সুকুমার সরকার, ঢাকা: বাংলাদেশের (Bangladesh) ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে ফের উদ্বেগ প্রকাশ করল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)। সংস্থাটি বলছে, বাংলাদেশে ডেঙ্গুর ব্যাপক প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। গত বুধবার WHO’র মহাপরিচালক টেডরোজ আধানম ঘেব্রিয়েসুস সাংবাদিক সম্মেলন করে উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন। ঘেব্রিয়েসুস আরও জানান, গত এপ্রিলে বাংলাদেশে ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়ে। এরপর থেকে এ পর্যন্ত ১ লক্ষ ৩৫ হাজার ডেঙ্গু (Dengue) আক্রান্ত রোগী পাওয়া গেছে। আর মারা গিয়েছেন ৬৫০ জন। এর মধ্যে শুধু আগস্টেই মৃত্যু হয়েছে ৩০০ জনের বেশি। এই প্রাদুর্ভাব বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উপর ব্যাপক চাপ ফেলেছে। ঘেব্রিয়েসুস বলেন, সম্প্রতি রাজধানী ঢাকায় (Dhaka) ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা কমে আসছে। তবে দেশের অন্যান্য অঞ্চলে এ রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।
এদিকে, বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় (বুধবার সকাল আটটা থেকে বৃহস্পতিবার সকাল আটটা পর্যন্ত) দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে আরও ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে ডেঙ্গুতে ৯৮ জনের মৃত্যু হল।
[আরও পড়ুন: বিপদের বন্ধু! হিমাচলের প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে ১ কোটি টাকা সাহায্য দিল রাজ্য সরকার]
এদিকে, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ-সহ শহর এলাকায় প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিষেবা ব্যবস্থার উন্নয়নে বাংলাদেশের জন্য ২০ কোটি ডলার ঋণ অনুমোদন করেছে বিশ্ব ব্যাংক (World Bank)। প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার পাশাপাশি চিকিৎসা বর্জ্য ব্যবস্থাপনায়ও এই অর্থ ব্যবহৃত হবে। বিশ্ব ব্যাংকের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এই ‘আরবান হেলথ, নিউট্রিশন ও পপুলেশন প্রজেক্ট’ শহরাঞ্চলে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার নেটওয়ার্ক গড়ে তুলবে। এই অর্থ শুধু ডেঙ্গু প্রতিরোধ নয়, শহরের অন্যান্য নাগরিক স্বাস্থ্যসেবা উন্নত করার কাজেও খরচ করা হবে। যেমন শহরের বস্তি এলাকার নাগরিকদের পুষ্টিমান উন্নয়নেও কর্মসূচি নেওয়া হবে।
[আরও পড়ুন: রক্ষকই ভক্ষক! খাস কলকাতার হোমে টানা ১০ বছর ধরে লাগাতার ‘ধর্ষণ’ দুই নাবালিকাকে]
এছাড়া এই প্রকল্পের আওতায় জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে থাকবে নানা কার্যক্রম। সেই সঙ্গে সরাসরি চিকিৎসা পরিষেবাও মিলবে এসব স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে। শহরাঞ্চলের পাঁচ বছরের কমবয়সি ২৫ লক্ষ শিশু এসব কেন্দ্র থেকে সেবা পাবে। বিশ্ব ব্যাংকের ভুটান (Bhutan) ও বাংলাদেশ অঞ্চলের প্রধান আবদুল্লায়ে শেখ বলেছেন, ‘‘স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়নে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য অর্জন আছে, বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে। কিন্তু শহরাঞ্চলে স্বাস্থ্যসেবা-সুবিধা অপ্রতুল। সে কারণে দরিদ্র মানুষ ও বস্তিবাসীরা অনেক সময় বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবাকেন্দ্র থেকে বিপুল অর্থের বিনিময়ে স্বাস্থ্যসেবা নিতে বাধ্য হন।” তিনি আরও বলেন, ‘‘এছাড়া শহরে জনঘনত্ব বৃদ্ধির কারণে বা জলবায়ু পরিবর্তন ও দ্রুত নগরায়ণের কারণে নতুন নতুন স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে, যেমন ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ছে। সেইসঙ্গে বাড়ছে বিভিন্ন সংক্রামক ও সংক্রামক নয়, এমন রোগের প্রকোপ।’’