স্টাফ রিপোর্টার: দিল্লি দূষণের দায় অরবিন্দ কেজরিওয়াল (Arvind Kejriwal) চাপিয়েছেন পড়শি রাজ্যগুলির উপর। প্রায় সেই পথে হেঁটেই আন্তঃরাজ্য দূষণ নিয়ে সরব হলেন রাজ্যের পরিবেশমন্ত্রী মানস ভুঁইঞা (Manas Bhunia)। বঙ্গদূষণের অর্ধেক দায় বিহার, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশার ঘাড়ে চাপালেন। জানিয়ে দিলেন, ”মেঘের মতো দূষণও উড়ে আসে পড়শি রাজ্য থেকে। যা পশ্চিমবঙ্গের মোট দূষণের প্রায় ৫০ শতাংশ! এই আন্তঃরাজ্য দূষণে লাগাম পরাতে হবে।” তবে কেজরিওয়ালের মতো শুধু অভিযোগ তুলে থেমে যাননি মানস। সমাধানসূত্র খুঁজে বের করে তা কার্যকর করার চেষ্টাও শুরু করে দিয়েছেন। বিহার, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশার সঙ্গে ভাগ করে নেওয়া সীমানায় দেওয়া হচ্ছে সবুজ ‘বেড়া’ (Green fencing)। যা এই বায়ুমণ্ডলের নিচু স্তরে ভাসমান ধূলিকণাকে সীমান্তেই আটকে দেবে। নির্মল রাখবে বাংলার বাতাস।
সম্প্রতি এই ‘ন্যাচারাল ফেন্সিং অফ ট্রিজ’ নিয়ে দপ্তরের আধিকারিকদের সঙ্গে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক সারেন মন্ত্রী। বৈঠকে ছিলেন রোশনি সেন, রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের চেয়ারম্যান কল্যাণ রুদ্র, মেম্বার সেক্রেটারি রাজীব সিনহা। মানসবাবু জানালেন, উত্তর ভারতের দূষণ (Pollution) বিহার, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা হয়ে পশ্চিমবঙ্গে ঢুকছে। দিল্লি আইআইটি ও রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ গবেষণা চালিয়ে দেখেছে যে, এই দূষণের মাত্রা শীতকালে (Winter) অনেক বেড়ে যায়। এতে লাগাম পরাতে পারবে উঁচু গাছ। তাই তিন পড়শি রাজ্যের সীমানায় শাল, সেগুন, আকাশমণির মতো গাছ লাগানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। বনদপ্তরের সঙ্গে দ্রুত এই ব্যাপারে বৈঠক করা হবে বলেও জানিয়েছেন মন্ত্রী।
[আরও পড়ুন: আর্থিকভাবে অনগ্রসরদের জন্য সংরক্ষণ বৈধ, ঐতিহাসিক রায় সুপ্রিম কোর্টের]
তিনি জানালেন, দেশের পরিচ্ছন্নতম দীপাবলি উপহার দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। দীপাবলির দিন রাত একটা থেকে পরের দিন বিকেল তিনটে পর্যন্ত তিন ঘণ্টা অন্তর বাতাসের মান মাপা হয়েছে। সবক্ষেত্রেই এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (AQI) ৪৩-৪৭ এর মধ্যে ছিল। যেখানে দিল্লির AQI ছিল ৩০৮-৩৩০, মুম্বই ১০৬-১৩০, বেঙ্গালুরু ১২৬-১৫৮, চেন্নাই ১৬৯-২৬১। শব্দদূষণের মাত্রাও অনেকটাই কমেছিল। শব্দবাজির বিরুদ্ধে প্রচারে ঝড় তুলেই এই সাফল্য নিয়ে এসেছে পরিবেশ দপ্তর। এই ধারা বজায় রাখতে হবে।
[আরও পড়ুন: রাজ্য পুলিশের ডিজির বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা খারিজ, হাই কোর্টে ধাক্কা শুভেন্দুর]
শীতকালে ধুলোর মাত্রা বেড়ে যায়। তাই ১৫ নভেম্বর থেকে কলকাতা, হাওড়া, বারাকপুর, আসানসোল, হলদিয়া, দুর্গাপুর, শিলিগুড়ির রাস্তা ধোয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। মানসবাবু জানালেন, ধূলোয় লাগাম পরাতে গাড়ির সাহায্যে দিনে দু’বার রাস্তায় জল ছেটানো হবে। স্থানীয় প্রশাসনকে এই মর্মে প্রয়োজনীয় গাইডলাইন পাঠানো হয়েছে। ১ জুলাই থেকে কলকাতা-সহ রাজ্যজুড়ে বন্ধ হয়েছে ৭৫ মাইক্রনের নিচে সমস্ত ধরনের প্লাস্টিকজাত ক্যারিব্যাগ। মন্ত্রীর পর্যবেক্ষণ, নজরদারির অভাবে আবার বেশ কিছু জায়গায় প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ ব্যবহার হচ্ছে। এসব বরদাস্ত করা হবে না। পরিবেশের ক্ষতি করে কোনও পদক্ষেপ নেওয়া যাবে না।