সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এত ভারতীয় পড়তে যান বাংলাদেশে! কোটা আন্দোলন এই সত্য সামনে এনেছে। অনেকেই অবাক হচ্ছেন দেখে, ইতিমধ্যে সাড়ে চার হাজার পড়ুয়া অশান্ত বাংলাদেশ থেকে ভারতে ফিরেছেন। বাকিদেরও ফেরাতে ব্যবস্থা নিচ্ছে দিল্লির দূতাবাস। আরও এক বিষয় স্পষ্ট হয়েছে, এই ছাত্রদের সিংহভাগই বাঙালি। বাকিরা বিহার কিংবা ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দারা। এছাড়াও রয়েছেন নেপাল, ভুটান, মায়ানমারের পড়ুয়ারাও। প্রশ্ন হল, কী বিষয়ে পড়তে যান এই পড়ুয়ারা? বাংলাদেশেই কেন যান?
বাংলাদেশ থেকে যাঁরা ফিরে আসছেন তাঁদের বেশির ভাগই এমবিবিএস পড়তে যান। প্রশ্ন হল, ডাক্তারি পড়তে বাংলাদেশে কেন? প্রথম কারণ, ভারতে সরকারি মেডিক্যাল কলেজে ভর্তির পরীক্ষায় কৃতকার্য না হওয়া। অন্যদিকে বেসরকারি কলেজে পড়ার মতো সামর্থ্য নেই। সদ্য বাংলাদেশ থেকে ফেরা মেদিনীপুরের খড়গপুরের বাসিন্দা সৌম্যদীপ চক্রবর্তী জানান, ভারতে যে কোনও বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হতে গেলে ৮০ লক্ষ টাকা দরকার। কোথাও কোথাও এক কোটি টাকাও লাগে।
[আরও পড়ুন: সেনাপ্রধানের সফর শেষে রক্তাক্ত ভূস্বর্গ, পরপর দুদিন সেনাকে লক্ষ্য করে জঙ্গি হামলা]
চিকিৎসক হওয়ার আকাঙ্খা আছে, যদিও এই পরিমাণ অর্থ যোগান দেওয়ার সামর্থ নেই সৌম্যদ্বীপের পরিবারের। সেই কারণেই বাজিতপুরের জরুল ইসলাম মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হন তিনি। প্রায় এক বক্তব্য বীরভূমের নলহাটির মেয়ে তমন্না পরভিনেরও। কুমিল্লার ময়নামতী মেডিক্যাল কলেজের এই ছাত্রী জানান, ভারতে বেসরকারি কলেজে এক কোটি পাঁচ লক্ষ টাকা চায়। অনেক কম খরচে বাংলাদেশের কলেজে ভর্তি হয়েছেন। এছাড়াও এরাজ্যের বাসিন্দারা বাংলাদেশে ভাষার সুবিধা পান। খাওয়াদাওয়া নিয়েও সমস্যা হয় না। সবচেয়ে বড় কথা, ছুটির সময় বাড়িতে আসা-যাওয়ার খরচও একেবারে কম।
[আরও পড়ুন: জম্মুতে ঘাঁটি গেড়েছে অত্যাধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত ৪০ পাক জঙ্গি! সতর্ক সেনা]
প্রসঙ্গত, বিদেশ থেকে এমবিবিএস পাশ করে এলেই ভারতে চিকিৎসক হওয়ার ছাড়পত্র মেলে না। তার জন্য ভারতীয় মেডিক্যাল কাউন্সিলের ‘ফরেন মেডিক্যাল গ্র্যাজুয়েট এগজামিনেশন’ (FMGE) পাশ করতে হয়। অনেকেই সেই কঠিন পরীক্ষায় পাশ করতে পারেন না। তবুও ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন বিদেশে টেনে নিয়ে যায় মেধা আর অর্থবলে পাল্লা দিতে না-পারাদের। এই কারণেই ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে দলে দলে যে পড়ুয়ারা ইউক্রেন থেকে ভারতে ফিরে আসেন। অনেকে ভেবেছিলেন ভারতে কোর্স শেষ করবেন। কিন্তু তা সম্ভব হয়নি। ইতিমধ্যেই সেই পড়ুয়াদের বড় অংশ ফিরে গিয়েছেন যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনে।