সুকুমার সরকার, ঢাকা: দাবানলের কবলে বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ অরণ্য সুন্দরবন (Sunderban)। ২০ ঘণ্টা অতিক্রান্ত হলেও বাংলাদেশের (Bangladesh) দক্ষিণ জনপদ জেলা খুলনা-বাগেরহাটের সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের আগুন নিয়ন্ত্রণে আসেনি এখনও। শরণখোলা রেঞ্জের দাসের ভারানি এলাকায় আগুন নেভানোর কাজ শুরু হয়েছে সোমবার থেকে। দ্বিতীয় দিন অর্থাৎ মঙ্গলবার সকালে দমকলের তিনটি ইউনিট কাজ শুরু করেছে।কিন্তু পরিস্থিতি কিছুতেই নিয়ন্ত্রণে আসছে না।যার জেরে সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ এবং ছোট ছোট বন্যপ্রাণীদের (Wild animals) বিপন্নতা বাড়ছে। প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট হতে পারে বলেও আশঙ্কা পরিবেশবিদদের।
বাগেরহাট দমকল বিভাগের সহকারী উপ-পরিচালক গোলাম সরোয়ার জানান, সুন্দরবনের দাসের ভারানি এলাকায় যে বনে আগুন লেগেছে, তার কাছাকাছি জলের কোনও উৎস নেই। তাই ৪-৫ কিলোমিটার দূরে পাইপ খাটিয়ে জল ছড়ানোর কাজ চলছে। ঘটনাস্থলের আশপাশে বেশ কিছু এলাকায় আগুন ও ধোঁয়ার কুণ্ডলি দেখা যাচ্ছে। সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক জয়নাল আবেদিন বলেন, ”দ্বিতীয় দিনের মতো আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করার জন্য আমাদের শতাধিক কর্মী ও কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে যাচ্ছেন। দমকলও চেষ্টা চালাছে। আশা করছি, আজকের মধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হবে।”
[আরও পডুন: ক্ষতবিক্ষত ‘পৃথিবীর ফুসফুস’, বাতাসে ২০ শতাংশ বেশি CO2 ফিরিয়ে দিচ্ছে আমাজন]
সোমবার দুপুরে দাসের ভারানি এলাকার জঙ্গলে দাবানল দেখা যায়। বিধ্বংসী আগুনে দাউদাউ করে জ্বলে ওঠে বনাঞ্চল। সন্ধে পর্যন্ত অন্তত ২ একর বনভূমি পুড়েছে বলে জানিয়েছে বনবিভাগ। এর আগে সোমবার সন্ধে ৭টা নাগাদ দিনের আলো ফুরিয়ে গেলে অভিযান বন্ধ করে দেয় দমকল বিভাগ। এই ঘটনায় তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বনবিভাগ। এদিকে, আগুন বনের সমতল ভূমিতে ছড়িয়ে পড়েছে। শরণখেলা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক জয়নাল আবেদিনকে প্রধান করে এই কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির অন্য সদস্যরা শরণখেলা স্টেশন কর্মকর্তা আবদুল মান্নান ও ধানসাগর স্টেশন কর্মকর্তা মহম্মদ ফরিদুল ইসলাম। তদন্ত কমিটিকে আগামী সাতদিনের মধ্যে এ নিয়ে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।
[আরও পডুন: ‘পশ্চিমবঙ্গে যেই ক্ষমতায় থাকুক সুসম্পর্ক থাকবে’, বার্তা বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রীর]
দমকল বিভাগ ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন, বাগেরহাটের উপ-সহকারী পরিচালক মহঃ গোলাম সরোয়ার বলেন, ”লোকালয় থেকে প্রায় ৬ থেকে ৭ কিলোমিটার দূরে বনের মধ্যে এই আগুন লেগেছে। ফলে আগুন নেভানোর জন্য আমাদের বেগ পেতে হচ্ছে। শুষ্ক মরশুমে গাছের পাতার স্তূপ থাকায় আগুন খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে সমতল ভূমির বিভিন্ন স্থানে। আবার আশেপাশে জলের কোনও উৎস নেই।” এর আগে ৮ ফেব্রুয়ারি আগুন লেগে সুন্দরবনের অন্তত ৩ শতাংশ বনভূমি পুড়ে গিয়েছিল।