গৌতম ব্রহ্ম: সুরাপ্রেমীদের জন্য সুখবর। জেলায়-জেলায় আরও বাড়ছে মদের দোকানের সংখ্যা। হরিণঘাটার মাংস, বাংলার ডেয়ারির দুগ্ধজাত পণ্যের মতো এবার জেলায় জেলায় মদ বিক্রির ফ্র্যাঞ্চাইজি দেবে রাজ্য। প্রাথমিকভাবে এধরনের মদের দোকান খুলতে উত্তরের তিন জেলাকে বেছে নেওয়া হয়েছে। যেখানে মিলবে ভারতে তৈরি ফরেন লিকার অর্থাৎ দেশে তৈরি হওয়া বিদেশি ব্র্যান্ডের মদ ও দেশি মদ। আয় বাড়িয়ে কোষাগার ভরতে রাজ্যের এই উদ্যোগ বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
নির্দিষ্ট অংকের অর্থের বিনিময়ে মদ বিক্রির ছাড়পত্র দিচ্ছে নবান্ন। জানা গিয়েছে, উত্তরবঙ্গের তিন জেলা আলিপুরদুয়ার, কালিম্পং ও দার্জিলিংয়ে খোলা হবে ‘বেভকো রিটেল শপ’। মদ বিক্রির ফ্র্যাঞ্চাইজি নিতে রাজ্যের আবগারি দপ্তরকে এককালীন টাকা দিতে হবে। সরকারি সূত্রে খবর, গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় ফ্র্যাঞ্চাইজি নিতে দিতে হবে ১ লক্ষ টাকা, পুরসভা বা নোটিফায়েড এলাকার জন্য দেড় লক্ষ ও পুরনিগমের জন্য ৪ লক্ষ টাকা দিতে হবে। এছাড়া বছরে ফ্র্যাঞ্চাইজি ফি বাবদ পঞ্চায়েত এলাকায় দিতে হবে ১৫ হাজার, পুরসভা এলাকায় ৩০ হাজার ও পুরনিগম এলাকায় দিতে হবে ৫০ হাজার টাকা। তবে লভ্যাংশের কত অংশ কে পাবে তা ঠিক করতে টেন্ডার ডাকা হচ্ছে।
[আরও পড়ুন: প্রাথমিকের ৩৯২৯ শূন্যপদে নিয়োগের নির্দেশ বিচারপতি গঙ্গেপাধ্যায়ের, পালটা ডিভিশন বেঞ্চে পর্ষদ]
ফ্র্যাঞ্চাইজি পেতে হলে রাজ্য সরকারের দেওয়া কয়েকটি প্রাথমিক শর্তপূরণ করতে হবে। সরকারি সূত্রে খবর, ন্যূনতম ১০০ বর্গফুটের দোকান ও ১০০ বর্গফুটের গুদাম থাকতে হবে। আউটলেটে সাজানোর নকশা করে দেবে সরকার-ই। হরিণঘাটা বা বেঙ্গল ডেয়ারির আউটলেট যেভাবে সাজানো হয় একই ধাঁচে বেভকোর আউটলেট সাজাতে চায় আবগারি দপ্তর। জানানো হয়েছে, এক ব্যক্তির মালিকানায় সর্বোচ্চ তিনটি ফ্র্যাঞ্চাইজি থাকতে পারে। দোকানের কর্মীদের নিয়োগ ও বেতন হবে সরকারি নিয়ম মেনে। তাঁদের পরিচয়পত্র দেবে জেলা আবগারি অধিকর্তা।
কোন এলাকায় কীভাবে মিলবে ফ্র্যাঞ্চাইজি, তারও সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। পঞ্চায়েত এলাকায় ৩ কিলোমিটার মধ্যে কোনও মদের দোকান থাকলে মিলবে ফ্র্যাঞ্চাইজি। পুরসভা এলাকায় এই দূরত্ব ২ কিলোমিটার এবং পুরনিগম বা কর্পোরেশন এলাকায় দূরত্ব ধার্য করা হয়েছে ১ কিলোমিটার। জানা গিয়েছে, আপাতত আলিপুরদুয়ারে মোট ৩১টি ফ্র্যাঞ্চাইজি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সবমিলিয়ে রাজ্যের ভাঁড়ার ভরাতে জেলায় জেলায় আরও বেশি সংখ্যক মদের দোকান খুলতে চায় রাজ্য। আর নবান্নের এই সিদ্ধান্তে খুশি সুরাপ্রেমীরাও।