সুলয়া সিংহ: 'পৃথিবীর গভীর গভীরতর অসুখ এখন'। জলবায়ু সংকট শুধু দরজায় কড়া নাড়ছে না। বলা যায় ঘরের মধ্যে ঢুকেই পড়েছে। নাসার সাম্প্রতিক সমীক্ষা বলছে গত আগস্ট ছিল ১৮৮০ সালের পর থেকে সবচেয়ে উষ্ণ মাস। লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে তাপমাত্রা। এই পরিস্থিতিতে শুক্রবার 'ফ্রাইডেজ ফর ফিউচার'-এর আহ্বানে সাড়া দিয়ে বিশ্ব জলবায়ু ধর্মঘট পালন করল পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চ। যেখানে দাবি উঠল, 'জাস্টিস ফর ক্লাইমেট'। আর জি করের জন্য জাস্টিস চাইবার পর ফের শহরের বহু মানুষ যোগ দিল যে আন্দোলনে।
আজ টিফিনের সময় স্কুল-কলেজ-অফিস-ক্লাব ও সামাজিক সংগঠন সর্বোপরি সাধারণ মানুষের অভিনব যোগদানে এই কর্মসূচি পালিত হল। মানব বন্ধন, শপথ পাঠ, আলোচনা সভা, পরিবেশ পদযাত্রা নানা অংশে বিভক্ত ছিল বিশ্ব জলবায়ু ধর্মঘট। যার মূল লক্ষ্য একটিই বার্তা ছড়িয়ে দেওয়া- 'পৃথিবী জীবাশ্ম জ্বালানিমুক্ত হোক।' শিল্পক্ষেত্র-সহ সবক্ষেত্রেই জীবাশ্ম জ্বালানির পরিবর্তে পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তির ব্যবহার সুনিশ্চিত করতে ও রাষ্ট্রের নীতি নির্ধারকদের ভূমিকা গ্রহণের দাবিই মানববন্ধনের দাবি।
আজকের এই আয়োজনের পুরোভাগে ছিলেন পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের রাজ্য সম্পাদক অধ্যাপক প্রদীপ মহাপাত্র, বিজ্ঞান কর্মী তপন সাহা, কলকাতা জেলা বিজ্ঞান মঞ্চের সম্পাদক শেখ সোলেমান। উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকারা।
এই আন্দোলনে যে কথাটি মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে তা হল আজ তিনটি সংকটের আবর্তে মানবসমাজ বিপন্ন। সেগুলি হল দূষণ, জলবায়ু পরিবর্তন এবং জীব বৈচিত্রের ধ্বংস। এমন চলতে থাকে এই নীল রঙের গ্রহ থেকের চিরকালের জন্য হারিয়ে যাবে মানুষ। বলছেন বিজ্ঞানীরা। কিন্তু রাষ্ট্রগুলি নানা অঙ্গীকারে আবদ্ধ হলেও বাস্তবে তার কোনও প্রতিফলন ঘটছে না বলেই দাবি। এহেন অবস্থায় কলকাতা সাক্ষী থাকল বিশ্ব জলবায়ু ধর্মঘটের। এ পৃথিবীকে 'বাসযোগ্য করে তোলা'র অঙ্গীকারই যে কর্মসূচির মূল সুর।