ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: করোনা পরবর্তী শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন দীর্ঘদিন ধরে। কলকাতা থেকে চেন্নাই নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেখানকার চিকিৎসকদের সমস্ত প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে মঙ্গলবার সকালে চেন্নাইয়ের হাসপাতালে প্রয়াত হলেন মুকুল রায়ের (Mukul Roy) স্ত্রী কৃষ্ণা রায়। ফুসফুসের সমস্যা ছিল তাঁর। তা প্রতিস্থাপনের জন্য দক্ষিণের চিকিৎসকদের শরণাপন্ন হয়েছিলেন মুকুল রায়, শুভ্রাংশু রায়রা। কিন্তু শেষরক্ষা হল না।
মে মাসেই মুকুল রায়ের শরীরে করোনা (Coronavirus) উপসর্গ দেখা দেয়। জানা যায়, তাঁর স্ত্রী কৃষ্ণাদেবীও করোনায় আক্রান্ত। মুকুলবাবু চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে বাড়িতেই ছিলেন। তবে তাঁর স্ত্রী কৃষ্ণা রায়ের শারীরিক অবস্থা মোটেও ভাল ছিল না। তাই তাঁকে শহরের এক বেসরকারি হাসপাতালে ভরতি করা হয়। তাতেও বিশেষ শারীরিক উন্নতি হয়নি। একমো (ECMO) সাপোর্টেই ছিলেন তিনি। ফুসফুস প্রতিস্থাপন করার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। সেই অনুযায়ী অঙ্গদাতার খোঁজ চলছিল। অঙ্গদাতার খোঁজ মিললেই কৃষ্ণা রায়কে নিয়ে গত ১৭ জুন এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সে করে নিয়ে যাওয়া হয় চেন্নাই। মায়ের সঙ্গে গিয়েছিলেন বীজপুরের প্রাক্তন বিধায়ক শুভ্রাংশুও। কিন্তু সুস্থ করে তাঁকে আর বাড়ি ফেরানো গেল না। মাতৃহারা হলেন শুভ্রাংশু।
[আরও পড়ুন: মন্ত্রিসভার রদবদল নিয়ে জল্পনার মধ্যেই শীর্ষস্থানীয় মন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক বাতিল করলেন মোদি]
কৃষ্ণাদেবীর অসুস্থতা যদিও রাজনৈতিক বিভেদ ভুলিয়ে কাছাকাছি এনেছিল মুকুল-শুভ্রাংশুদের একদা প্রাক্তন দল তৃণমূল নেতাদের। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে হাসপাতালে তাঁকে দেখতে গিয়ে শুভ্রাংশুর পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছিলেন। সৌজন্যের এক নয়া নজির তৈরি হয়েছিল। এরপর ঘটনা পরম্পরায় সপুত্র মুকুল রায় বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে ফেরেন এবং তারপরই কৃষ্ণাদেবীকে চিকিৎসার জন্য চেন্নাই নিয়ে যাওয়ার উদ্যোগ। তাঁর ফুসফুসের অবস্থা ক্রমাগত জটিল হতে থাকায় প্রতিস্থাপনের জন্যই চেন্নাই যাওয়া। কিন্তু তাতেও লাভ হল না। জীবনে ফিরতে পারলেন না কৃষ্ণা রায়। খবর শোনার পর মুকুল রায় ও শুভ্রাংশুর প্রতি সমবেদনা জানিয়েছে তৃণমূল নেতৃত্ব। কীভাবে কৃষ্ণাদেবীর দেহ কলকাতায় ফেরানো হবে, তা এখনও জানা যায়নি।