সুকুমার সরকার, ঢাকা: বাংলাদেশে ফের তুঙ্গে শাসক-বিরোধী তরজা। বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়াকে ফের জেলে পাঠিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী তথা আওয়ামি লিগের প্রধান শেখ হাসিনা। তিনি স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেন, মানবিক কারণেই জেলের সাজাপ্রাপ্ত খালেদাকে বাড়িতে থাকার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তাঁর দল বিএনপি বাড়াবাড়ি করলে সেই সুযোগ কেড়ে নেওয়া হবে।
বৃহস্পতিবার রাজধানী ঢাকার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে শাসকদল আওয়ামি লিগ আয়োজিত আলোচনা সভায় ভাষণ দেন হাসিনা (Sheikh Hasina)। সেখানে তিনি বলেন, “জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়ার ১০ বছরের জেল হয়েছে। হ্যাঁ, তিনি অসুস্থ এবং বয়োবৃদ্ধ। তাঁর ভাই-বোন, বোনের জামাই আমার কাছে এসেছেন, আবেদন করেছেন, আমরা তাঁর সাজাটা স্থগিত করে তাঁকে বাড়িতে থাকার সুযোগ দিয়েছি। মানবিক কারণেই দিয়েছি। কিন্তু বিএনপি বেশি বাড়াবাড়ি করলে আবার জেলে পাঠিয়ে দেব।”
[আরও পড়ুন: নির্বাচনে অনায়াস জয়, ফের ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন ‘মোদির বন্ধু’ নেতানিয়াহু]
এদিন জেল হত্যা দিবসের প্রসঙ্গ টেনে হাসিনার বক্তব্য, ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর পরিবারকে হত্যা করে খুনিরা থেমে যায়নি, ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে চার নেতাকে হত্যা করেছিল তারা। খুনি মোশতাক ও জিয়াই তাদের হত্যা করে। হাসিনা আরও বলেন, “৩ নভেম্বর চার নেতাকে হত্যার পর মানুষ বুঝে ফেলেছিল এটা বাংলাদেশের ইতিহাসকে মুছে ফেলার ষড়যন্ত্র। জিয়াউর রহমানের উদ্যোগে পাকিস্তানের যোগসাজশে হত্যাকারীদের লিবিয়ায় আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা হয়। কেন্দ্রীয় কারাগারে অস্ত্র নিয়ে ঢোকা যায় না। কিন্তু, তারা অস্ত্র নিয়ে ঢুকেছিল। গণভবন থেকে সেই নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। বলা হয়েছিল, যেভাবে ঢুকতে চায়, সেভাবেই যেন ঢুকতে দেওয়া হয়। জেলার তাদের ঢুকতে না দিলে তাকেও হত্যার হুমকি দেওয়া হয়। মিটিংয়ের কথা বলে তারা ঢুকতে চায়। কিন্তু তাদের সঙ্গে অস্ত্র ছিল। জিয়া এই ষড়যন্ত্রের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিল বলেই মোশতাক যখন রাষ্ট্রপতি হলো, নিজেকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা দিয়েই জিয়াউর রহমানকে বানাল সেনা প্রধান।”
উল্লেখ্য, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানকে হত্যা করা হয়। এই কাণ্ডের তিন মাস বাদে ৩ নভেম্বর ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে দেশের চার নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দিন আহমদ, এম মনসুর আলি ও এ এইচ এম কামারুজ্জামানকে হত্যা করে একই ঘাতক দলটি। তাদের লক্ষ্য ছিল বাঙালি জাতিকে নেতা শূন্য করা। জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।