দেন। তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে বিবৃতি জারি করে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ মমতাকে কুরুচিকর আক্রমণ করে।
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, “বিশ্বভারতীকে নিয়ে জনসমক্ষে দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য করা অস্বাভাবিক নয়। মুখ্যমন্ত্রী কান দিয়ে দেখেন। তাঁকে তাঁর স্তাবকরা যা শোনান তাই বিশ্বাস করেন। আপনি চোখ দিয়ে দেখুন। কান দিয়ে নয়। তথ্য ও প্রমাণ দেখে মত তৈরি করুন। মুখ্যমন্ত্রীর আশীর্বাদ না থাকলে আমাদের সুবিধা। বিশ্বভারতী প্রধানমন্ত্রীর মতাদর্শে চলতে অভ্যস্ত।” রাজ্যের নেতামন্ত্রীদের গ্রেপ্তারির প্রসঙ্গ তুলেও মমতাকে নিশানা করে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ বিবৃতিতে উল্লেখ করে, “আজ আপনার মন্ত্রী ও উপাচার্য গারদের ভিতরে কী করে হল? আপনি স্তাবকদের কথা শুনে সিদ্ধান্ত নিয়ে নিজেই বিধ্বস্ত। আপনার প্রিয় শিষ্য যাকে না হলে আপনি বীরভূম ভাবতে পারতেন না, তিনিও জেলে। কবে বেরবেন কেউ জানে না। আগে সাবধান করলে আপনি দুর্নাম থেকে বাঁচতে পারতেন। অবশ্য আপনি যদি সত্যি অর্থে মানুষের মুখ্যমন্ত্রী হন, তাহলে এই কথাটা আপনার বোধগম্য হবে। আর যদি স্তাবক পরিবৃত্ত থাকতে ভালবাসেন তাহলে সামনে আরও বিপদের সম্মুখীন হবেন।” মুখ্যমন্ত্রী এবং বিশ্বভারতীর দ্বৈরথকে ভাল চোখে দেখছেন না বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন রেজিস্ট্রার সবুজকলি সেন। বিবৃতির ভাষা অত্যন্ত নিন্দাজনক বলেই মত তাঁর।