সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বাঘ, ভাল্লুক, হাতি, গণ্ডার। পেখম মেলেছে ময়ূর। নদী পার হচ্ছে এক ঝাঁক হরিণ। শিকারের উপর ঝাঁপিয়ে পড়েছে চিতা। ছোট্ট ছোট্ট রঙিন পাখি মন দিয়ে এদিক ওদিক লাফিয়ে বেড়াচ্ছে। কিংবা ক্যামেরায় সোজা চোখ রেখেছে হুতুম পেঁচা! ফ্রেমে ফ্রেমে অরণ্যের কাহিনি। ‘‘অ্যাকাডেমি অফ ফাইন আর্টস’’-এর সাউথ গ্যালারির দেওয়াল জুড়ে যেন ‘জঙ্গলরাজ’! আর এর নেপথ্যে রয়েছেন অরণ্যপ্রেমী অভিনেতা সব্যসাচী চক্রবর্তী ও চন্দন সেন। অভিনেতাদের ক্যামেরায় উঠে এল জঙ্গলের নানা গল্প।
স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা উত্তরণের উদ্যোগে বিশেষ চিত্রপ্রদর্শনী আয়োজন করা হয়েছে ‘অ্যাকাডেমি অফ ফাইন আর্টস’-এর সাউথ গ্যালারিতে। সেখানেই উঠে এসেছে একঝাঁক অরণ্যপ্রেমীর লেন্সের গল্প। এই প্রদর্শনীতে সব্যসাচী চক্রবর্তী, চন্দন সেন শুধু নয়, রয়েছে সমাজের নানা পেশার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিত্বদের তোলা ছবি। রয়েছে চিকিৎসক সঞ্জয় ভট্টাচার্য, আইনজীবী তীর্থঙ্কর দাস, আইটি কর্মী নীলাদ্রি কুণ্ডু, শুদ্ধসত্য দাস, হোমিওপ্যাথি ওষুধের ব্যবসায়ী সৌম্য সরকার, ইন্টেরিয়ার ডিজাইনার রাকেশ মল্লিক, চিকিৎসক রাজদীপ দেব, চিত্রগ্রাহক হীরক সেনগুপ্ত, প্রসেনজিৎ ঘোষ, ঋজু মজুমদার ও রিমিক চক্রবর্তীর মতো ব্যক্তিত্বদের ছবি।
[আরও পড়ুন: মুম্বইতেই জমজমাট প্রসেনজিতের ভাইফোঁটা, কলকাতা থেকে উড়ে গেলেন বোন পল্লবী]
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটালকে সব্যসাচী চক্রবর্তী জানালেন, ”অনেক ছোটবেলা থেকেই ছবি তোলার শখ। মা-বাবার সঙ্গে যখন ঘুরতে যেতাম, তখন একটা ছোট্ট ক্যামেরা ছিল, সেই ক্যামেরাতেই ছবি তুলতাম। তারপর ওই আটের দশকের শেষ কিংবা নয়ের দশকের শুরুতে ফটোগ্রাফির নেশাটা বাড়ে। জঙ্গল আমাকে প্রথম থেকেই খুব টানে।”
ফেলুদা জানালেন, ”জঙ্গলে অদ্ভুত একটা রহস্যের গন্ধ পাই আর বন্যপ্রাণীরা বরাবরই আমার মন কেড়ে নেয়। আমি চেষ্টা করি, বন্যপ্রাণকে একটু বিরক্ত না করে ছবি তোলার। কারণ, তারা এতটাই সুন্দর যে, তাদের সাজাতে হয় না।”
জঙ্গলে কোনও হাড়হিম করা অভিজ্ঞতা? সব্যসাচী সোজা জানালেন, ”আছে তো! একবার হাতির পিঠে চড়ে বাঘিনীর ছবি তুলতে বেরিয়ে ছিলাম। হাতির এত কাছে বাঘিনী এসে গিয়েছিল যে এক লাফে আমাকে টেনে নিয়ে যেতে পারত। এররকম রিস্ক আর নিই না আমি। খুব ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম।”
ঠিক এরকমই হাড়হিম করা অভিজ্ঞতার কথা শোনালেন অভিনেতা চন্দন সেন। তিনি জানালেন, ”ক্যামেরা হাতে, আমি জিপে বসে আছি । ঠিক আমার দেড়ফুটের মধ্যে একটা সিংহি! ভয়ে আমার তো আত্মারাম খাঁচা। ভেবেছিলাম এবার প্রাণটা গেল। ওই দিনটার কথা আজও ভুলতে পারেনি।”
উত্তরণ স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার তরফে শুভজিৎ রায় জানালেন, ”এই চিত্রপ্রদর্শনী একেবারেই অরণ্যপ্রেমীদের কথা মাথায় রেখে৷ সব্যসাচীদা ও চন্দনদার মতো বিশিষ্ট মানুষদের পাশে পেয়ে আমরা আপ্লুত৷”
প্রদর্শনীতে সাজানো ফ্রেমগুলোতে এমনই সব গল্প যেন উঠে এল। ‘অ্যাকাডেমি অফ ফাইন আর্টস’-এ এই চিত্রপ্রদর্শনী চলবে ১৮ নভেম্বর পর্যন্ত।
[আরও পড়ুন: ভক্তকে ঠাসিয়ে চড় নানা পাটেকরের! শুটিংয়ের মাঝেই কেন মেজাজ হারালেন? দেখুন ভিডিও]