সৌরভ মাজি, বর্ধমান: পর পর কন্যাসন্তান হওয়ায় বধূর উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হত। শেষ পর্যন্ত ওই বধূকে খুন (Murder) করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠল শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে। সোমবার গভীর রাতে ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের (Purba Bardhaman) মেমারির কন্দর্পপুর গ্রামে।
মৃতের নাম শাশ্বতী কর্মকার(৩১)। কালনার বেলকুলিতে তাঁর বাপের বাড়ি। ঘটনার বিষয়ে মঙ্গলবার মেমারি থানায় খুনের অভিযোগ দায়ের করেছেন শাশ্বতীর বাবা শ্যামলকুমার ঘোষ। স্বামী বিশ্বজিৎ সরকার, শ্বশুর সুশীল সরকার ও শাশুড়ি পুষ্পাঞ্জলি সরকারের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করেছেন তিনি। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। বিশ্বজিৎকে আটক করেছে পুলিশ।
[আরও পড়ুন: বর্ষায় বেহাল ঘাটাল, এলাকা পরিদর্শনে যাচ্ছেন সাংসদ Dev]
পুলিশ স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর ১৪ আগে শাশ্বতীর সঙ্গে বিশ্বজিতের বিয়ে হয়। তাঁদের ১১ ও ৩ বছরের দুইটি কন্যা সন্তান রয়েছে। শ্যামলবাবুর অভিযোগ, দ্বিতীয়বার কন্যা সন্তান হওয়ার পর থেকেই শ্বশুরবাড়িতে তাঁর মেয়ের উপর নির্যাতন শুরু হয়। শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হত। এমনকী মেয়ের শ্বশুর ও শাশুড়ির প্ররোচনায় জামাই মেয়েকে মারধর করত বলেও অভিযোগ। এই নিয়ে বাবার কাছে অনেকবার জানিয়েছিলেন শাশ্বতী। এই নিয়ে দুই পরিবার একসঙ্গে বসে মিটমাটের চেষ্টা করে। সাময়িক নির্যাতন বন্ধও হয়। ফের মেয়ের উপর কন্যা সন্তান হওয়ার কারণে নির্যাতন শুরু হয় বলে দাবি করেন শ্যামলবাবু।
সোমবার গভীর রাতে বিশ্বজিৎ ফোন করে শ্বশুর শ্যামলকুমার ঘোষকে জানায়, মেয়ে মারা গিয়েছে। শ্যামলবাবু মঙ্গলবার বলেন, “রাতেই মেমারি-২ ব্লকের পাহাড়হাটি হাসপাতালে গিয়ে দেখি মেয়ের দেহ পড়ে রয়েছে। কপালে ক্ষতচিহ্ন ও গালে কালশিটের দাগ রয়েছে। আমার মেয়েকে খুন করা হয়েছে বলে আমরা নিশ্চিত। পুলিশে অভিযোগ করেছি।” তিনি আরও দাবি করেন, “কন্যাসন্তান হওয়ার কারণেই মেয়ের উপর নির্যাতন চালাতো শ্বশুরবাড়ির লোকজন। শেষ পর্যন্ত ওরা মেরেই দিল আমার মেয়েকে।” পুলিশ জিজ্ঞসাবাদের জন্য বিশ্বজিৎকে আটক করেছে। এদিন বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে মৃতদেহের ময়নাতদন্ত হয়।