কল্যাণ চন্দ, বহরমপুর: সদ্যোজাত বদলের অভিযোগ। আর সেই অভিযোগে উত্তেজনা ছড়াল মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ‘মাতৃমা’ বিভাগে। পরিস্থিতি সামলাতে ছুটে এল বহরমপুর থানার পুলিশ। বিক্ষোভ চলাকালীন মৃতের পরিবারের এক মহিলা প্লাস্টিকের বড় পাইপ নিয়ে হাসপাতাল ভাঙচুর করতে উদ্যত হলে তাঁকে আটক করে পুলিশ। শিশু বদলের অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
ভগবানগোলা থানার কালুখালি এলাকার বাসিন্দা প্রসূতি শাবানা বিবিকে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মাতৃমা বিভাগে ভর্তি করা হয়। গত শনিবার দুপুরে তিনি পুত্রসন্তানের জন্ম দেন। ওই রাতে সদ্যোজাতর শারীরিক অবস্থার ক্রমশ অবনতি হয়। এসএনসিইউ ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। অভিযোগ, সেখানেই শিশুর হাতের সিস্টার টিকিট বদল হয়ে যায়। মাতৃমা বিভাগে মা ও শিশুর হাতে সিস্টার টিকিট নম্বর ছিল ২৯৫। ওই শিশুকে এসএনসিইউ ওয়ার্ডে ভর্তি করার জন্য টিকিট নম্বর দেওয়া হয় ২০০। আর ওই টিকিট পরিবর্তন নিয়েই বচসা। রবিবার সকালে ওই শিশুর মৃত্যুর খবর পেয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েন তার পরিবারের লোকজন।
[আরও পড়ুন: ‘তোমার বোনকে আগুনে পুড়িয়ে দিয়েছি’, ভাইয়ের বিধবা স্ত্রীকে খুন করে ফোন ভাশুরের!]
সদ্যোজাতর বাবা রফিকুল শেখ বলেন, শনিবার তাঁর ছেলে ও স্ত্রীর হাতে ২৯৫ নম্বর টিকিট ছিল। কিন্তু পরের দিন তাঁর ছেলের হাতে ২০০ নম্বর টিকিট দেওয়া হয়। মৃত সন্তানকে তাঁদের বলে ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে দাবি সন্তানহারা বাবার। শিশুর দিদা কামরুন্নেসা বিবি বলেন, শিশু বদলে দিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতাল সুপারের দারস্থ হন তাঁরা। হাসপাতালের পক্ষ থেকে মৃত শিশুর ময়নাতদন্তের কথা বলা হয়। তবে রাজি হননি ওই শিশুর পরিবারের লোকজন। এর পর ওই শিশুর হাতের সিস্টার টিকিট খুলে নেওয়া হচ্ছে শুনে ফের মাতৃমা বিভাগের সামনে ছুটে যান ওই শিশুর বাড়ির লোকজন। সেই সময় ওই শিশুর দিদা কামরুন্নেসা বিবি প্লাস্টিকের বড় পাইপ নিয়ে হাসপাতাল ভাঙচুর করতে উদ্যত হন। পুলিশ তাঁকে আটক করে নিয়ে যায়। ছড়িয়ে পড়ে তীব্র উত্তেজনা। বহরমপুর থানার পুলিশ পরিস্থিতি সামলায় দেয়।
এদিকে, এসএনসিইউ বিভাগের চিকিৎসক ডাঃ ভোলানাথ আইচ বলেন, “ওই শিশুর জন্মগত সমস্যা ছিল। জন্মানোর কিছুক্ষণ পর অসুস্থ হয়ে পড়ে। ওই শিশুকে এসএনসিইউ বিভাগে ভর্তি করা হয়। নিয়ম অনুযায়ী ওই শিশুর হাতের সিস্টার টিকিট পরিবর্তন করা হয়। ওই শিশুর এক হাতে মাতৃমা বিভাগের ২৯৫ নম্বর এবং অন্য হাতে এসএনসিইউ বিভাগের ২০০ নম্বর ছিল। শত চেষ্টা করে ওই শিশুকে আর বাঁচানো যায়নি। দুর্ভাগ্যবশত ওই শিশুর মৃত্যু হওয়ায় ‘সিস্টার টিকিট’ নিয়ে আত্মীয়দের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি হয়।” অন্যদিকে, ভারপ্রাপ্ত হাসপাতাল সুপার ডাঃ সুপ্রতীক চক্রবর্তী বলেন, “ওই নম্বর পরিবর্তনের জন্য বিভ্রান্তি ছড়ায়। নিয়ম মেনেই ওই নম্বর পরিবর্তন হয়েছে। তবে বিষয়টি নিয়ে অভ্যন্তরীণ তদন্ত হবে।”