অর্ণব দাস, বারাকপুর: নিউ বারাকপুরের (New Barrackpore) গেঞ্জি কারখানার বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ডে নিহতদের পরিবারের পাশে দাঁড়াল রাজ্য সরকার। নিহত ৪ জনের পরিবারের হাতে দু লক্ষ টাকার চেক তুলে দেওয়া হল রাজ্যের তরফে। শনিবার দমদমের সাংসদ সৌগত রায় (Sougata Roy) মৃতদের পরিবারের হাতে চেক তুলে দিয়েছেন। সবরকমভাবে তাঁদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। প্রায় ৫৬ ঘণ্টা পর আগুন নিভে গেলেও কারখানার পিছনে ওষুধের গুদাম থেকে রাতেও ধোঁয়া বেরতে দেখা গিয়েছে। সেখানে কুলিং প্রসেস চলছে এখনও। এত বড় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা এই শিল্পাঞ্চলে আগে কখনও ঘটেছে কিনা, মনে করতে পারছেন না বাসিন্দারা। আতঙ্ক এখনও গ্রাস করে রেখেছে তাঁদের।
বুধবার গভীর রাতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের (Fire) ঘটনা ঘটে বিলকান্দা শিল্প তালুকের একটি গেঞ্জি কারখানা। ‘যশে’র তাণ্ডবের পর বৃষ্টির কারণে বেশ কয়েক ঘন্টা পর স্থানীয়রা জানতে পারেন, কারখানায় আগুন লেগেছে। ততক্ষণে আগুন ছড়িয়ে পরে কারখানার পিছনের একটি নামী কোম্পানির ওষুধের গোডাউনে। এরপর থেকে প্রায় ৫৬ ঘন্টা ধরে আগুনের সঙ্গে দমকল কর্মীদের লড়াই। অবশেষে নিয়ন্ত্রণে আগুন। ভিতর থেকে ৪ জনের ঝলসানো দেহ উদ্ধার হয়। নিখোঁজ কর্মীদের পরিবারের সদস্যরা গিয়ে মৃতদেহ শনাক্তকরণ করে। তারপর মৃতদেহগুলোকে ময়না তদন্তের জন্য পাঠানো হয় কামারহাটি কলেজ অফ মেডিসিন এন্ড সাগর দত্ত হাসপাতালে। জানা গিয়েছে, মৃত কারখানার কর্মী সুব্রত ঘোষের পরিবারের পক্ষ থেকে কারখানার মালিকের বিরুদ্ধে নিউ ব্যারাকপুর থানা একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে।
[আরও পড়ুন: অনেকটা কমল দৈনিক করোনা সংক্রমণ, রাজ্যে কোভিডজয়ী ১২ লক্ষের বেশি]
বারাকপুর কমিশনারেটের পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মা বলেন, “চারটি মৃতদেহ তাঁদের পরিবারের লোকেরা শনাক্ত করেছে। ইতিমধ্যেই এই ঘটনা নিয়ে পুলিশ একটি মামলা রুজু করেছে। কারখানার মালিকের খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। ঘটনার তদন্তের জন্য ফরেনসিক টিমকে জানানো হয়েছে।” মৃত অমিত সেনের শ্বশুর মহানন্দ বিশ্বাস জানান, তাদের সঙ্গে এখনও পর্যন্ত কারখানার তরফে কেউ যোগাযোগ করেনি। আরেক মৃতের পরিবারের আত্মীয় জানান, কাজে না আসলে বারবার খবর নিত মালিকপক্ষ। কিন্তু এত বড় ঘটনা ঘটে গেলও তাঁদের কোনও খোঁজ নেই। এদিনই সরকারের পক্ষ থেকে মৃতের পরিবারের প্রত্যেকের হাতে দু’লক্ষ টাকা করে চেক তুলে দেন সাংসদ সৌগত রায়। বারাকপুর দু নম্বর ব্লকের তৃণমূল সভাপতি সুপ্রিয়া ঘোষ বলেন, “আমরা চেয়েছিলাম যতটা দ্রুত সম্ভব পরিবারের লোককে ক্ষতিপূরণ দিতে। মৃতের পরিবারের পাশে আমরা সব সময় আছি। পাশাপাশি তালবান্দা শিল্পতালুক অঞ্চলে যাতে এরকম দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা পুনরায় না ঘটে, তার জন্য স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”