সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিদ্রোহে কাঁপছে পাকিস্তান! বালোচিস্তানের রাজধানী কোয়েটায় বিস্ফোরণে নিহত অন্তত ২৪। আহত বহু। জানা গিয়েছে, শনিবার একটি ভিড়ে ঠাসা রেলস্টেশনে আত্মঘাতী হামলা হয়। আহতদের অনেকেরই আঘাত গুরুতর হওয়ায় মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রশাসনের। এই হামলার দায় স্বীকার করেছে বালোচ লিবারেশন আর্মি (বিএলএ)।
রয়টার্স সূত্রে খবর, আজ কোয়েটার রেলস্টেশনে ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করেছিলেন শতাধিক মানুষ। পেশোয়ারে যাওয়ার জন্য ট্রেনে সওয়ারও হয়েছিলেন বহু মানুষ। কিন্তু ট্রেন ছাড়ার ঠিক আগের মুহূর্তেই বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে গোটা স্টেশন চত্বর। সঙ্গে সঙ্গে সেখানে পৌঁছয় পাক পুলিশ, নিরাপত্তাবাহিনী দমকল ও উদ্ধারকারী দল। কিন্তু ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান অনেকে। আহত প্রায় ৪০। তাঁদের দ্রুত স্থানীয় হাসপাতালে পাঠানো হয়। এই হামলা প্রসঙ্গে কোয়েটার সিনিয়র সুপারিনটেনডেন্ট অফ পুলিশ মহম্মদ বালোচ জানান, "ঘটনার সময় শতাধিক মানুষ উপস্থিত ছিলেন স্টেশনে। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, এটি একটি আত্মঘাতী বিস্ফোরণ। আমরা তদন্ত শুরু করেছি। বিস্ফোরণের ধরন যাচাই করছেন তদন্তকারীরা।" এ হামলার পরই হাসপাতালগুলোতে জরুরি অবস্থা জারি করে পাক সরকার। আহতদের দ্রুত সবরকম পরিষেবা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, পাকিস্তানি শাসনের শৃঙ্খল ভেঙে ফেলতে দীর্ঘদিন ধরে লড়াই চালাচ্ছে বালোচরা। পালটা গুমখুন, হত্যা ও ধর্ষণের মতো অমানুষিক অত্যাচার চালিয়ে বিদ্রোহের আগুন নেভানোর চেষ্টা করছে ইসলামাবাদ। বিশেষ করে চিন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডর তৈরি হওয়ার পর থেকেই আরও অশান্ত হয়ে উঠেছে বালোচিস্তান। অভিযোগ, খনিজ সমৃদ্ধ প্রদেশটিকে কার্যত লুট করছে পাক প্রশাসন। প্রতিদানে বালোচ জনতা পেয়েছে শুধু নির্যাতন ও দারিদ্র।
প্রসঙ্গত, ২০১৫-তে স্বাক্ষর হওয়া মউয়ের ভিত্তিতে চিন-পাকিস্তানের মধ্যে অর্থনৈতিক করিডর বা সিপিইসি নির্মাণকার্য শুরু হয়েছে৷ চিনের প্রস্তাবিত ‘ওয়ান বেল্ট, ওয়ান রোড’ নীতির উপর ভিত্তি করে, তাদের অর্থ সাহায্যেই এই করিডর তৈরি হচ্ছে৷ পাকিস্তানের গদর পোর্ট থেকে চিনের শিনজিং প্রদেশ পর্যন্ত মোট ২,০০০ কিলোমিটার দীর্ঘ এই পথটি তৈরি করা হয়েছে৷ এই করিডর নিয়ে প্রথম থেকেই বিক্ষোভ প্রদর্শন করে আসছেন বালোচিস্তান-সহ গিলগিট-বালতিস্তান ও পিওকে-র নাগরিকরা৷ অভিযোগ, পেশিশক্তির জোরে তাঁদের বাসভূমি কেড়ে নিয়ে এই করিডর তৈরি করেছে পাকিস্তান৷ যাতে পূর্ণ মদত দিয়েছে চিন৷ যে কারণে চলতি বছরেও একাধিকবার চিনা ইঞ্জিনিয়ারদের উপর জঙ্গি হামলা হয়েছে।