সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: পুরবোর্ড গঠনের দিন পুলিশকর্মীরা পুরভবনের দরজায় ঢুকতে বাধা দিয়ে শ্লীলতাহানি করেন, জেলা পুলিশ সুপারের কাছে এমনই অভিযোগ করলেন ঝালদার (Jhalda) কংগ্রেস কাউন্সিলর পূর্ণিমা কান্দু। গত শুক্রবার পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার এস. সেলভামুরুগনের কাছে ইমেল পাঠিয়ে এই অভিযোগ করেন পুরুলিয়ার ঝালদা পুরসভার দু’নম্বর ওয়ার্ডের নিহত কংগ্রেস (Councilor) কাউন্সিলর তপন কান্দুর স্ত্রী তথা কাউন্সিলর পূর্ণিমা কান্দু। পূর্ণিমা দেবী ঝালদা পুরসভার ১২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। ওই অভিযোগপত্রে পুরুলিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অভিযান) চিন্ময় মিত্তালকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন তিনি। পুরুলিয়ার (Purulia)পুলিশ সুপার এস. সেলভামুরুগন বলেন, ”বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
পুলিশ সুপারকে লেখা অভিযোগপত্রে পূর্ণিমাদেবী জানান, ৫ এপ্রিল পুরবোর্ড গঠনের দিন তিনি শপথ গ্রহণ করতে ঝালদা পুরভবনে যাচ্ছিলেন। এটা তার গণতান্ত্রিক অধিকার। কিন্তু পুলিশকর্মীরা তাঁকে পুরভবনের দরজায় ঢুকতে বাধা দেন। শুধু হেনস্থা নয়, তাঁকে শ্লীলতাহানি করা হয়। ভিডিও ক্লিপ দেখলেই তা যে পরিষ্কার সে কথা উল্লেখ করেছেন তিনি। এই ঘটনায় সেইসময় সক্রিয় ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার।
[আরও পড়ুন: সিভিক ভলান্টিয়ার ও তাঁর বন্ধুকে গলা কেটে গুলি করে খুন, চাঞ্চল্য মগরাহাটে]
ওই দিন পূর্ণিমা দেবী-সহ কংগ্রেসের একাধিক কাউন্সিলর নিহত কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দুর বাড়ি থেকে মিছিল করে পুরভবনের দিকে যাচ্ছিলেন। ওই মিছিলে ছিলেন পুরুলিয়া জেলা কংগ্রেস সভাপতি তথা প্রাক্তন বিধায়ক নেপাল মাহাতোও। পুরবোর্ড গঠনের দিন পুরভবনের সামনে কংগ্রেস ‘কালা দিবস’ কর্মসূচি নিয়েছিল। কিন্তু পুলিশ পুরভবনের সামনে ১৪৪ ধারা জারি করায় বাসস্ট্যান্ডে ঢোকার মুখেই ওই মিছিল পুলিশ আটকে দেয় বলে অভিযোগ। এই সময় পুলিশের সঙ্গে কংগ্রেস নেতা-কর্মী, কাউন্সিলরদের মধ্যে বচসা বাঁধে। বচসা থেকে হাতাহাতি শুরু হয়। পূর্ণিমা দেবী ঠিক সেই সময় পুরভবনে ঢুকতে গেলে তাঁকে বাধা দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে ৬ এপ্রিল ঝালদা পুর শহরে ১২ ঘণ্টা বন্ধ ডেকে প্রতিবাদ করেছিল পুরুলিয়া জেলা কংগ্রেস। এবার সেই ঘটনায় সরাসরি অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের বিরুদ্ধেই শ্লীলতাহানির অভিযোগ তুললেন পূর্ণিমা দেবী।
এদিকে, সিবিআই তদন্তের কাজ এগোচ্ছে গতিতেই। খুনের ঘটনার আগে ঝালদা থানার আইসি সঞ্জীব ঘোষের তিনটি ফোনের কলের বিস্তারিত নিল সিবিআই। সেইসঙ্গে পুলিশের মোবাইল টহলদারি ভ্যানে থাকা লেডি সাব-ইন্সপেক্টর অনিমা অধিকারী, কর্তব্যরত স্পেশ্যাল হোমগার্ড, এনভিএফ ও গাড়ির চালক তথা সিভিক ভলান্টিয়ারের কল ডিটেলস নেওয়া হয়েছে। আইসির সঙ্গে কল ডিটেলস তাদের মিলিয়ে দেখা হচ্ছে। কল ডিটেইলস নেওয়া হয়েছে সিপিএম নেতা উজ্জ্বল চট্টরাজের। তাঁর সঙ্গে আইসির কল ডিটেলস দেখা হচ্ছে । কল ডিটেইলস নেওয়া হলো নিহতের স্ত্রী পূর্ণিমা কান্দু ও ভাইপো মিঠুন কান্দুরও।
[আরও পড়ুন: কানাডায় খুন ভারতীয় পড়ুয়া, শোকপ্রকাশ বিদেশমন্ত্রী জয়শংকরের]
এদিকে পুরুলিয়া জেলা পুলিশের কাছ থেকে খুনের ঘটনার দিন ঝালদা পুর শহরের ৩৬ টি সিসিটিভির অধিকাংশ ফুটেজই সিবিআই হাতে পেয়েছে। তার মধ্যে কিছু গুরুত্বপূর্ণ জায়গার ভিডিও ফুটেজ যেখান থেকে সিট দাবি করেছিল, ধৃত কলেবর সিংকে দেখা গিয়েছে। এইসব ফুটেজ শুক্রবার থেকে সিবিআইয়ের টেকনিক্যাল টিম কপি করছে। কিন্তু সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন রাত ন’টা পর্যন্ত ওই সিসিটিভি ফুটেজগুলো থেকে কলেবরের ছবি মেলেনি।