সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পেগাসাস (Pegasus) কাণ্ডে সরগরম জাতীয় রাজনীতি। বাদল অধিবেশনের শুরুতেই ইজরায়েলী স্পাইওয়্যার পেগাসাসের মাধ্যমে ফোন ট্যাপিংয়ের অভিযোগে সরকারকে ঘিরে ফেলেছে বিরোধীরা। সরকার ও বিরোধী পক্ষের নেতা-মন্ত্রী থেকে শুরু করে সাংবাদিক, শিল্পপতি, সমাজকর্মী, বিচারপতিদের ফোন হ্যাক করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠছে।
কী এই প্রজেক্ট পেগাসাস?
২০১৯ সাল থেকে বিশ্বের ১৬টি সংবাদমাধ্যম মিলে ‘পেগাসাস প্রোজেক্ট’ নামে একটি তদন্ত শুরু করে। রবিবার সেই রিপোর্টের কিছু অংশ সামনে এসেছে। তারপরই ভারত-সহ বিশ্বজুড়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। অভিযোগ, পেগাসাস (Pegasus Project) আড়ি পাতছে দেশের সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের ফোনে। পাশাপাশি, আড়ি পাতা হচ্ছে মোদির মন্ত্রিসভার সদস্যদের ফোনে এবং আরএসএস নেতাদের ফোনেও। শুধু বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ নন, দেশের একাধিক সাংবাদিক, বিরোধী নেতা-নেত্রী, ব্যবসায়ীদের ফোনে এই সফটওয়্যারের মাধ্যমে আড়ি পাতা হয়েছে।
এবার জেনে নেওয়া যাক পেগাসাস স্পাইওয়্যার কী এবং কীভাবে কাজ করে?
পেগাসাস হচ্ছে ইজরায়েলী সংস্থা ‘NSO Group’-এর তৈরি একটি সফটওয়্যার। এর মাধ্যমে ফোনে আড়ি পাতা যায় বা ফোন হ্যাক করা যায়। ফলে যে স্মার্টফোনটিকে নিশানা করা হয়েছে সেটির ভয়েস কল ও হোয়াটসঅ্যাপ ডেটা-সহ সমস্ত তথ্য হামলাকারীর হাতে চলে যায়। এই কাজটি এতটাই গোপনে হয় যে ফোনটির ব্যবহারকারী আক্রান্ত হওয়ার কথা জানতেই পারেন না। ফলে তাঁর অজান্তেই গোপন কথাবার্তা, তথ্য সমস্ত কিছু ফাঁস হয়ে যায়। বিশেষ করে, রাজনীতিবিদ, শিল্পপতি, সাংবাদিক ও কুটনীতিবিদের এই স্পাইওয়্যারের মাধ্যমে নিশানা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, স্মার্টফোনে একটি লিংক পাঠায় হ্যাকার। সেটিতে ক্লিক করলে আপনা থেকেই ফোনে পেগাসাস ইনস্টল হয়ে যায়। তারপর শুরু হয় আসল খেল। ওই ফোনের নিয়ন্ত্রণ চলে যায় হ্যাকারদের হাতে। তারপরই ফাঁস হয়ে যায় গোপন তথ্য। ফলে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, সন্দেহজনক লিংক ক্লিক করা বা অজানা ওয়েবসাইটে ব্যক্তিগত তথ্য দেওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
এই ঘটনায় ইজরায়েলের দিকে আঙুল উঠলেও আসলে দেশটির ভূমিকা কী?
ইজরায়েলি সংস্থা ‘NSO Group’-এর দাবি, নিরাপত্তার জন্য নজরদারি চালানোর প্রযুক্তি তৈরি করাই তাদের কাজ। তারা শুধুমাত্র বিভিন্ন দেশের সরকার, সরকারি নিরাপত্তা সংস্থা ও গোয়েন্দা সংস্থাকে পেগাসাস স্পাইওয়্যার বিক্রি করেছে। তবে তারা কাউকে নিশানা করেনি। এদিকে সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। এক বিবৃতিতে কেন্দ্র সাফ জানিয়েছে ভারতীয় গণতন্ত্র অত্যন্ত শক্তিশালী সেখানে ব্যক্তিগত পরিসরে এহেন বেআইনি নজরদারির ঘটনা ঘটেনি, এই অভিযোগ তথ্য নির্ভর নয়।