সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ”আমরা আত্মসমর্পণ করব না। আমাদের ভূখণ্ডের এক ইঞ্চি জমিও ছাড়ব না।” এভাবেই রাশিয়াকে (Russia) হুঁশিয়ারি দিল ইউক্রেন (Ukraine)। সেদেশের বিদেশমন্ত্রী দিমিত্র কুলেবা অনলাইন এক সাংবাদিক সম্মেলনে এমনটাই জানিয়েছেন। সেই সঙ্গে ইউক্রেনের তরফে পরিষ্কার করে দেওয়া হয়েছে রাশিয়ার সঙ্গে বৈঠকের সময় তারা কোনও ভাবেই নত হবে না।
এদিকে এদিনই রুশ পরমাণু অস্ত্র প্রতিরোধী দলতে সতর্ক থাকতে বলেছেন পুতিন। মনে করা হচ্ছে ন্যাটো সামরিক জোটের তরফে পরমাণু হামলা হতে পারে, এই আশঙ্কা করছেন রুশ প্রেসিডেন্ট। তাঁর এই সতর্কতা জারির সিদ্ধান্তেও নিন্দা করেছে ইউক্রেন। এদিকে রাশিয়া জানিয়ে দিয়েছে, বৈঠক চলাকালীনও হামলা থামাবে না তারা।
[আরও পড়ুন: ওষুধ সংস্থার কর্মী সেজে কোটি টাকার প্রতারণা! কলকাতা পুলিশের জালে নাইজেরিয়ার যুবক]
অর্থাৎ বৈঠকে বসতে রাজি হলেও আক্রমণাত্মক মেজাজ থেকে সরছে না কিয়েভ। এর আগে মস্কোর তরফে দাবি করা হয়েছিল আগে আত্মসমর্পণ করুক ইউক্রেন। তারপর বৈঠক শুরু হবে। কিন্তু তেমন কোনও শর্ত মানতে একেবারেই নারাজ জেলেনস্কি। দেশের প্রেসিডেন্ট জানিয়ে দিয়েছেন, কোনও আগাম শর্ত রেখে বৈঠকে বসতে রাজি নন তাঁরা।
বৈঠকের স্থান হিসেবে অবশ্য বেলারুশ পছন্দ নয় জেলেনস্কির। তিনি জানিয়েছিলেন, “রাশিয়ার সঙ্গে বৈঠকে আমরাও আগ্রহী। কিন্তু বেলারুশে আলোচনায় বসব না। কারণ ওরা রাশিয়ার আগ্রাসনে সাহায্য করেছে। বেলারুশ সীমান্ত দিয়ে কিয়েভে হামলা চালিয়েছে পুতিন বাহিনী।” কোথায় কোথায় আলোচনা হতে পারে, তাও জানিয়েছেন ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট। ওয়ারশ, ব্রাতিস্লাভা, বুদাপেস্ট, ইস্তানবুল, বাকুতে দ্বিপাক্ষিক আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছেন জেলেনস্কি। শেষ পর্যন্ত অবশ্য বেলারুশেই আলোচনা হতে চলেছে চলে বলে খবর। জানা গিয়েছে, এদিন বেলারুশের প্রেসিডেন্ট ফোন করেছিলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টকে।
এদিকে এদিনই প্রথম রাশিয়ার তরফে স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে যুদ্ধে তাদেরও বহু সেনা হতাহত হয়েছে। সংবাদ সংস্থা এএফপি সূত্রে একথা জানা গিয়েছে। গত বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে ইউক্রেনে ঢুকে পড়েছিল রুশ বাহিনী। মনে করা হয়েছিল, দ্রুতই হয়তো ইউক্রেন দখল করে ফেলবে রাশিয়া। বিশেষ করে আমেরিকা-সহ ন্যাটো সামরিক জোটের কোনও দেশই যেখানে সেনা পাঠাচ্ছে না, তাই রাশিয়ার অনায়াস জয় কেবল সময়ের অপেক্ষা বলে মনে করেছিল ওয়াকিবহাল মহল। কিন্তু অভাবনীয় প্রতিরোধ দেখিয়েছে ইউক্রেন। কেবল সেদেশের সেনাই নয়, সাধারণ মানুষও ঝাঁপিয়ে পড়েছেন দেশের মাটিকে হানাদারদের হাত থেকে রক্ষা করতে। এর ফলে রাশিয়াকেও যে যথেষ্ট বেগ পেতে হয়েছে তা এদিন মস্কোর এই বিবৃতি থেকে পরিষ্কার।