সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ডেমোক্র্যাট সমর্থকদের আশা জাগিয়ে প্রচারে নেমেছিলেন। তিনি কমলা হ্যারিস, আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে ইতিহাস তৈরি হত। প্রথম মহিলা প্রেসিডেন্ট পেত মার্কিন য়ুক্তরাষ্ট্র। প্রথম অ-শেতাঙ্গ রাষ্ট্রপ্রধান সাদা বাড়ির মালিক হতেন। যদিও ভারতীয়-আফ্রিকান বংশোদ্ভূত প্রথম প্রেসিডেন্ট হিসেবে ইতিহাস রচনা করা হল না তাঁর। রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ডোনাল্ডের ট্রাম্পের কাছে পরাজিত হয়েছেন তিনি। ম্যাজিক ফিগার ২৭০ টপকে ট্রাম্পের পক্ষে ভোট পড়েছে ২৯৫টি, সেখানে কমলাকে থামতে হয়েছে ২২৬-এ। প্রশ্ন হল, কেন আশা জাগিয়েও ভারতে শিকড় থাকা কমলাকে হারতে হল?
প্রাথমিকভাবে উঠে আসছে পাঁচটি কারণ।
১) ডেমোক্র্যাটদের দেরিতে প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী নির্বাচন
শুরুতে ৮২ বছরের জো বাইডেনকেই প্রার্থী হিসেব বেছে নেওয়া হয়েছিল। বার্ধক্যজনিত অসুস্থতা থাকলেও কিছুতেই প্রার্থীপদ ছাড়তে রাজি ছিলেন না প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। বাইডেন না কমলা দন্দ্বে ভুগে শেষ পর্যন্ত তিন মাস আগে প্রার্থী নিশ্চিত হয় ডেমোক্র্যাটদের। রিপাবলিকানদের এই সিদ্ধান্তহীনতা কমলার হারের অন্যতম কারণ বলে মনে করছে বিশ্লেষকরা।
২) অভিবাসী, অর্থনীতি এবং বিদেশনীতি, ট্রাম্পের তিন তাস
আমেরিকা আবার জগৎসভায় শ্রেষ্ঠ আসন লবে... ট্রাম্পের প্রচারে শুরু থেকেই ছিল এই বাণী। এর জন্য অভিবাসী বিরোধী কড়া আইন, মন্দায় ভোগা অর্থনীতিকে চাঙ্গা করা এবং চিনকে টক্কর দেওয়া সাহসী বিদেশনীতির কথা বলেন ট্রাম্প। কমলার কাছে এই তিন তাসের স্পষ্ট জবাব ছিল না।
৩) কমলার পরাজয়ের অন্যতম কারণ তাঁর পরিচয়
অভিবাসী পরিবারের সন্তান কমলা। যে অভিবাসীদের বিরুদ্ধে কড়া হবে আমেরিকান আইন আনা হবে, প্রচারে মার্কিন নাগরিকদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ট্রাম্প। বিশ্লেষকদের বক্তব্য, শ্বেতাঙ্গ আধিপত্য, অভিবাসী বিদ্বেষ, তীব্র জাতীয়তাবাদকে ট্রাম্প তুরুপে তাস বানিয়েছেন। অপরপক্ষে কমলার সাবধানী অবস্থানকে ভালো ভাবে নেয়নি মার্কিন নাগরিকরা।
৪) পশ্চিম এশিয়া নিয়ে বাইডেন-কমলার অবস্থান
ইজরায়েল বনাম হামাসের যুদ্ধে জো বাইডেন সরকারের অবস্থান নিয়ে গোড়া থেকেই প্রশ্ন তুলছেন অভিবাসী মার্কিন নাগরিকরা। লেবাননে হামলা চালানোর পরও বাইডেন এবং কমলা ইজরায়েলের পাশে ছিলেন। বিশ্লেষকদের বক্তব্য, এর ফলে আরব-আমেরিকান, মুসলিম ভোটাররাও কমলাকে ভোট দেননি।
৫) বাইডেনের বিকল্প হিসেবে নিজেকে তুলে ধরতে না পারা
প্রবীণ নেতা বাইডেনের প্রতি আনুগত্য কাজ করেছে? বিগত সরকারের অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং বিদেশনীতি থেকে সরে এসে, নতুন কিছু করে দেখানোর প্রতিশ্রুতি দিতে পারেননি কমলা। মুখে পরিবর্তনের কথা বললেও, তা ঠিক কী, বোঝাতে পারেননি ডেমোক্র্যাট প্রার্থী। ফলে তাঁর কোনও বিশ্বাসযোগ্যতা তৈরি হয়নি ভোটারদের কাছে। এমনকী ট্রাম্পকে হারিয়ে মসনদ দখলের লড়াইয়ে ট্রাম্পকেই বেশি গুরুত্ব দিয়ে ফেলেছেন, এমনটাও মনে করছেন অনেকে।