স্টাফ রিপোর্টার: স্কুলে তবু কিছু সাড়া মিলেছিল। কিন্তু পাড়ায় গিয়ে কার্যত তাড়া খেয়ে ফিরে আসতে হয়েছে। হাম-রুবেলার টিকাকরণ শেষ হওয়ার ২৪ ঘণ্টা আগে এমন চিত্র উঠে এসেছে রাজ্যের বিভিন্ন এলাকা থেকে। রাজ্যের অন্তত ৯টি জেলায় টিকার হার অত্যন্ত কম।
৯ মাস থেকে ১৫ বছর বয়স পর্যন্ত বাচ্চাদের হাম-রুবেলার টিকাকরণ শেষ হচ্ছে আজ শনিবার। কিন্তু তথ্য বলছে, লক্ষ্যমাত্রার ৯১ শতাংশ মাত্র পূরণ হয়েছে। আর খাস কলকাতার টিকার আওতায় এসেছে মাত্র ৬৪ শতাংশ বাচ্চা। মোদ্দা কথা, ১০০ ভাগ তো দূরের কথা, অর্ধেকের কিছু বেশি টিকার আওতায় এসেছে। আবার খাতায় কলমে ৯১ শতাংশ টিকার আওতায় এলেও সঠিক সংখ্যা ঠিক কত তা নিয়ে সংশয় রয়েছে স্বাস্থ্যকর্তাদের মধ্যেই। তাই শনিবার টিকাকরণ শেষ হলেও আরও কয়েকদিন চালাতেই হবে। তা না হলে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে না। তাই এদিন সন্ধেয় স্বাস্থ্যভবন থেকে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানানো হয়েছে কলকাতা-সহ ৯টি জেলায় ২১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এমআর টিকাকরণ চলবে।
[আরও পড়ুন: ‘আমি জাতীয় পুরস্কার বিজয়ী অভিনেত্রী, সেটা হয়তো জানে না!’ আমিরকে ‘বেচারা’ বলে কটাক্ষ কঙ্গনার]
প্রথম সপ্তাহে ৩৩ শতাংশ বাচ্চাকে টিকার আওতায় আনায় রীতিমতো আশ্বস্ত হয়েছিলেন স্বাস্থ্যকর্তারা। কিন্তু এরপরেই টিকার গ্রাফ নিম্নমুখী হতে শুরু করে। ৯ জানুয়ারি থেকে রাজ্যে এমআর টিকার কর্মসূচি শুরু হয়। ঠিক ছিল, রাজ্যের ২ কোটি ৩৩ লক্ষ শিশু থেকে কিশোর-কিশোরীকে এই কর্মসূচির আওতায় আনা হবে। ঘটনা হল, প্রথম তিন সপ্তাহ স্কুলে টিকাকরণ হয়েছে। যুক্ত করা হয়েছে স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের। স্কুল সাজিয়ে টিফিনের ব্যবস্থাও করা হয় টিকার দিন। এমনকী, টিকা নিলে সেদিন অনেক স্কুলে ছুটিও দেওয়া হয়। কিন্তু তাতেও দক্ষিণ ২৪ পরগনার মহেশতলার ১০টি ওয়ার্ডে টিকাকরণ কার্যত তলানিতে। আবার বজবজ, উত্তরের হাসনাবাদ বা মুর্শিদাবাদের অন্তত ছ’টি ব্লকে টিকার হার অত্যন্ত কম। টিকা কম হয়েছে খাস কলকাতার অন্তত ৪০টি ওয়ার্ডে। স্বাস্থ্যভবন, সুডা এবং সংশ্লিষ্ট পুরসভা ও পঞ্চায়েতগুলিকে নিয়ে এদিন আলাদা করে এলাকাভিত্তিক মিটিং হয়েছে। সেই অভিজ্ঞতা মোটেই সুখকর নয়। স্বাস্থ্যভবনের বৈঠকে এইসব জেলা থেকে যে তথ্য পাওয়া গিয়েছে তা এরকম। বাড়িতে এমআর ভ্যাকসিনের জন্য আশা কর্মীরা গেলে রীতিমতো তাড়া করা হয়েছে। সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, বাচ্চাদের টিকা দিতে দেওয়া হবে না। একরকম বাধ্য হয়ে আজ শনিবার থেকে ফের টিকার জন্য মাইকে প্রচার শুরু করবে সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েত ও পুরসভা।
[আরও পড়ুন: রোগ সারানোর নামে একরত্তির দাঁত ভেঙে মেঝেয় আছাড় ওঝার, মৃত্যু ঘিরে চাঞ্চল্য]
আবার কলকাতায় বেসরকারি স্কুলের একাংশও দেরিতে এমআর ভ্যাকসিন শুরু করেছে বলে অভিযোগ স্বাস্থ্যকর্তাদের। কিন্তু শুক্রবারের চিত্র দেখে অস্বস্তি বেড়েছে স্বাস্থ্যভবনের। গণটিকার নোডাল অফিসার ডা. অসীম দাশ মালাকারের দাবি, “আজ ও আগামী কাল মিলিয়ে ৯৫ শতাংশ টিকাকরণ হয়ে যাবে। আর ৮৫ শতাংশ বা তার কম যেসব এলাকায় সেখানে আরও কয়েকদিন টিকা চলবে।” জনস্বাস্থ্য আধিকারিকদের বক্তব্য, গণটিকাকরণ হলে গোষ্ঠীবদ্ধ গণপ্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়। তবে যদি ৫-৭ শতাংশ বাচ্চা কোনও কারণে বাদ চলে যায় তাদের সুরক্ষা দেবে টিকাপ্রাপ্তরাই। গণ টিকাকরণের লাভ এটাই।