শুভঙ্কর বসু: আদালত অবমাননার মামলায় কলকাতা হাই কোর্টে (Calcutta High Court) উপস্থিত হয়ে ক্ষমা চাইলেন রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য।
২০১৪-র প্রাথমিক টেটে প্রশ্ন ভুল সংক্রান্ত মামলায় আদালতের নির্দেশ না মানায় মানিকবাবুকে এজলাসে উপস্থিত হওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। আদালতের নির্দেশ মত এদিন তিনি হাজির হয়ে ক্ষমা চাইতেই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আপনাকে অপমান করার কোনও উদ্দেশ্য আদালতের নেই। কিন্তু আপনি আদালতের নির্দেশ মানেননি। তাই এই পদক্ষেপ। আপনি ল’কলেজের অধ্যক্ষ ছিলেন? তারপরও আইনকে অবহেলা করেছেন?’’
এরপরই আবার বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আপনি পর্ষদের সর্বোচ্চ পদে রয়েছেন। আপনার ইগো থাকতে পারে না। আপনার প্রচুর ক্ষমতা ও অর্থবল। যিনি মামলাকারী তাঁর কী আছে?’’ ঘটনার সূত্রপাত হয় ২০১৪ সালে। সে বছর টেটে মোট ছ’টি প্রশ্ন ভুল ছিল। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সে সময় হাই কোর্টে মামলা হয়। তৎকালীন বিচারপতি সমাপ্তি চট্টোপাধ্যায় প্রশ্নগুলি যাচাইয়ের জন্য বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে দায়িত্ব দেন।
[আরও পড়ুন: বেহালা জোড়া খুন: দিদি ও ভাগ্নেকে হত্যার পর লুটের গয়না বিক্রি করে মদ কেনে দুই ভাই! প্রকাশ্যে নয়া তথ্য]
বিশ্বভারতী কর্তপক্ষ বিষয়টি যাচাইয়ের পর জানিয়ে দেয় বাস্তবিক অর্থেই প্রশ্নগুলিতে ভুল রয়েছে। এরপরই ২০১৮ সালের ৩ অক্টোবর বিচারপতি চট্টোপাধ্যায় নির্দেশ দেন, ওই প্রশ্নগুলি সমাধানের চেষ্টা করলেই পরীক্ষার্থীকে পূর্ণ নম্বর দিতে হবে। এই নির্দেশ কার্যকর না করায় এদিন আদালতে হাজিরা দিতে হয়েছে পর্ষদ সভাপতিকে। যদিও এদিন মানিকবাবু বলেন, “মামলাকারী নীলোৎপল গুছাইতকে ১০ সেপ্টেম্বর নিয়োগপত্র দেওয়া হয়েছে।”
পর্ষদের এই পদক্ষেপে আদালত সন্তুষ্ট হয়। আদালত অবমাননার মামলা থেকে পর্ষদের সভাপতিকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আপনি পরীক্ষার্থী পিতৃতুল্য। এরকম ব্যবহার করাই উচিত। এখানে অনেকেই আপনার ছাত্র। আদালত অবমাননার দায়ে আপনাকে ডেকে পাঠানোটা ভাল দেখায় না। যোগ্য প্রার্থীদের চাকরির ব্যবস্থা করুন। এখন সম্ভব না হলে ভবিষ্যতে যে শূন্য পদগুলি তৈরি হবে, সেখানে নিয়োগের ব্যবস্থা করুন।”