স্টাফ রিপোর্টার: পশ্চিমবঙ্গ ও তার লাগোয়া ৬টি রাজ্যের সঙ্গে হাতির করিডর (Elephant Corridor) তৈরি করবে পশ্চিমবঙ্গ (West Bengal) সরকারই। বনাঞ্চলে মানুষের সঙ্গে হাতির সংঘাত এড়াতে কেন্দ্রের কাছে বারবার বলেও কোনও সাড়া না পেয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (CM Mamata Banerjee) উদ্যোগে সেই কাজ শুরু করছে এ রাজ্যের সরকার। বৃহস্পতিবার এ নিয়ে কেন্দ্রের বন বিভাগের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠকের পর রাজ্যের এই সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছেন বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক।
ছত্তিশগড়, মধ্যপ্রদেশ, ঝাড়খণ্ড, বিহার, ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে এই করিডরের অভাবে হাতি-মানুষের সংঘাত ক্রমশ বাড়ছে। পরিসংখ্যান বলছে, হাতি-মানুষের সংঘাতে বাংলায় ২০১৯-২০ সালে ১৩৪ জন, ২০২০-২১ সালে ১১৭ জন, ২০২১-২২ সালে ৭৭ জন ও ২০২২-২৩ সালে ৫৭ জনের মৃত্যু হয়। এই অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে বঙ্গের দুই প্রান্তে দ্রুত ১১টি করিডর করতে হবে। কোথাও খেত বাঁচিয়ে, কোথাও রেললাইনের নিচ দিয়ে দুই রাজ্যের মধ্যে সংযোগকারী এই করিডরগুলি তৈরি হবে। লম্বায় যা ৫ কিলোমিটার করে। একেকটির খরচ পড়বে ২৫ কোটি টাকা।
[আরও পড়ুন: কার্টুন কাণ্ডে স্বস্তিতে অম্বিকেশ মহাপাত্র, মামলা থেকে অব্যাহতি দিল আদালত]
উত্তরবঙ্গে (North Bengal) তৈরি হবে ৭টি করিডর। এই করিডরগুলির দু’পাশে থাকবে ব্যাটারিচালিত ফেনসিং। সঙ্গে থাকবে সেন্সর ও আলোর ব্যবস্থা। হাতি ওই এলাকায় গেলেই তার সামনে তীব্র আলো ফেলে তাকে করিডরের রাস্তা দেখিয়ে দেওয়া হবে। ফেনসিং (Fencing) বাইরে বেরতে গেলেই সামান্য ভোল্টেজের তার গায়ে লাগলে সরে যাবে হাতি। রাজ্যে হাতির সঙ্গে সংঘাতে মানুষের মৃত্যু আর শস্যের ক্ষতি হলে তার ক্ষতিপূরণ আর মৃতের পরিবারের একজনকে চাকরি দেয় রাজ্য সরকার। সরকারের এই উদ্যোগ অন্য কোনও রাজ্যে নেই বলে জানিয়েছে বনদপ্তর। তাতে ২৪ ঘণ্টা মনিটরিং চলে।
[আরও পড়ুন: প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর বাঁধ নির্মাণ করছে চিন, উপগ্রহ চিত্রে চিন্তা বাড়ল দিল্লির]
এই উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন কেন্দ্রের আধিকারিকরা। বৃহস্পতিবারের বৈঠকে ছিলেন দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা-সহ কেন্দ্রের আইজি, ফরেস্ট রমেশ পাণ্ডে, রাজ্য বনদপ্তরের অতিরিক্ত মুখ্যসচিব বিবেক কুমার, মুখ্য বনপাল সৌমিত্র দাশগুপ্ত-সহ ছত্তিশগড়, মধ্যপ্রদেশ, ঝাড়খণ্ড, বিহার, ওড়িশা ও এ রাজ্যের বন সংরক্ষণ সংস্থার প্রধানরা। ইতিমধ্যে হাতির সঙ্গে ট্রেনের সংঘর্ষ রুখতে সেন্সর বসানোর কাজ শুরু হয়েছে। আশির বেশি এমন সেন্সর (Sencor) বসানো হয়ে গিয়েছে। মূলত হাতির উচ্চতা, দেহের উত্তাপ, চেহারার গড়ন পরিমাপ করে এই সেন্সরগুলি বার্তা পাঠাবে। সেই অনুযায়ী আগের স্টেশন মাস্টার ও ট্রেনের চালককে সতর্ক করে দেবেন দপ্তরের আধিকারিকরা। এর জন্য একটি নির্দিষ্ট অ্যাপ তৈরি হয়েছে। যার নিয়ন্ত্রণ থাকবে বনদপ্তর ও রেলের কর্তাদের মধ্যে।