সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কথায় আছে, বারো মাসে তেরো পার্বণ। তার মধ্যে অম্বুবাচী (Ambubachi) ও হিন্দুধর্মের এক অতি প্রাচীন পার্বণ। এই পবিত্র তিথিতে হিন্দু (Hindu) ধর্মাবলম্বীরা শাস্ত্র মেনে বিশেষ আচার পালন করে থাকেন। চলতি বছর ২২ জুন, মঙ্গলবার সকাল ৫ টা ৩৯ মিনিট থেকে শুরু হয়েছে অম্বুবাচী তিথি। তিনদিন পর শুক্রবার অর্থাৎ ২৫ জুন তা শেষ হচ্ছে।
লৌকিক মতে, ধরিত্রী মাতা বছরের তিনদিন ঋতুমতী হন। সেই সময়টাই অম্বুবাচী। এর অবশ্য একটি ধর্মীয় দিকও রয়েছে। নারীশক্তির প্রতিভূ দেবী দুর্গারও ঋতুমতী হওয়ার সময় এটাই। এই সময়ে বিখ্যাত হিন্দু মন্দির অসমের কামাক্ষ্যা মন্দির (Kamahya Temple) বন্ধ রাখা হয়। শাস্ত্রমতে, শিবের তাণ্ডবলীলায় খণ্ডিত দেবীর ১০৮ শরীরের অংশের মধ্যে যোনিদেশ পতিত হয়েছিল অসমের (Assam) এই পাহাড়ি অঞ্চলে। এখানেই তৈরি হয়েছে কামাক্ষ্যা মন্দির। তাই দেবীর এই বিশেষ কালে মন্দির বন্ধ রেখে, তাঁর অদর্শনে পুজো দেওয়াই রীতি। করোনা আবহে অবশ্য মন্দিরের পাশাপাশি এ বছর মেলাও বন্ধ।
[আরও পড়ুন: Corona Virus: সৌদির সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত, এ বছর হজে যেতে পারবেন না ভারতীয়রা]
অম্বুবাচীর তিনদিন কোনও মাঙ্গলিক এবং শুভকাজ করা শাস্ত্রমতে সমর্থিত নয়। যেমন – বিবাহ, উপনয়ন, অন্নপ্রাশন, গৃহপ্রবেশ করা যায় না। এছাড়াও সংসারের কল্যাণের কথা মাথায় রেখে দৈনন্দিন কিছু কাজও বাদ থাকে এই তিনদিন। সেগুলি ঠিক কী কী জেনে নেওয়া যাক –
১) আদি শক্তির বিভিন্ন রূপ যেমন – কালী, দুর্গা(Durga), জগদ্ধাত্রী(Jagaddhatri), বিপত্তারিণী, শীতলা, চণ্ডীর মূর্তি বা পট এই সময়ে লাল কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখা নিয়ম। দেবী মন্দিরগুলিতে তাই রাখা হয়। এছাড়া গৃহপুজোও বন্ধ থাকে। সিংহাসন, দেবীর ছবি ঢেকে রাখা হয়।
২) হিন্দু শাস্ত্র মতে, এই সময়ে অন্য কোনও বিশেষ পুজোর আয়োজন না করাই ভাল। তবে, কোনও কোনও বছর এই সময়ে রথযাত্রা উৎসব পড়লে, তা নির্দিষ্ট নিয়ম মেনেই করা যেতে পারে। কারণ, রথযাত্রাকে নিত্যকর্ম হিসাবেই ধরা হয়।
৩) যেহেতু এই সময়ে ধরিত্রীকে আঘাত করতে নেই এই সময়ে চাষের কাজও করা উচিত নয়।
৪) যাঁরা শাস্ত্রমন্ত্রে দীক্ষিত, তাঁরা সেই মন্ত্র জপ করতে পারেন। অম্বুবাচীতে গুরুবন্দনা করা যেতে পারে।
[আরও পড়ুন:ভক্তদের জন্য কবে খুলতে পারে পুরীর মন্দির? কী বলছে কর্তৃপক্ষ?]
শাস্ত্র বলে, ধরিত্রী তথা নারীর এই বিশেষ সময়টি অতি পবিত্র। অম্বুবাচীর পর কামাক্ষ্য়া মন্দিরের দুয়ার খুললে পবিত্র লাল শালুর অংশ সংগ্রহ করতে হুড়োহুড়ি পড়ে যায় ভক্তদের মধ্যে। তবে অম্বুবাচী তিথি যতই পবিত্র হোক, হিন্দু শাস্ত্র বলছে, এই সময়ে পবিত্র কাজ করা যায় না।