shono
Advertisement

ইউক্রেন কাঁপাচ্ছে রাশিয়ার ‘কামিকাজে ড্রোন’, কী এই ভয়ংকর অস্ত্র?

কামিকাজে ড্রোনের হামলায় রক্তাক্ত কিয়েভ।
Posted: 10:33 AM Oct 18, 2022Updated: 10:33 AM Oct 18, 2022

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সম্প্রতি ইউক্রেনে নতুন করে হামলার প্রয়োজন নেই বলেই জানিয়েছিলেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। কিন্তু কাজাকস্তানের রাজধানী আস্তানায় তাঁর সেই কথা যে ছলনা মাত্র তা এবার প্রমাণিত। সোমবার সকালে নতুন করে ইউক্রেনের মাটিতে হামলা চালানোর অভিযোগ ওঠে রাশিয়ার বিরুদ্ধে। এবার রুশ ফৌজের হাতিয়ার ‘কামিকাজে ড্রোন’। কী এই অস্ত্র? কেনই বা এটি এত ভয়ংকর? এই প্রতিবেদনে রইল উত্তর।

Advertisement

‘কামিকাজে’ শব্দটি জাপানি। এর অর্থ হচ্ছে ‘দৈবী হওয়া’। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাপানি ফৌজের বিমানবাহিনীর একটি বিশেষ শাখাকে বলা হতো ‘কামিকাজে স্পেশ্যাল অ্যাটাক ইউনিট’। এদের কাজ ছিল শত্রুপক্ষের যুদ্ধজাহাজে আত্মঘাতী হামলা চালানো। ‘কামিকাজে’ পাইলটরা বারুদ ঠাসা প্লেন নিয়ে মার্কিন রণতরীগুলির উপর আছড়ে পড়ার চেষ্টা করতেন। এভাবে নিজের প্রাণ বিসর্জন দিয়ে প্রতিপক্ষকে ধ্বংস করার প্রয়াস করতেন তাঁরা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়, বিশেষ করে প্রশান্ত মহাসাগরে আমেরিকা ও জাপানের নৌবাহিনীর লড়াইয়ের সময় কামিকাজে হামলা করতে দেখা যায় জাপানি পাইলটদের।

[আরও পড়ুন: নিষেধাজ্ঞার মুখে ইরানের ‘নীতি পুলিশ’, রাইসি সরকারের উপর চাপ বাড়াল ইউরোপীয় ইউনিয়ন]

একইভাবে, এবার ইউক্রেনে (Ukraine) চালকবিহীন বারুদ ঠাসা কামিকাজে বা আত্মঘাতী ড্রোন দিয়ে হামলা চালাচ্ছে রাশিয়া। সোমবার ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে এমনই এক আত্মঘাতী ড্রোনের হামলায় চারজনের মৃত্যু হয়। আহত হয়েছেন অনেকেই। ইউক্রেনীয় বিমানবাহিনীর দাবি, একদিনেই তারা অন্তত ৩৭টি রুশ কামিকাজে ড্রোন ধ্বংস করেছে। এই প্রসঙ্গে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের চিফ অফ স্টাফ আন্দ্রি ইয়ারমার্ক বলেছেন, “রাশিয়া ভাবছে, এতে ওদের লাভ হবে। আসলে ওদের হতাশারই বহিঃপ্রকাশ এটা।”

কিয়েভের অভিযোগ, রাশিয়াকে এই কামিকাজে ড্রোন দিচ্ছে ইরান (Iran)। এগুলির নাম ‘শাহেদ-১৩৬’। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি দাবি করেছেন, এমন প্রায় ২ হাজার ৪০০টি ড্রোন কিনেছে মস্কো। যদিও তা দ্রুত ফুরিয়ে আসছে। বিশ্লেষকদের মতে, ক্রুজ মিসাইলের তুলনায় এই কামিকাজে ড্রোনগুলি অনেকটাই সস্তা। একটি ড্রোনের মূল্য প্রায় ২০ হাজার ডলার। কয়েকশো কিলোমিটার দূরে হামলা চালাতে সক্ষম এগুলি। সুদূর ঘাঁটি থেকে বসে এই ড্রোনের মাধ্যমে শত্রুর উপর নজর রাখা যায়। তারপর নিশানার দেখা মিললেই আকাশ থেকে বজ্রের মতো আছড়ে পরে খেল খতম করে দেয় এই অস্ত্র। ঝাঁকে হামলা করে বলে ইউক্রেনের মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেমও এগুলিকে সম্পূর্ণভাবে রুখে দিতে অক্ষম।

উল্লেখ্য, সোমবার কিয়েভে ইরানের ‘কামিকাজে ড্রোন’ দিয়ে রাশিয়া হামলা চালিয়েছে বলে দাবি করেছে ইউক্রেন। রাজধানী শহরের মধ্য শেভচেনকিভস্কে জেলায় একাধিক বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর, স্থানীয় সময় সোমবার সকাল ৬টা ৩৫ মিনিট ও ৬টা ৫৮ মিনিটের মধ্যে কিয়েভে তিনটি বিস্ফোরণ ঘটে। কিছুদিন আগেই, কিয়েভ-সহ ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরে মিসাইল হামলা চালায় রাশিয়া। দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধ শুরুর পর সেই প্রথম ব্যাপক হারে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় মস্কো। ৮৪টি মিসাইল ছোঁড়া হয় ইউক্রেনে। এর আগে রাশিয়া-ক্রাইমিয়া সংযোগকারী সেতুতে ট্রাক বিস্ফোরণ ঘটে। রাশিয়ার সন্দেহ, ইউক্রেন সরকার জড়িত রয়েছে এই কাজে। তার পর থেকেই ইউক্রেন জুড়ে রুশ হামলা বেড়েছে।

[আরও পড়ুন: কমিউনিস্ট পার্টির কংগ্রেসে গালওয়ান সংঘর্ষের ভিডিও, আস্ফালন জিনপিংয়ের]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement