রাজকুমার, আলিপুরদুয়ার: ঝড়ের প্রবল তাণ্ডব কার্যত ধ্বংসলীলা চালিয়েছে উত্তরের তিন জেলায়। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত জলপাইগুড়ি (Jalpaiguri)। রবিবার সন্ধেবেলা প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে এখানে চারজনের প্রাণহানি ঘটেছে। আহত শতাধিক। হাসপাতালে তাঁদের চিকিৎসা চলছে। ঘরবাড়ি হারিয়েছেন বহু মানুষ। এই পরিস্থিতিতে সর্বহারাদের পাশে থাকতে রবিবার রাতেই জলপাইগুড়ি ছুটে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)। রাতেই হাসপাতালে গিয়ে আহতদের দেখার পাশাপাশি মৃতদের পরিবারের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেছেন তিনি।
আলিপুরদুয়ার ১ নং ব্লকের তপসিখাতা এলাকায় মুখ্যমন্ত্রী। নিজস্ব চিত্র।
আর সোমবার দুপুরে কপ্টারে করে মুখ্যমন্ত্রী চলে যান পাশের জেলা আলিপুরদুয়ারে (Alipurduar)। সেখানেও রবিবারের ঝড়বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বেশ কিছু এলাকা। বিশেষত ১ নং ব্লকের তপসিখাতা এলাকা। সেসব পরিদর্শন করে সাধারণ মানুষজনের সঙ্গে কথা বলেছেন। তাঁদের সব অভাব, অভিযোগ শুনে আশ্বাস দিয়েছেন। এর পরই তাঁর বক্তব্য, ''বিপর্যয় মোকাবিলায় প্রশাসন ভালো কাজ করছে। দ্রুত ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ত্রাণ, খাবারের ব্যবস্থা করেছে। যদিও এখন ভোটের সময়, আদর্শ আচরণবিধি (Model Code of Conduct) লাগু রয়েছে। কিন্তু এখন বিপদের সময় কি আর আচরণবিধি মেনে চলা যায়?''
[আরও পডু়ন: CAA ইস্যুতে মমতাকে ‘জান’ সম্বোধন করে গান কবিয়াল বিজেপি প্রার্থীর! খোঁচা দুর্নীতি ইস্যুতেও]
উল্লেখ্য, বিপর্যয়ের সময়ে প্রশাসনের কাজের সুবিধার্থে আদর্শ আচরণবিধি প্রয়োজনমতো শিথিল করা হয়। নির্বাচন কমিশনের (ECI) নিয়ম অনুযায়ী, সেক্ষেত্রে প্রশাসনিক কর্তারা বিপদ মোকাবিলায় যে কোনও পদক্ষেপ নিতে পারেন। তবে সমস্ত রাজনৈতিক দলকে এর বাইরে থাকতে হবে। রাজনীতির সঙ্গে জড়িত কেউই এ নিয়ে কোনও পদক্ষেপ নিতে পারবেন না। জলপাইগুড়ি বিপর্যয়ের ক্ষেত্রেও এর ব্যতিক্রম নয়। এখানে জেলা প্রশাসন কাজ করছে। তাদের সাহায্যার্থে রয়েছেন তৃণমূল কর্মীরা। তা নিয়ে যাতে কোনও বিতর্ক তৈরি না হয়, সেই কারণেই মুখ্যমন্ত্রী নিজে বিপদ আর আদর্শ আচরণবিধির কথা বার বার উল্লেখ করেছেন বলে মত ওয়াকিবহাল মহলের একাংশ।
বিপর্যস্ত এলাকার মানুষের পাশে মুখ্যমন্ত্রী। ছবি: সোশাল মিডিয়া।
[আরও পডু়ন: বসিরহাটের প্রার্থীর ব্যক্তিগত তথ্য প্রকাশের অভিযোগ, তৃণমূলের দেবাংশুর বিরুদ্ধে কমিশনে বিজেপি]
রবিবারের ঝড়ে ঘরবাড়ি হারিয়ে বিপদে বহু পরীক্ষার্থীও। তারাও মুখ্যমন্ত্রীকে কাছে পেয়ে এই আক্ষেপের কথা জানিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী তাদের সমস্য়ার কথা বুঝতে পেরে জেলা প্রশাসনকে বইখাতার ব্যবস্থা করে দিতে বলেন। এদিন আলিপুরদুয়ারে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন তৃণমূল প্রার্থী প্রকাশ চিক বরাইক, কোচবিহারের তৃণমূল নেতা পার্থপ্রতিম রায়।