shono
Advertisement

কো-মর্বিডিটি থাকায় করোনা আক্রান্ত সৌরভের চিকিৎসায় ককটেল অ্যান্টিবডি, কী এই পদ্ধতি?

ককটেল অ্যান্টিবডি সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা দিলেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ।
Posted: 05:43 PM Dec 29, 2021Updated: 01:59 PM Dec 30, 2021

গৌতম ব্রহ্ম: প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট এবং ভারতীয় ক্রিকেট দলের প্রাক্তন অধিনায়ক। অতিমারীর চোখরাঙানিতে দু’জনের নামই এখন উচ্চারিত হচ্ছে এক নিশ্বাসে। দু’জনের শরীরেই থাবা বসায় কোভিড (COVID-19)। প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আগেই করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন। আর প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের শরীরে যে করোনা বাসা বেঁধেছে, তা জানা গিয়েছে গতকাল সকালেই। ট্রাম্পকে সুস্থ করে তুলতে যে চিকিৎসা পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয়েছিল, সৌরভের ক্ষেত্রেও সেই একই পদ্ধতি অনুসরণ করা হচ্ছে। আর সেই পদ্ধতি হল, ককটেল অ্যান্টিবডি থেরাপি (Cocktail Antibody Therapy)। এখানেই আর পাঁচজনের থেকে আলাদা হয়ে যাচ্ছেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। মহার্ঘ ককটেল অ্যান্টিবডি থেরাপি তো সকলের জন্য নয়। শুধু কি বিসিসিআই প্রেসিডেন্ট বলেই সৌরভের জন্য এই ‘স্পেশ্যাল ট্রিটমেন্ট’? বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা অবশ্য জানাচ্ছেন অন্য কথা।

Advertisement

করোনা আক্রান্ত সৌরভের চিকিৎসা পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে হলে সবার আগে বুঝতে হবে, এই ককটেল অ্যান্টিবডি থেরাপি কী? জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডাক্তার অনির্বাণ দলুই খুব সহজভাবে তা বুঝিয়ে দিয়েছেন। ককটেল অ্যান্টিবডি থেরাপি তথা মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি (Monoclonal Antibody) আসলে একটি নির্দিষ্ট অ্যান্টিজেনকে নিয়ে তার প্রতিরোধী অ্যান্টিবডি তৈরি করার পদ্ধতি। মনো অর্থাৎ একক অর্থাৎ বিশেষ একটি অ্যান্টিজেন (Antigen) নিয়ে অ্যান্টিবডি তৈরির নামই মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি। আর একাধিক অ্যান্টিবডি মিলে তৈরি হল ককটেল অ্যান্টিবডি। এই গোটা পদ্ধতি কোনও রোগীর শরীরে প্রয়োগ করা হলে তা ককটেল অ্যান্টিবডি থেরাপি। সহজভাবে, কোভিড জীবাণুর বা অ্যান্টিজেনটির বিরুদ্ধে বাইরে থেকে দেওয়া কোনও অ্যান্টিবডি শরীরকে ধীরে ধীরে সুস্থ করে তোলে। এক্ষেত্রে বিশেষ ভাবে কৃত্রিম উপায়ে তৈরি হওয়া অ্যান্টিবডির মিশ্রণ যা ভাইরাসের spike প্রোটিনের বিরুদ্ধে কাজ করে ভাইরাসটিকে নিষ্ক্রিয় করে দেয়। তাতে গুরুতর রোগের সম্ভাবনা কমে যায়। 

[আরও পড়ুন: কোভিড পরবর্তী নানা উপসর্গে ভুগছেন? সুস্থ থাকতে জেনে নিন বিশেষজ্ঞর পরামর্শ]

কিন্তু যে কোনও করোনা রোগীর ক্ষেত্রে কি মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি বা ককটেল অ্যান্টিবডি থেরাপি প্রয়োগ করা হয়? এর উত্তরও দিলেন ডাক্তার অনির্বাণ দলুই। তাঁর কথায়, ”মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি ককটেল সাধারণত যারা হাই রিস্ক রোগী যেমন ডায়াবেটিস, স্থূলতাজনিত জটিলতায় ভুগছেন, ৬৫ বছরের বেশি বয়স্ক, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ রয়েছে, তাঁদের ক্ষেত্রে বেশি করে প্রযোজ্য। অন্যদের ক্ষেত্রে ব্যবহারের দরকার পড়ে না।”  সৌরভের কোমর্বিডিটি রয়েছে। হৃদরোগের সমস্যা আছে। তাঁর হৃদযন্ত্রে তিনটি স্টেন্ট বসানো হয়েছে। ফলে করোনা আক্রান্ত হওয়ায় তাঁকে সুস্থ করে তুলতে বিশেষ যত্ন প্রয়োজন। আর সেই কারণেই ককটেল অ্যান্টিবডি প্রয়োগ করা হয়েছে।

[আরও পড়ুন: না ফুটিয়ে গরুর দুধ খাচ্ছেন, নিজের বিপদ নিজে ডেকে আনছেন না তো?]

কত দাম এই ককটেল অ্যান্টিবডির? বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, একেকটি ভায়ালের দাম ৫০ হাজার টাকা বা তার বেশি। একটি ভায়াল থেকে দু’জনের শরীরে এই অ্যান্টিবডি প্রয়োগ করা যায়। অর্থাৎ একেকজনের জন্য খরচ প্রায় ২৫ হাজার টাকা। করোনা কালে বেশিরভাগ সরকারি হাসপাতালেই এই অ্যান্টিবডি মজুত রাখা হয়েছে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement