shono
Advertisement

এক ধাক্কায় কমল ৪০ কেজি ওজন, প্রাণসংশয়ে বছর আঠারোর যুবতী

ইন্টারনেট দেখে আপনিও কি এই পথে হাঁটছেন? সাবধান, হতেই পারে বড় বিপদ।
Posted: 09:22 PM Jan 28, 2021Updated: 09:22 PM Jan 28, 2021

গৌতম ব্রহ্ম: ওজন কমানোর ঠ্যালায় বিপন্ন এক যুবতীর জীবন। অস্ত্রোপচারে প্রাণ বাঁচলেও প্রশ্নের মুখে পড়ল ইন্টারনেট ঘেঁটে ডায়েটিংয়ের প্রবণতা। ঘটনাটা কী? সদ্য কৈশোর পেরিয়ে যৌবনে পা রেখেছে রাখি (নাম পরিবর্তিত)। ওজন বেশি (Obesity) হওয়ায় নিজের মতো করেই নেট ঘেঁটে ডায়েটিং শুরু করেছিল। তাতে প্রাথমিকভাবে সুফলও মেলে। ওজন কমতে থাকে। উৎসাহিত হয়ে ফ্যাটযুক্ত খাবার তালিকা থেকে পুরোপুরি বাদ দিয়ে দেন রাখি। ওজন কমে হয় চল্লিশ কেজি। কিন্তু তার জন্য যে এতবড় মূল্য চোকাতে হবে, তা ভাবেননি তিনি।

Advertisement

বিপত্তির শুরু পাঁচ-ছ’দিন আগে। প্রথমে মলত্যাগ নিয়ে সমস্যা শুরু। তারপর ফুলতে থাকে পেট। একটা সময় গিয়ে বমি শুরু হয়। জল খেলেও তা বেরিয়ে আসছিল। অতঃপর ইএম বাইপাস লাগোয়া মুকুন্দপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভরতি করা হয় রোগীকে, গ্যাসট্রো সার্জন ডা. সঞ্জয় মণ্ডলের অধীনে। হাসপাতাল সূত্রের খবর, দু’বছর আগে রাখির ওজন ছিল ৭৪। আর এখন ৩৫। হাসপাতালে ভরতির সময় রাখির ওজন ছিল ৪০ কেজি। অস্ত্রোপচারের পর আরও পাঁচ কেজি কমেছে।

[আরও পড়ুন: ব্রিটেনের স্ট্রেনের বিরুদ্ধেও অ্যান্টিবডি তৈরিতে সক্ষম কোভ্যাক্সিন, জানাল ICMR]

ডা. সঞ্জয় মণ্ডল জানিয়েছেন, এটি এক ধরনের রোগ। যার পোশাকি নাম এসএমএ সিনড্রোম। পাকস্থলি থেকে ক্ষুদ্রান্ত্রে যাওয়ার পথে রয়েছে সুপিরিয়র মিজেনটেরিক আর্টারি (এসএমএ)। আমাদের শরীরে মজুত ফ্যাট বা চর্বির জন্য এই ধমনী খাবার পরিবহনে কোনও সমস্যা তৈরি করতে পারে না। কিন্তু ডায়েটিংয়ের জন্য রাখির শরীরে চর্বি কার্যত উধাও হয়ে গিয়েছিল। তাতেই এই ধমনী দেওয়াল তুলেছিল পাকস্থলি ও ক্ষুদ্রান্ত্রের মাঝে। ফলে, পাকস্থলি যাওয়া খাবার পাকস্থলিতেই রয়ে যাচ্ছিল। চিকিৎসকদের দাবি, স্বাভাবিক অবস্থায় একজন পূর্ণ বয়স্ক মানুষের পাকস্থলিতে এক লিটার পর্যন্ত খাবার থাকতে পারে।

[আরও পড়ুন: ফুসফুস ক‌্যানসারের চিকিৎসায় বিপ্লব আনছেন বাঙালি কন্যা! মৃত্যুহার কমাবে তাঁর গবেষণা]

আর রাখির পাকস্থলি থেকে বেরিয়েছে প্রায় ১৩ লিটার খাবার। উদরের প্রায় সিংহভাগটাই দখল নিয়েছিল পাকযন্ত্রটি। কোনঠাসা হয়ে পড়েছিল বাকি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ। সময়মতো অস্ত্রোপচার না হলে পাকস্থলি ফেটে প্রাণসংশয় হত রোগীর। সঞ্জয়বাবু জানান, ইউএসজি করেই সমস্যাটা বোঝা গিয়েছিল। রাখির পাকস্থলি থেকে ক্ষুদ্রান্ত্রে খাবার যাওয়ার জন্য ‘বাইপাস’ সার্জারি হয়েছে। তবে স্বাভাবিক পথটি বন্ধ করা হয়নি। শরীরে ফ্যাটের পরিমাণ বাড়লে স্বাভাবিক পথেও খাবার যাবে ক্ষুদ্রান্ত্রে। সঞ্জয়বাবুর দাবি, তাঁর ২২ বছরের ডাক্তারি জীবনে এমন কেস তিনি এই প্রথম পেলেন। তাঁর পর্যবেক্ষণ, ইন্টারনেট ঘেঁটে অনেকেই আজকাল রাখির মতো ডায়েটিং করেন। এঁদের প্রত্যেকেই কিন্তু এসএমএ সিনড্রোমে আক্রান্ত হতে পারেন।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement