অভিষেক চৌধুরী, কালনা: ‘এক ফুল, দো মালি’ নয়। কালনায় এবার উলটপুরাণ। এক স্বামীকে নিয়ে দুই ‘বউ’য়ের টানাটানি। তবে প্রতিযোগিতা নয়, বরং স্বামীকে শায়েস্তা করতে হাজির দুই মহিলা। একেকজনের অভিযোগ একেকরকম। দিনভর এনিয়ে শোরগোল কালনার (Kalna) ধর্মডাঙায়। নিজেদের অধিকার আদায়ে সেখানকার বাসিন্দা শুভঙ্কর হালদারের বাড়িতে স্ত্রীর দাবি নিয়ে হাজির হন দুই মহিলা। শুভঙ্করের পালটা দাবি, তাঁর স্ত্রী ছেড়ে চলে গিয়েছেন। আর আরেক মহিলা তাঁকে ফাঁসিয়েছেন। কিন্তু তাতে চিঁড়ে ভেজেনি একটুও।
চামেলি হাওলাদার নামে এক মহিলা নিজেকে শুভঙ্করের স্ত্রী বলে পরিচয় দিয়ে জানান, তাঁর ৯ বছরের এক ছেলে, ১৬ বছরের এক মেয়ে রয়েছে। কিন্তু স্বামী তাঁকে দেখভাল করতেন না। বেশিরভাগ সময় কাজের নাম করে বাইরে থাকতেন। চামেলির দাবি, “আমার স্বামীর তিনটি বিয়ে। এখানে ওখানে বিয়ে করে সংসার পাতিয়ে থাকে। আজ সেই প্রমাণ হাতে নিয়েই এসেছি। এই মহিলাকেও বিয়ে করে রেখেছে। আমার আগেও একজনকে বিয়ে করেছে। শ্বশুরবাড়ির লোকজন জানায়নি। আমার সন্তানদের ভবিষ্যৎ গড়ে দেওয়ার দাবি জানাতে ডিভোর্স চাইতেই এখানে এসেছি।” তিনি এখন বাপের বাড়িতে থাকেন।
[আরও পডুন: Mahua Moitra: প্রয়াত সোমনাথবাবুর সিদ্ধান্তকে ঢাল করেই সংসদে বলতে দেওয়া হল না মহুয়াকে]
অন্যদিকে কাকলি নামের ওই মহিলাও একটি নথি দেখিয়ে শুভঙ্করের সঙ্গে তাঁর রেজিস্ট্রি বিয়ে হয়েছে বলে দাবি করেন। স্ত্রীর পরিচয় দিয়ে তিনি জানান, তাঁর আগের পক্ষের দুটি মেয়ে রয়েছে। কাকলি বলেন, “শুভঙ্কর আমাকে রেজিস্ট্রি করে বিয়ে করেছে। ওর বাবার হার্ট অ্যাটাক হয়েছে বলে আমার কাছ থেকে ৫ লক্ষ টাকা শুভঙ্কর নিয়েছে। বাড়ি বন্ধক রেখে টাকা দিয়েছি।” তিনি আরও জানান, “কালনায় আত্মীয় বাড়ি থেকেই ওর সঙ্গে আমার সম্পর্ক তৈরি হয়। শুভঙ্কর জানায়, ও স্ত্রীকে ডিভোর্স দিয়েছে। ৪ বছর আমার কাছে দিল্লিতে ছিল। খাওয়াপরা থেকে শুভঙ্করের যাবতীয় খরচ আমি বহন করেছি। দফায় দফায় আমার কাছ থেকে হাজার হাজার টাকা নিয়েছে। এখন আমার সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে চায় না। অন্য আর এক মহিলার প্রেমে পড়েছে। এখন ওকে দেওয়া পুরো টাকা আমায় ফেরত দিক। নাহলে আমাকে ঘরে তুলুক।”
[আরও পডুন: বিধানসভায় ইন্দ্রনীল-বাবুলের ‘শান্তি’ বৈঠক, ‘রেফারি’ অরূপ বিশ্বাস]
যদিও শুভঙ্করের দাবি, “একজন আমার বিবাহিত স্ত্রী। তার সঙ্গে ৪ বছর সংসার করেছি। আমি বাড়িতে ছিলাম না। সেসময় পরিবারের সকলের নামে মামলা করে। আর একজন যে মহিলা এসেছেন, তিনি কালনার কদমতলায় থাকেন। আমার মতো বেশ কয়েকজনকে উনি ফাঁসিয়েছেন। অনেকে আত্মহত্যাও করে মারা গিয়েছে।”কাকলির সঙ্গে রেজিস্ট্রি পেপার থাকার কথা স্বীকার করে শুভঙ্কর জানায়,“আমাকে খাইয়ে ওখানে নিয়ে গেছে। আমার কাছে ২৫ হাজার টাকা নিয়েছে। আমার গাড়ি ছিল।সেটাও বিক্রি করে দিয়েছে। আমাকে ফাঁসিয়েছে।” ঘটনাস্থলে এসে পঞ্চায়েত সদস্য প্রদীপ মণ্ডল জানান, “দেখানো কাগজপত্র দেখে কিছু বোঝা যাচ্ছে না। তাই ওঁদের কিছু করার হলে আইনের আশ্রয় নেওয়ার বিষয়ে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।”
দেখুন ভিডিও: