সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘অভাবের সংসার!’ তবুও পঞ্চায়েত নির্বাচনের খরচ বাবদ বিপুল পরিমাণ অর্থ রাজ্য নির্বাচন কমিশনের হাতে তুলে দিল নবান্ন। আজ, শনিবার অর্থ দপ্তরের তরফে প্রথম ধাপে ১৮০ কোটি টাকা তুলে দেওয়া হয়েছে বলে খবর। রাজ্যকে চিঠি দিয়ে কমিশনের তরফে নির্বাচনের খবর বাবদ ৩৬০ কোটি টাকা চাওয়া হয়। নবান্ন সূত্রে খবর, পঞ্চায়েত নির্বাচনের মনোনয়ন জমা শেষ হওয়ার পর বাকি টাকা ধাপে ধাপে কমিশনকে দেওয়া হবে। ভোট পরিচালনার পাশাপাশি, এবার কেন্দ্রীয় বাহিনীর খরচ জোগানোর জন্যও রাজ্যের কাছে বিপুল অর্থ চাইতে পারে কমিশন। সেক্ষেত্রে রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোটের উৎসবের জন্য অর্থ দপ্তরের কোষাগার থেকে খসতে পারে কয়েক কোটি টাকা।
রাজ্যে তিন দফায় নির্বাচন চালাতে গিয়ে তিন লক্ষ সাধারণ ভোটকর্মী ও ৩৫০ পর্যবেক্ষক-সহ ৫৬ হাজার সশস্ত্র বাহিনী চেয়ে আগেই চিঠি দিয়েছিল রাজ্য নির্বাচন কমিশন। কমিশনের আর্জিকে মান্যতা দিয়ে ভোটকর্মী পাঠানোর ব্যবস্থাও করে ফেলেছে রাজ্য সরকার। শুরু হয়ে গিয়েছে ভোটের চূড়ান্ত প্রস্তুতি।
[কান্দিতে অধীরকে মিছিল করতে বাধা, প্রতিবাদে থানায় অবস্থান বিক্ষোভ কংগ্রেসের]
নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্যের দেওয়া অর্থের মধ্যে ইতিমধ্যেই রাজস্থান থেকে ৪০ হাজার ব্যালট বাক্স কেনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে গিয়েছে। বাকি অর্থ ২০টি জেলার জেলাশাসকদের কাছে প্রয়োজন অনুযায়ী পাঠানোর ব্যবস্থাও শুরু করতে চলেছে কমিশন। কেননা, পঞ্চায়েত নির্বাচন পরিচালনার জন্য ভোট কর্মীদের যাবতীয় খরচ করতে হয় নির্বাচন কমিশনকে। প্রিসাইডিং অফিসারদের ক্ষেত্রে ২৫০০ টাকা, পোলিং অফিসারদের ক্ষেত্রে হাজার ১৮০০ টাকা ও গ্রুপ ডি কর্মীদের ক্ষেত্রে ১৬০০ টাকা দেওয়ার চল রয়েছে রাজ্যে।
ভোট পরিচালনার পাশাপাশি, রাজ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে আনার বিষয়েও রাজ্য সরকারের কাছে দরবার করতে পারে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। সেক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জন্য রাজ্য সরকারকেই সেই অর্থের সংস্থান করতে হবে। রাজ্যের সশস্ত্র ৪৬ হাজার পুলিশের জন্য খরচ করতে হবে নির্বাচন কমিশনকে। এই খরচও জোগাতে হবে রাজ্যকেই।
যদিও, রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট পরিচালনার জন্য কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করার দাবি তুলছে বিরোধীরা। নির্বাচন পরিচালনার জন্য রাজ্য নির্বাচন কমিশনের কাছ থেকে হলফনামা জমা দেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। এই পরিস্থিতি দাঁড়িয়ে রাজ্য পুলিশ দিয়ে ভোট করানো নিয়ে চিন্তায় আছে কমিশন। এক্ষেত্রে কমিশন যদি কেন্দ্রীয় বাহিনী চেয়ে রাজ্যের কাছে আবেদন করে, তাহলে ভোটের মুখে রাজ্যের কোষাগার থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ বেরিয়ে যেতে পারে।
[মনোনয়ন জমাকে কেন্দ্র করে রণক্ষেত্র বর্ধমান, তৃণমূলের বাধায় পালটা মার সিপিএমের]
এমনিতেই প্রতিমাসে বিপুল পরিমাণ টাকা কেটে নিয়ে যাচ্ছে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদীর সরকার। বাম সরকারের দেনার দায় এখনও বয়ে বেরাতে হচ্ছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তার উপর রাজ্যের বকেয়া টাকা মেটাতে গড়িমসি করছে কেন্দ্র। এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে রাজ্যের হাত থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ চলে গেলে উন্নয়নের কাজ থমকে যাওয়ার আশঙ্কায় প্রকাশ করেছে রাজ্যের পর্যবেক্ষক মহলের একাংশ।
The post পঞ্চায়েত ভোটের উৎসবে রাজ্যের কোষাগার থেকে খসতে চলেছে বিপুল অর্থ appeared first on Sangbad Pratidin.