shono
Advertisement

গড়পঞ্চকোট পাহাড়ের আগুন ছড়াল ‘হীরক রাজার দেশে’, জ্বলছে পুরুলিয়ার জয়চণ্ডী পাহাড়ও

আগুন নেভানো নিয়ে দুই বনাঞ্চেলের কর্তৃপক্ষের মধ্য়ে টানাপোড়েন।
Posted: 01:09 PM Mar 28, 2022Updated: 04:56 PM Mar 28, 2022

সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: টানা পাঁচদিন ধরে দাবানলে পুড়ছে পুরুলিয়ার (Purulia) গড়পঞ্চকোট পাহাড়। তার মধ্যেই ‘হীরক রাজার দেশ’ জয়চণ্ডী পাহাড়ে (Jaychandi Hill) রবিবার সন্ধে সাড়ে ছ’টা নাগাদ আগুন জ্বলতে দেখেন স্থানীয় মানুষজন। ধিকধিকে আগুন মুহূর্তেই দাউদাউ করে ছড়াতে থাকে। রঘুনাথপুর বনাঞ্চল কর্তৃপক্ষ ফায়ার ব্লোয়ার নিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করলেও রাত সাড়ে ন’টা নাগাদ সেই যন্ত্রাংশে পেট্রোল-মোবিল শেষ হয়ে যায়। তাই বন্ধ হয়ে যায় আগুন নেভানোর কাজ। ফলে ১২ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে জ্বলছে এই পাহাড়ের জঙ্গল। দুপুর গড়িয়ে গেলেও নেভেনি আগুন।

Advertisement

ছবি: অমিতলাল সিং দেও।

সোমবার সকাল থেকেই জয়চণ্ডী পাহাড়ের আগুন (Wild fire)নেভানো নিয়ে টানাপোড়েন শুরু হয়। এই জয়চণ্ডী পাহাড় এলাকা রঘুনাথপুর এক নম্বর ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তরের অধীনে। ফলে এই আগুন নেভাতে অনীহা কংসাবতী উত্তর বনবিভাগের অধীনে থাকা রঘুনাথপুর বনাঞ্চল কর্তৃপক্ষের। প্রশাসনের তরফে বারবার অনুরোধ করা হলেও সকালের দিকে আগুন নেভানোর কাজ শুরু হয়নি। আসলে তারা সংরক্ষিত গড় পঞ্চকোট পাহাড়ের জঙ্গলে আগুন নেভাতে ব্যস্ত।

[আরও পড়ুন: হিজাব পরায় ঢুকতে বাধা! ভারতীয় রেস্তরাঁ ‘বন্ধ’ করল বাহরিন]

পাঁচদিন পরেও গড়পঞ্চকোট জ্বলছেই। পাহাড় হওয়ায় জয়চণ্ডীতে আগুন নেভাতে যাচ্ছে না দমকল বলে অভিযোগ। একাধিক ছোট-বড় টিলা নিয়ে এই জয়চণ্ডী পাহাড়। শিল্পশহর রঘুনাথপুর থেকে তিন কিলোমিটার দূরে আদ্রা যাওয়ার পথে ডানদিকে এই পাহাড়ের অবস্থান। প্রায় ৫০৯ ফুট (১৫৫ মিটার) উঁচু এই পাহাড় ছোটনাগপুর মালভূমির সবচেয়ে নিচু ধাপে অবস্থিত। একাধিক মন্দির রয়েছে এই পাহাড়ে। এই পাহাড় শুধু পর্যটন কেন্দ্রই নয়, রাজ্যের অন্যতম ট্রেকিং স্পট। রাজ্য পুলিশের বিশেষ বাহিনীর প্রশিক্ষণস্থলও। আশির দশকের গোড়ায় প্রখ্যাত চিত্র পরিচালক সত্যজিৎ রায় এই পাহাড়ে ‘হীরক রাজার দেশ’ ছবির শুটিং করেন। ফলে গুরুত্বপূর্ণ এই পাহাড়-জঙ্গল ১২ ঘন্টার বেশি সময় ধরে জ্বলতে থাকায় উদ্বিগ্ন পুরুলিয়া জেলা প্রশাসন।

[আরও পড়ুন: ধোসায় মাদক মিশিয়ে দিল্লির হোটেলে যুবতীকে ধর্ষণ ও ব্ল্যাকমেল, কলকাতা থেকে ধৃত যুবক]

কিন্তু এই পাহাড়ে আগুন লাগল কীভাবে? এখানে মহুল, বাবুই ঘাস বা শাল জঙ্গল নেই যে ওই বনজ সম্পদ সংগ্রহের জন্য জঙ্গল নির্ভর মানুষজন তাঁদের সুবিধায় আগুন লাগিয়েছে। অভিযোগ, এই পাহাড়তলিতে নজরদারির অভাবে ফি-দিন সন্ধ্যায় মদের ঠেক বসে। এছাড়া চারপাশে পর্যটক আবাসস্থল থাকায় তাঁদের বিধি ভেঙে সিগারেট, বিড়ি, দেশলাই, লাইটার নিয়ে পাহাড়ে যাতায়াতে কোনওভাবে আগুন লাগতে পারে। এমনই ধারণা এলাকার মানুষের। তবে গড়পঞ্চকোট, জয়চণ্ডী পাহাড় ছাড়া রবিবার পুরুলিয়ার যে ১৪ টি জঙ্গলে আগুন লেগেছিল, তা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে বলে জানিয়েছে বনদপ্তর।

ছবি: অমিতলাল সিং দেও।
Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement