সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাজ্যের বাইরে থাকা পরিযায়ী শ্রমিকরা এখন থেকে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে যুক্ত হচ্ছেন। বৃহস্পতিবার ২০২৩-২০২৪ অর্থবর্ষের রাজ্য বাজেট পেশ করে এমনটাই জানিয়েছেন অর্থ দপ্তরের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। প্রস্তাবিত বাজেটে(West Bengal Budget 2024) বলা হয়েছে, ভিন রাজ্যে থাকা যেসব পরিযায়ী শ্রমিকের নাম কর্মসাথী পোর্টালে নথিভুক্ত আছে তাঁদের স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের আওতায় আনা হবে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে তাঁরা চিকিৎসা পাবেন। শুধু এই কারণেই বাজেটে ১৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। অন্তত ২৮ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিক এই প্রকল্পে সুবিধা পাবেন।
স্বাস্থ্যসাথী (Swasthya Sathi) প্রকল্প গোটা দেশের রোল মডেল। রাজ্যে ২.৪৫ কোটি পরিবার এই প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত। ২হাজার ৭৪৯টি হাসপাতাল ও নার্সিংহোম প্রকল্পে যুক্ত হয়েছে। উপভোক্তার সংখ্যা ৬৫ লক্ষ। এর জন্য সরকারি কোষাগার থেকে ব্যয় হয়েছে ৮ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রকল্পে ২ হাজার কোটি টাকার বেশি খরচ হয়েছে। প্রতিদিন ৬ হাজার রোগী পরিষেবা পাচ্ছেন। স্বাস্থ্যসাথীর মতোই চোখের আলো প্রকল্প রাজ্যে অগণিত মানুষের ব্যাপক সাড়া পেয়েছে। ১২.৪৫ লক্ষ ছানি অপারেশন হয়েছে। ১৪.৪৮ লক্ষ চশমা বিনামূল্যে বিতরণ হয়েছে।
[আরও পড়ুন: কেন্দ্রের ১০০ দিনের কাজের পালটা ‘কর্মশ্রী’, রাজ্য বাজেটে শ্রমিকদের জন্য বড়সড় সিদ্ধান্ত]
গ্রামীণ, মহকুমা ও জেলা হাসপাতালে ২১টি ভ্রাম্যমাণ (স্যাটেলাইট) চক্ষু অপারেশন চালু হয়েছে। বিশেষ উদ্যোগ নিয়ে ১০টি জেলায় ছানিজনিত অন্ধত্ব নিবারণ কর্মসূচি বিশেষ মর্যাদা পেয়েছে। শিশু সাথী প্রকল্পে এখনও ২৯ হাজার ৫০০ সদ্যোজাত শিশুর হার্ট অপারেশন হয়েছে। রাজ্যে প্রাতিষ্ঠানিক প্রসব ২০১১ সালে ছিল ৬৮.১ শতাংশ। এখন সেটা বেড়ে হয়েছে ৯৯.২ শতাংশ। মাতৃত্বকালীন মৃত্যুহার ১১৩ থেকে ১০৩য়ে এসেছে। গত বছর ৯৯.৭৫ শতাংশ শিশুর টিকাকরণ হয়েছে। অন্তঃসত্ত্বা মহিলাদের জন্য ১৩টি প্রতীক্ষালয় তৈরি হয়েছে। ১৪টি মেডিক্যাল কলেজে হাব তৈরি হয়েছে।
স্বাস্থ্যসাথী ও শিশুসাথীর মতোই টেলিমেডিসিন স্বাস্থ্যপরিষেবা এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছে। বাজেট (West Bengal Budget) প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ৬ হাজার ৬৮০টি সুস্বাস্থ্য কেন্দ্র, ৭৮০টি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও ৪৬৫টি উচ্চ প্রাথমিক স্বাস্থ্য়কেন্দ্র তৈরি হয়েছে। ২০২৩ পর্যন্ত এই খাতে ২.৪৭ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নতির পাশাপাশি রাজ্যের নতুন মেডিক্যাল ও নার্সিং কলেজ তৈরি হয়েছে। শুরুর সময় থেকে এখন পর্যন্ত মোট ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। ২.৩৭ কোটি রোগী পরিষেবা পেয়েছেন। রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর উন্নয়নে এক নতুন দিশা দেখানো হয়েছে বলে চিকিৎসা বিশেষজ্ঞদের অভিমত।
জীবনের শুরু থেকেই স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে নাগরিকদের জীবনের সঙ্গে যুক্ত করতে ছাত্রছাত্রীদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। স্কুলগুলোতে ৪২ হাজারের বেশি ছাত্রী শৌচাগার, ২৬ হাজারের বেশি ছাত্র শৌচাগার ও বিশেষ চাহিদাসম্পন্নদের ৭ হাজার ৯৭১টি শৌচাগার তৈরি হচ্ছে বলে বাজেট প্রস্তাবে জানানো হয়েছে। ক্ষীণ দৃষ্টি শক্তির পড়ুয়াদের জন্য বড় হরফের পাঠ্যবই ও বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন পড়ুয়াদের যাতায়াতের খরচও দেবে সরকার।