দীপালি সেন: স্কুল পড়ুয়াদের মেধার মান যাচাই করতে এবার বিশেষ পরীক্ষা চালু করতে চায় রাজ্য। প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক স্তরের মধ্যে চারটি শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের পরীক্ষা নিয়ে স্কুল শিক্ষা দফতর বুঝে নিতে চায় পড়াশোনার মান কতটা এগিয়েছে। কোথায় কোথায় ব্যবস্থা নিলে মানোন্নয়ন সম্ভব। বছরে একবার এই পরীক্ষা নেওয়া হবে বলে স্কুল শিক্ষা দফতরে সূত্রে খবর। শুক্রবার ‘স্টেট অ্যাচিভমেন্ট সার্ভে’ নিয়ে বৈঠকে বসেন স্কুল শিক্ষা দফতরের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা। সিদ্ধান্ত হয়েছে, দ্রুত এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তৃতীয়, পঞ্চম, অষ্টম এবং দশম শ্রেণির পড়ুয়ারা এই পরীক্ষা দেবে। চারটি বিষয়ে পরীক্ষা হবে। সেই পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে সমীক্ষা করে রাজ্যের স্কুলস্তরের শিক্ষা ব্যবস্থার হালহকিকত জেনে নিতে চায় রাজ্য সরকার। সম্ভবত চলতি বছর ডিসেম্বর মাসেই রাজ্যজুড়ে ‘স্টেট অ্যাচিভমেন্ট সার্ভে’ বা ‘স্যাস’ পরীক্ষা নেওয়া হবে। রাজ্যে প্রথমবার ‘স্টেট অ্যাচিভমেন্ট সার্ভে’র পরীক্ষা হতে চলেছে।
স্কুল শিক্ষা দফতর মনে করছে, রাজ্যের স্কুল পড়ুয়ারা এই মুহূর্তে কতটা শিখছে, কতটা শিখেছে এবং পরীক্ষার খাতায় সেটার প্রয়োগ কতটা হচ্ছে, তা বোঝা যাবে এই পরীক্ষার মাধ্যমে। একইসঙ্গে সমীক্ষার রিপোর্ট বিশ্লেষণ করে জানা যাবে, ভবিষ্যতে স্কুলস্তরে পড়াশোনার মানোন্নয়নে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। সামগ্রিকভাবে গোটা রাজ্য তো বটেই, এই সমীক্ষার মাধ্যমে অঞ্চলভিত্তিক স্কুলশিক্ষার চিত্রটাও স্পষ্ট হবে রাজ্যের কাছে। রাজ্যের সিলেবাস কমিটির চেয়ারম্যান অভীক মজুমদার বলেন, ‘‘শিক্ষা ক্ষেত্রে এটা একটা বিরাট পদক্ষেপ। শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার মান এবং ভবিষ্যতের তাদের উন্নতির প্রক্রিয়া এই স্টেট অ্যাচিভমেন্টS সার্ভের মাধ্যমে অনেকাংশেই নির্ধারিত হবে। এর মাধ্যমে আমরা দেখতে চাইছি আমাদের রাজ্যের স্কুল পড়ুয়াদের পড়াশোনা কেমন হচ্ছে।
[আরও পড়ুন: বাংলার মুকুটে নয়া পালক, স্কচ পুরস্কার জয়ী লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, নিজেই জানালেন মুখ্যমন্ত্রী]
আগামিদিনে ছাত্রছাত্রীরা যাতে আরও ভাল পড়াশোনা করতে পারে এবং তার জন্য আমরা কী কী ধরনের পদক্ষেপ নিতে পারি তা-ও উঠে আসবে এই সমীক্ষার মাধ্যমে। কোন অঞ্চলে কী ধরনের ব্যবস্থা নিতে হবে, সেগুলি দেখে নিয়ে আমরা এগোব।’’ স্কুল শিক্ষা দফতর সূত্রে খবর, পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য নির্দিষ্ট সংখ্যক স্কুল নির্বাচন করা হবে। পাহাড় থেকে সুন্দরবন,সব জায়গা থেকেই নির্বাচন করা হবে স্কুল। তৃতীয় শ্রেণির জন্য প্রতিটি জেলার প্রতিটি সার্কেল থেকে ১০টা করে এবং পঞ্চম, অষ্টম ও দশম শ্রেণির জন্য ৫টা করে স্কুল নির্বাচন করা হতে পারে। বাংলা, ইংরেজি, হিন্দি, উর্দু, নেপালি, সাঁওতালি-ছয়টা ভাষাতেই হবে পরীক্ষা। এমসিকিউ পদ্ধতিতে হবে পরীক্ষা। ওএমআর শিটে উত্তর দেবে পরীক্ষার্থীরা। সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা আয়োজনে উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করেছে স্কুল শিক্ষা দফতর। কেন্দ্রীয় সরকারের এরকমই একটি পরীক্ষা রয়েছে। প্রতি তিন বছর অন্তর দেশজুড়ে হয় ন্যাশনাল অ্যাচিভমেন্ট সার্ভের (ন্যাস) পরীক্ষাটি। শেষবার হয়েছিল ২০২১ সালের নভেম্বর মাসে। রাজ্যের ৩ হাজার ১১০টি স্কুলের ৯৮ হাজার ৬৯৪ জন ছাত্রছাত্রী অংশগ্রহণ করেছিল সর্বভারতীয় সমীক্ষা-পরীক্ষাটিতে।