সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কার্যত দেউলিয়া পাকিস্তান। মূল্যবৃদ্ধি ও বেকারত্বের প্রবল মারে নাভিশ্বাস উঠছে আম জনতার। এহেন পরিস্থিতিতে ‘শরীরের কাপড় বেচে’ সস্তায় গমের আটা জোগান দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ।
গত শুক্রবার প্রথম জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন শাহবাজ শরিফ (Shehbaz Sharif)। কিন্তু দিশানির্দেশহীন সেই বক্তব্যে পাক অর্থনীতিকে চাঙ্গা করা বা সন্ত্রাস নিয়ন্ত্রণের মতো বিষয়গুলি কার্যত কোনও গুরুত্বই পায়নি। পাকিস্তানের চিরাচরিত ‘গোল্ডেন রুল’ মেনে আমজনতার সামনে সেই কাশ্মীর টোপ ফেললেন শাহবাজ। পাশাপাশি, খাবার ও জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির জন্য প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের ঘাড়েই দায় চাপিয়েছেন তিনি। তবে বেকারত্বের মোকাবিলা ও নিঃশেষিত বিদেশি মুদ্রা ভাণ্ডার ফের কীভাবে চাঙ্গা করা যায় সেই বিষয়ে কোনও নিদান দিতে ব্যর্থ হয়েছেন শাহবাজ। এহেন পরিস্থিতিতে খাইবার পাখতুনখোয়ার মুখ্যমন্ত্রী মাহমুদ খানকে গমের আটার দাম নিয়ন্ত্রণ করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। দ্রুত ১০ কিলোগ্রাম আটার বস্তার দাম সর্বোচ্চ ৪০০ টাকার মধ্যে নামিয়ে আনার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। এর অন্যথায় নিজের জামা বিক্রি করে সস্তায় মানুষের কাছে আটা পৌঁছে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন শাহবাজ। বর্তমানে পাকিস্তানে ১০ কেজি আটার দাম প্রায় এগারোশো টাকা।
[আরও পড়ুন: অসমে সংখ্যালঘু শংসাপত্র ছয় ধর্মীয় গোষ্ঠীকে, প্রস্তাব পাশ মন্ত্রিসভায়]
রবিবার লাহোরের থাকারা স্টেডিয়ামে এক জনসভায় পাক প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমি আবার বলছি, গায়ের জামা বিক্রি করে হলেও মানুষের কাছে সস্তায় আটা পৌঁছে দেব। দেশকে উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির পথে ফেরাতে প্রয়োজনে আমি নিজের প্রাণও দিয়ে দেব।” এদিন দেশের আর্থিক দুর্দশার জন্য ইমরান খানকে দায়ী করে শাহবাজ বলেন, “দেশে মূল্যবৃদ্ধি ও বেকারত্বের জন্য দায়ী ইমরান খান। যখন গোটা বিশ্বে জ্বালানির মূল্য বাড়ছিল তখন আস্থা ভোটে হেরে যাওয়ার ভয়ে দেশে পেট্রোপণ্যের দাম কমিয়ে দিয়েছিলেন ইমরান।”
উল্লেখ্য, তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে ক্ষমতায় এসে পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ ও ইমরান খান দু’জনেই ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার উপরে জোর দিয়েছিলেন। যদিও সেই প্রয়াস যে সফল হয়নি সেটা স্পষ্ট। কিন্তু মসনদে বসেই যেভাবে কাশ্মীর নিয়ে গলাবাজি করছেন শাহবাজ, তাতে বিশ্লেষকদের ধারণা দেশের বর্তমান আর্থিক পরিস্থিতি থেকে জনতার নজর সরাতেই এই আস্ফালন। পাশাপাশি, মূল্যবৃদ্ধি রোধ, দুর্নীতি দমন ও কর্মসংস্থানের যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন শাহবাজ, তা বাস্তবায়িত করার কোনও পন্থা জানা নেই তাঁর।