সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ১৮ ঊর্ধ্বে, আগামী ১ মে থেকে দেশে টিকাকরণ শুরু হতে চলেছে। মে মাস থেকে দেশে তিনটি ভ্যাকসিন (Covid-19 Vaccine), নাগরিকদের দেওয়া হবে। কিন্তু ভ্যাকসিন নিয়ে কি সংক্রমণ থেকে পুরোপুরি মুক্ত হচ্ছেন নাগরিকরা? আর তার থেকেও বড় প্রশ্ন, ‘ফুললি ভ্যাকসিনেটেড’ তথা ‘টিকাকরণ সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছে’ যাঁদের, তাঁরা ঠিক কারা?
বিশেষজ্ঞদের দাবি, সংক্রমণ থেকে বাঁচতে যদিও টিকা নিচ্ছেন অনেকেই, তবুও সংক্রমণ থেকে সেরে ওঠার পর যাঁরা টিকা নিচ্ছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে ভ্যাকসিনই, সংক্রমণের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় প্রতিরোধ গড়ে তুলছে। যেমন আমেরিকা। সেখানে মঙ্গলবার থেকে টিকার দু’টি ডোজ নেওয়ার প্রক্রিয়াই যাদের সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছে, তাঁদের জন্য বাড়ির বাইরে বেরোনোর বিধিনিষেধ (আউটডোর মাস্ক প্রোটোকল) অনেকটাই শিথিল করে দেওয়া হয়েছে। তার কারণই হল এই শ্রেণির মানুষদের মধ্যে বাড়তে থাকা ইমিউনিটি, যা এসেছে ভ্যাকসিনেশন প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হওয়ার পর। শুধু তাই নয়, আমেরিকায় বর্তমানে ৫০ শতাংশের বেশি প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ ইতিমধ্যেই কোনও না কোনও ভ্যাকসিনের অন্তত একটি ডোজ নিয়ে ফেলেছেন। আমেরিকার দাবি, টিকাকরণ যাঁদের সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছে, বয়সের বিচারে যাঁদের সবচেয়ে সংবেদনশীল বলে ধরা হয়, তাঁদের কোভিডে মৃত্যুর হার ৮০ শতাংশ কমে গিয়েছে। আর দ্বিতীয় প্রশ্নের উত্তর হল, ভ্যাকসিন নেওয়ার পর ইমিউনিটি গড়ে উঠতে কিছুটা সময় লাগে। যে কোনও অসুস্থতার ক্ষেত্রেই। কোভিডের ক্ষেত্রে, প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে উঠতে দু’ থেকে তিন সপ্তাহ সময় লাগে।
[আরও পড়ুন : ভ্যাকসিনের পর এবার করোনার ওষুধও বাজারে আনতে চলেছে ফাইজার]
ইউএস সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) এর ব্যাখ্যা অনুযায়ী, সেই সমস্ত মানুষকে ‘ফুললি ভ্যাকসিনেটেড’ বলা হয়, যাঁদের টিকাকরণ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হওয়ার পর দু’টি সপ্তাহ কেটে গিয়েছে। এর অর্থ এই যে, কোভিশিল্ড, কোভ্যাক্সিন এবং স্পুটনিক-ভি, মানে যে তিনটি ভ্যাকসিনকে দেশে জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োগের জন্য অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, সেগুলির নির্ধারিত দু’টি ডোজ গ্রহণ করার পর এবং দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার দু’সপ্তাহ পর কাউকে ‘ফুললি ভ্যাকসিনেটেড’ বলা যাবে। আর এই তিনটি ভ্যাকসিনই দু’টি ডোজের রেজিম অনুসরণ করে।
কিন্তু যাঁরা ভ্যাকসিনের একটি ডোজ নিচ্ছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে কী হবে?
বিশেষজ্ঞদের দাবি, তাঁদেরও ইমিউনিটি তৈরি হবে, টিকা নেওয়ার দু’সপ্তাহ পর। কিন্তু তাঁদের ‘ফুললি ভ্যাকসিনেটেড’ গণ্য করা হবে না। তাঁরা কোভিড ভাইরাস প্রতিরোধে ‘ফুললি ভ্যাকসিনেটেড’ মানুষদের তুলনায় কিছুটা হলেও কম কার্যকরী হবেন। অসুস্থতা ফের হলেও, তা কম গুরুতর হবে। সবচেয়ে বড় কথা, ‘ফুললি ভ্যাকসিনেটেড’ মানুষজন ঘরে এবং বাইরে, ঝুঁকিপূর্ণ অসুস্থতা অনেকটাই এড়িয়ে থাকতে পারবেন। তাঁদের সংক্রমণের ঝুঁকি অনেকটাই কম হবে। তাঁরা স্বাভাবিক জীবনে অনেকটাই বেশি ফিরতে পারবেন। কিন্তু তার মানে এই নয়, যে কোভিডবিধি আর তাদের না মানলেও চলবে, মাস্ক না পরলেও চলবে, পারস্পরিক দূরত্ববিধি না মানলেও চলবে। এগুলির কোনওটাই নয়। সতর্কতার কোনও বিকল্প নেই বলেই মত বিশেষজ্ঞদের।