সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অবশেষে ‘শাপমুক্তি’ হতে চলেছে সুয়েজ খালের (Suez Canal)। অনেক কসরতের পর প্রায় একসপ্তাহ পর সোমবার সকালে ভাসল খালটিতে আটকে থাকা দৈত্যাকৃতি পণ্যবাহী জাহাজ ‘এমভি এভার গিভেন’।
[আরও পড়ুন: সীমান্তে শান্তি ফেরাতে ব্রিগেড কমান্ডার স্তরের বৈঠক ভারত-পাকিস্তানের]
সামুদ্রিক পরিষেবা সংক্রান্ত বিশেষজ্ঞ সংস্থা ‘Inchcape’ জানিয়েছে, এদিন সকালে টাগবোট ও এক্সকাভেটর বাহিনীর চেষ্টায় ফের পাড় থেকে মুক্ত হয়ে ভেসে উঠেছে পণ্যবাহী বিশাল জাহাজটি। এখন ১ হাজার ৩০০ ফুট লম্বা ‘এমভি এভার গিভেন’কে পরিকল্পনামাফিক নির্দিষ্ট অবস্থানে এনে সুয়েজের পথটিকে মুক্ত করার চেষ্টা চলছে। তবে বিশ্বের অন্যতম ব্যস্ত জলপথটিতে ফের সুষ্ঠুভাবে জাহাজ চলাচল শুরু হতে সময় লাগবে। উল্লেখ্য, একাধিক উপগ্রহ চিত্রে ধরা পড়েছে এখনও পর্যন্ত প্রায় ১২০টি পণ্যবাহী জাহাজ আটকে রয়েছে সুয়েজ খালে। দক্ষিণাংশে প্রবেশের মুখে জাহাজগুলি নোঙর করে রয়েছে। প্রায় ২৫০০ বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে জাহাজগুলি। এর ফলে প্রতিদিন ১৪ মিলিয়ন ডলার ক্ষতি হচ্ছে মিশর প্রশাসনের। আটকে ৯.৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য। তবে উদ্ধারকার্য শুরু হয়েছে। এই প্রসঙ্গে সুয়েজ ক্যানাল অথরিটির চেয়ারম্যান ওসামা রাবি জানিয়েছেন, আপাতত কিছুটা সরানো হলেও, রাস্তা এখনও বন্ধ।
উল্লেখ্য, কৌশলগত দিক থেকেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সুয়েজ খাল লোহিত সাগর ও ভূমধ্যসাগরকে সংযুক্ত করে। এটি এশিয়া ও ইউরোপের মধ্যে সংক্ষিপ্ততম জলপথ। ফলে সুয়েজ খাল যথেষ্ট ব্যস্ত পথ। এই পরিস্থিতি নিয়ে গত শুক্রবার কেন্দ্র সরকারের বাণিজ্য দপ্তর একটি বৈঠক ডাকে। সেখানে পণ্যবাহী জাহাজগুলির জন্য বিকল্প পথ, ভাড়া, বন্দরগুলিকে সতর্কীকরণের বিষয় ও অত্যাবশ্যক সামগ্রী নিয়ে যাওয়া জাহাজগুলিকে অগ্রাধিকার দেওয়া নিয়ে একটি পরিকল্পনা তৈরি করা হয়। ওই বৈঠকে স্থির করা হয় যে ভারতমুখী বেশকিছু পণ্যবাহী জাহাজকে আফ্রিকার উত্তমাশা অন্তরীপ দিয়ে ঘুরিয়ে আসার নির্দেশ দেওয়া হবে। এদিন এক বিবৃতি জারি করে বাণিজ্যমন্ত্রক জানিয়েছে, সুয়েজ খাল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় প্রবল ধাক্কা খেয়েছে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য। এই পথেই ইউরোপ ও আমেরিকা মহাদেশ থেকে প্রায় ২০০ বিলিয়ন ডলার মূল্যের পণ্য আমদানি-রপ্তানি করে ভারত। এরমধ্যে রয়েছে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল, লোহা, স্টিল, যন্ত্রাংশ, গাড়ি ও বস্ত্র-সহ বেশ কিছু পণ্য।