গৌতম ব্রহ্ম: বাংলাদেশ থেকে চিকিৎসার জন্যে আসা রোগীরা যাতে সহজে ভিসা পায় তার জন্যে বিশেষ পোর্টাল তৈরি করছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এখন ভিসার জন্যে কমবেশি এক থেকে দেড় মাস সময় লাগে। তথ্যপ্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে সেই সময়টা কমিয়ে মাত্র দুদিনে নিয়ে আসার চেষ্টা করছে রাজ্যের তথ্যপ্রযুক্তি দপ্তর। সম্প্রতি এই নিয়ে দপ্তরের সচিব রাজীব কুমার বৈঠক করেন রাজ্যের বেসরকারি হাসপাতালগুলির সঙ্গে।
সেখানেই এই বিষয়ে বিশদ আলোচনা হয় বলে জানালেন ‘অ্যাসোসিয়েশন অফ হসপিটালস অফ ইস্টার্ন ইন্ডিয়া’-র সভাপতি রূপক বড়ুয়া। তাঁর কথায়, “রাজ্য সরকার মেডিক্যাল টুরিজমের পরিধি বাড়াতে চাইছে। বিশেষ করে বাংলাদেশ, নেপাল, ভুটান থেকে ফি বছর প্রচুর রোগী আসেন বাংলায়। ভিসা প্রক্রিয়া সহজ সরল হলে রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে।” নবান্ন সূত্রের খবর, দুসপ্তাহের মধ্যে এই ভিসা সংক্রান্ত পোর্টালটি চালু হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে চব্বিশের শুরু থেকেই পড়শি দেশের নাগরিকরা এই নীতির সুবিধা পাবেন। অর্থাৎ, আবেদনের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই ভিসা মঞ্জুর হয়ে যাবে।
স্বাস্থ্যদপ্তরের এক আধিকারিক জানান, ভিসা প্রক্রিয়া আরও বেশি রোগীভিত্তিক করা এই পোর্টালের লক্ষ্য। রোগীর পরিবার যেন ‘লজিস্টিক অ্যান্ড ট্রান্সপারেন্ট ইনফরমেশন’ পান। কোন হাসপাতাল কীভাবে কাজ করছে এগুলো যেন স্পষ্ট করে জানার ব্যবস্থা থাকে। পরবর্তী বৈঠকে বাংলাদেশের উপদূতাবাসের প্রতিনিধি উপস্থিত থাকতে পারেন বলে খবর।
[আরও পড়ুন: মেডিক্যাল এন্ট্রান্স কোর্সের নামে আর্থিক প্রতারণা! আদালতে যাওয়ার হুঁশিয়ারি অভিভাবকের]
উল্লেখ্য, সম্প্রতি বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত ক্ষেত্রভিত্তিক সেমিনারে মেডিক্যাল ভিসা নিয়ে আলোচনা হয়। যেখানে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট কার্ডিয়াক সার্জন তথা নারায়ণা হসপিটাল গ্রুপের কর্ণধার ডা. দেবী শেঠি, রাজ্যের স্বাস্থ্য সচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম ও রূপক বড়ুয়া। ২০২১ সালের তথ্য বলছে, বছরে ২৪ লক্ষ ৭০ হাজার মেডিক্যাল টুরিস্ট বাংলাদেশ থেকে ভারতে আসে।
শুধু বাংলাদেশ থেকে ভারতে আসা মানুষ মেডিক্যাল টুরিজমে পাঁচ হাজার কোটি টাকার বেশি খরচ করে। এটা যারা মেডিক্যাল ভিসা নিয়ে যাচ্ছে তাদের তথ্য। এছাড়া অন্য ভিসাগ্রহীতারাও আছেন। রাজ্য হিসাবে এই সংখ্যাটা ভাগ করা মুশকিল। দিল্লি ও মুম্বইয়ে ১০ থেকে ১২ শতাংশ মানুষ যায়। সবচেয়ে বড় অংশ পায় পশ্চিমবঙ্গ, দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রোগী যায় তামিলনাড়ুতে, চেন্নাই ও সিএমসি ভেলোরে। এখন বেঙ্গালুরু, হায়দরাবাদেও কিছু মানুষ যাচ্ছেন।