সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বাস্তুশাপ?
শুনতে খুব অবাক লাগলেও সেটাই বলে থাকেন সবাই! তাঁরা কেউই কিন্তু কুসংস্কারগ্রস্ত সাধারণ মানুষের তালিকায় পড়েন না। সবাই কেউকেটা। দেশের রাজনীতির দায়ভার ন্যস্ত তাঁদের হাতেই।
তা, কী কারণে মন্ত্রিমহলে উত্তর দিল্লির ৩৩, শ্যামনাথ মার্গের বাংলো নিয়ে এরকম অনীহা?
মিছিল দিয়ে চলা উদাহরণ বলছে, এই বাংলোয় যে মন্ত্রীই থাকুন না কেন, মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই তাঁকে মন্ত্রিত্ব ছাড়তে হয়। হয় তাঁর আকস্মিক মৃত্যু ঘটে! নয় তো তাঁরা জড়িয়ে পড়েন কোনও না কোনও এমন বিতর্কে, যার জেরে গদি না ছেড়ে উপায় থাকে না।
Advertisement
যেমন, দিল্লির প্রথম মু্খ্যমন্ত্রী চৌধুরি ব্রহ্ম প্রকাশ ১৯৫২ সালে এই বাংলোতে এসে ওঠেন। কিন্তু, মেয়াদ ফুরিয়ে যাওয়ার আগেই তাঁকে গদি ছাড়তে হয়। একই ঘটনা ঘটে ১৯৯৩ সালের মুখ্যমন্ত্রী মদন লাল খুরানার সঙ্গে। অভিশপ্ত এই বাংলোতে বাস করে গদি হারান আরও এক মন্ত্রি চৌধুরি মাঙ্গে রাম।
সব চেয়ে খারাপ ঘটনা ঘটে ২০০৩-এ। এই বাংলোতেই আচমকা একদিন অসুস্থ হয়ে পড়েন শিল্পমন্ত্রী দীপ চাঁদ বন্ধু। আক্ষেপের বিষয়, শেষ শয্যা থেকে আর ওঠেননি মন্ত্রী। তিনি এই বাংলোতেই শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।
তার পর থেকেই নিদারুণ এক আতঙ্ক গ্রাস করে মন্ত্রিমহলকে। দীপ চাঁদ বন্ধুর মৃত্যুর পরে তা বেশ স্পষ্ট ভাবে নজরে আসে। যখন মুখ্যমন্ত্রী সাহিব সিং ভার্মাকে এই বাংলোটা থাকার জন্য দেওয়া হয়, তিনি সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন। তাঁর দৃষ্টান্তেই সম্ভবত অনুপ্রাণিত হন অন্যান্যরা! ফলে, ২০০৩ সালের পর থেকে অনেকগুলো বছর ফাঁকা পড়ে থাকে ৩৩, শ্যামনাথ মার্গের বাংলো বাড়ি।
তবে, কেরিয়ারের ক্ষতি ছাড়া কোনও মন্ত্রী কোনও দিন এই বাংলোয় ভৌতিক উপদ্রবের মুখে পড়েছেন- এমনটা কিন্তু শোনা যায়নি। বসবাসের জন্যও খুব সুন্দর ভাবেই তৈরি বাংলোটি। চারটি শোওয়ার ঘর, একটি বিশাল বসা এবং খাওয়ার ঘর, চাকর-বাকরদের থাকার জন্য সাতটি ঘর, দুটি গ্যারাজ, একটা গুদামঘর- নিঃসন্দেহে বিলাসিতার অপর নাম! এমনকী, নিরাপত্তারক্ষীদের ঘরটিও বেশ প্রশস্ত, আলো-হাওয়াযুক্ত। কিন্তু, হলে কী হবে! অভিশাপের ভয়ে প্রায় সবাই এই বাংলোয় থাকতে নারাজ!
কর্মজীবনে ঝুঁকি নিতে কে-ই বা চান!