অভিষেক চৌধুরী, কালনা: অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার কোনও উপসর্গই ছিল না শরীরে। বন্ধ হয়নি মাসিক ঋতুচক্রও। অথচ হাসপাতালে ভর্তি হয়ে পুত্রসন্তানের জন্ম দিলেন বছর কুড়ির যুবতী। শুক্রবার জ্বর ও তলপেটে ব্যথা নিয়ে কালনা হাসপাতালে ভর্তি হয়ে ছিলেন তিনি। পূর্ব বর্ধমানের কালনার দত্ত দ্বারিয়াটনের বাসিন্দার সন্তান প্রসবের এই ‘গল্পে’ কপালে চোখ তুলেছেন অনেকেই। শুধু তাই নয়, কালনা মহকুমা হাসপাতালে এই ঘটনাকে বিরলও বলছেন চিকিৎসক মহল।
কালনার দত্ত দ্বারিয়াটন গ্রামের বাসিন্দা প্রিয়া ক্ষেত্রপাল। তাঁর দেড় বছরের একটি সন্তান রয়েছে। ওই বধূর নতুন করে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ার কোনও লক্ষ্মণ চোখে পড়েনি বলে জানান তাঁর পরিবারের সদস্যরা। গর্ভধারণের পর যে শারীরিক পরিবর্তন হয় তাও দেখা যায়নি ওই বধূর মধ্যে। তাই তিনি যেমন কোনও ওষুধও খাননি, চিকিৎসাও করাননি।
[আরও পড়ুন: রাস্তা মেরামতির কাজ হবে ৩ মাসেই, রোগীমৃত্যুর পর মুচলেকা দিয়ে আশ্বাস প্রশাসনের]
শুক্রবার রাতে প্রিয়ার পেটে অসহ্য যন্ত্রণা হলে তাঁর পরিবারের সদস্যরা প্রথমে স্থানীয় চিকিৎসককে দেখান। এর পরেই তাঁকে কালনা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তিনি গর্ভবতী কি না তা জানতে চিকিৎসকরা পরীক্ষা করে দেখেন। সেই রিপোর্টও নেগেটিভ আসে। কিন্তু প্রিয়া যে অন্তঃসত্ত্বা তা চিকিৎসকের চোখ এড়ায়নি।
কালনা হাসপাতালের স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ পীযূষকান্তি দাস ও অভয়চাঁদ নাগ বুঝতে পারেন, প্রিয়া অন্তঃসত্ত্বা হয়েছেন। তাই সময় নষ্ট না করেই নয় মাসের ওই অন্তঃসত্ত্বার প্রসব করানোর সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা। এর পরেই তাঁর সিজার করা হয়। প্রিয়া একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দেন। কালনা হাসপাতালের স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞরা উপসর্গহীন এই অন্তঃসত্ত্বার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে জানান, “এটাকে ‘ক্রিপ্টো প্রেগন্যান্সি’ বলা হয়। এক্ষেত্রে প্রেগন্যান্সির কোনওরকম লক্ষণ থাকে না। এক্ষেত্রে অবশ্য বিষয়টি খুবই বিরল।” মা ও নবজাতক দুজনেই সুস্থ রয়েছেন বলে চিকিৎসক জানিয়েছেন।