সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভারতে একাধিক জঙ্গি হামলার মূল চক্রী সন্ত্রাসবাদী মাসুদ আজহারের (Masood Azhar) বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে পাকিস্তান (Pakistan)। পাক আদালত নির্দেশ দিয়েছে, ১৮ জানুয়ারির মধ্যে গ্রেপ্তার করতে হবে রাষ্ট্রসংঘে ‘আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী’ তকমা পাওয়া ওই জঙ্গি নেতাকে। এই সিদ্ধান্তের পর FATF (ফিনান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্স)-এর ধূসর তালিকা থেকে যে করে হোক বেরতে ইসলামাবাদের মরিয়া মনোভাবই প্রকাশ পাচ্ছে। মত ওয়াকিবহাল মহলের।
শনিবার গুজরানওয়ালার সন্ত্রাসবিরোধী আদালতের এক সূত্র জানাচ্ছে, বিচারক নাতাশা নসিম সুপ্রা নির্দেশ দিয়েছেন ১৮ জানুয়ারির মধ্যে সন্ত্রাসে আর্থিক মদতে অভিযুক্ত আজহারকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পেশ করতে হবে। অন্যথায় আদালত তাকে ‘ঘোষিত অপরাধী’ হিসেবে গণ্য করার আইনি প্রক্রিয়া শুরু করে দিতে পারে।
[আরও পড়ুন: বালাকোট হামলায় নিকেশ হয় ৩০০ জঙ্গি, স্বীকারোক্তি প্রাক্তন পাক কুটনীতিবিদের ]
দীর্ঘদিন আজহারের উপস্থিতির কথা অস্বীকার করে এসেছে পাকিস্তান। চাপ ক্রমশ বাড়তে থাকায় পরে তারা মানতে বাধ্য হয় জৈশ-ই-মহম্মদের প্রধান তাদের দেশেই রয়েছে। যদিও ঠিক কোথায় ঘাপটি মেরে আছে আজহার, তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। গত মাসে ‘সানডে গার্ডিয়ান’ পত্রিকার দেওয়া খবর অনুযায়ী, পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশে আইএসআই-এর আশ্রয়েই রয়েছে সে। প্রসঙ্গত, ২০০১ সালে সংসদে হামলা, ২০০৮ সালে মুম্বই হামলার মতো দেশের বহু জঙ্গি হামলার সঙ্গে জড়িত ছিল আজহার।
২০১৯ সালের পুলওয়ামায় জঙ্গি হামলার পরে আন্তর্জাতিক চাপের মুখে কোণঠাসা হয়ে যায় পাকিস্তান। হামলার দায় স্বীকার করা নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জৈশ-ই-মহম্মদের শতাধিক জঙ্গিকে বাধ্যত গ্রেপ্তার করে তারা। গ্রেপ্তার করা হয় আজহারের ছেলে ও ভাইকেও। কিন্তু আজহার ছিল অধরাই। পরে সেবছরের মে মাসেই রাষ্ট্রসংঘ ‘আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী’ হিসেবে ঘোষণা করে আজহারকে। চাপ আরও বাড়ে পাকিস্তানের উপরে।
[আরও পড়ুন: ওড়ার কিছুক্ষণ পরই ৫৯ জন যাত্রী নিয়ে নিঁখোজ ইন্দোনেশিয়ার বিমান, ছড়াল চাঞ্চল্য]
তবে তার আগে থেকেই FATF-এর ধূসর তালিকার ছায়ায় ঢুকে পড়তে হয়েছে তাদের। ২০১৮ সালের জুন মাসে ওই তালিকায় ঢোকার পর থেকেই অনেক চেষ্টার পরেও মুক্তি মেলেনি। ফলে অস্বস্তি ক্রমশই বেড়েছে ইমরান সরকারের। এই পরিস্থিতিতে আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে FATF-এর বৈঠকের আগে ভাবমূর্তি শুধরে নিতে মরিয়া ইসলামাবাদ। কেবল আজহারের গ্রেপ্তারি পরোয়ানাই নয়, গ্রেপ্তার করে সাজা শোনানো হয়েছে ২৬/১১ মুম্বই হামলার মূলচক্রী লস্কর-ই-তইবার শীর্ষ কমান্ডার জাকিউর রহমান লাকভিকে (Zakiur Rehman Lakhvi)। ভারতের বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র অনুরাগ শ্রীবাস্তবও ইসলামাবাদকে খোঁচা মেরে জানিয়েছেন, এসবই ধূসর তালিকা থেকে বেরনোর চেষ্টা। আজহারকে রাতারাতি দ্রুত গ্রেপ্তার করার নির্দেশও সেই মরিয়া মনোভাবেরই পরিচয় দিচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে।