ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: বিহারে (Bihar) জেডিইউ BJP’র জোটসঙ্গী। এ রাজ্যে সেই বিজেপিকে হারানোর ডাক দিয়েই প্রার্থী দিয়েছিল বঙ্গের জেডিইউ (JDU)। এর পর প্রচার ও মনোনয়ন পর্ব। সেই পর্বের মধ্যেই বঙ্গে জেডিইউ রাজ্য সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দিলেন অশোক দাস। এ নিয়ে দলেরই সর্বভারতীয় সভাপতি আরসিপি সিংয়ের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন অশোকবাবু। শনিবার বলেছেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করে নীতীশ কুমারজি বিহারে সরকার গড়েছেন। অথচ বঙ্গে এমন দুই নেতাকে পর্যবেক্ষক করে পাঠানো হল, যাঁরা আপাদমস্তক দুর্নীতিতে যুক্ত। বারবার এ নিয়ে শীর্ষ নেতৃত্বকে জানিয়েও কোনও লাভ না হওয়ায় শেষে পদ ও দল ছাড়লেন অশোকবাবু। শুক্রবার এই ঘটনার প্রায় পরপরই ছয় বছরের জন্য সাসপেন্ড হওয়া অমিতাভ দত্ত নামে প্রাক্তন সভাপতিকে ফিরিয়ে এনে নতুন সভাপতির পদ দেওয়া হয়েছে।
প্রাথমিকভাবে ৭০টি আসনে লড়াইয়ের সিদ্ধান্ত হয়েছিল। কিন্তু দফাওয়াড়ি নাম ঘোষণার পথে যায় তারা। এই পরিস্থিতিতে অনেক জায়গায় নানা কারণে মনোনয়ন বাতিলের মতো ঘটনা ঘটায় আপাতত জনা ত্রিশ প্রার্থীর নাম চূড়ান্ত হয়েছে। তাদের সমর্থনে প্রচারও চলছে। এই মুহূর্তে রাজ্যে পর্যবেক্ষক করে পাঠানো হয়েছে গোলাম রসুল বলওয়াভি ও রবীন্দ্রপ্রসাদ সিংকে। অশোকবাবুর অভিযোগ, “আরসিপি সিং জানেন যে দুজনকে এ রাজ্যে পর্যবেক্ষক করে পাঠানো হয়েছে, তাঁদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি-সহ নানা অপরাধের অভিযোগ রয়েছে। নীতিশ কুমারকেও সে কথা জানানো হয়। তার পরও কোনও কথা না শুনে তাঁদের পাঠানো হয়েছে।”
[আরও পড়ুন: মনমরা হয়ে টানা ভাতঘুম, ভোট না দিয়ে ‘ঘরবন্দি’ই রইলেন জয়পুরের তৃণমূল প্রার্থী]
অশোকবাবুর আরও অভিযোগ, “আমরা এ রাজ্যে বিজেপির বিরুদ্ধে প্রচার করছি। কিন্তু সর্বভারতীয় সভাপতি তা চান না বলেই এখানে আমার বিরোধিতা করে গুরুত্বহীন করতেই দুই দুর্নীতিবাজকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।” অমিতাভবাবুও একই দোষে দুষ্ট বলে অভিযোগ। সেই কারণেই তাঁকে বছর তিনেক আগে সাসপেন্ড হতে হয়েছিল। যদিও অমিতাভবাবুর পালটা বক্তব্য, দল তিন বছর আগে দু’ভাগ হয়। তিনি শরদ যাদবের সঙ্গে যান। তখন সেই কারণেই তাঁকে সাসপেন্ড করে নীতিশ কুমারের দল। সে সময় কনভেনার ছিলেন অশোকবাবু। তাঁকেই দায়িত্ব দেন নীতীশ।
ঘটনাক্রম যাই হোক, প্রার্থী ঘোষণা হওয়ার পর দলের রাজ্য সভাপতি পদত্যাগ করায় অস্বস্তি তৈরি হয়। তখনই দায়িত্বে আনা হয় অমিতাভবাবুকে। এই মুহূর্তে তিনি পাটনায়। কলকাতা ফিরে ভোটের কাজে অংশ নেবেন। অন্যদিকে, অশোকবাবু দল ছেড়েও দলীয় প্রার্থীদের হয়ে প্রচার করা ছাড়েননি। বলছেন, “দলের দায়িত্ব ছেড়েছি। কিন্তু নীতিশজির আদর্শ ছাড়তে পারব না। আর প্রাথমিকভাবে যাঁদের প্রার্থী করা হয়েছিল, তাঁদের জন্য আমিই নীতিশজিকে বলেছিলাম। তাই একটা দায়িত্ব থেকে যায়।” অশোকবাবু নিজেও প্রার্থী হতে চেয়েছিলেন হুগলির তারকেশ্বর থেকে। সে আবেদনও এই দুই পর্যবেক্ষকের কথায় খারিজ করে দিয়েছেন বলে সর্বভারতীয় সভাপতির বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন।